কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ফেসবুকে ‘হা হা রিঅ্যাক্ট’ দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১০টি দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৫ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার (১ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টায় ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কে শহরের কমলপুর লোকাল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে
খবর পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বলে নিশ্চিত করেন ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে লোকাল বাসস্ট্যান্ড এলাকার দুপক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এ ঘটনায় থানা পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে ২ জনকে আটক করেছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত। অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে লোকাল বাসস্ট্যান্ড ভৈরব র্যাব ক্যাম্পের বিপরীত পাশে মানিক মিয়ার হার্ডওয়্যার দোকানের কর্মচারী কমলপুর মধ্যপাড়া এলাকার আলাল মিয়ার ছেলে আজিবর ও মধ্যপাড়ার রউফ মিয়ার ছেলে ওমর মিয়ার ফেসবুকে হা হা রিঅ্যাক্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় দুজনকে মিলিয়ে দেন দোকান মালিক মানিক মিয়া। ঘটনার আধাঘণ্টা পর দুইপক্ষ দা, বল্লম, লাঠিসোটা, ইট পাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে কমলপুর মধ্যপাড়ার সংঘর্ষকারীরা পূর্বপাড়ার ১০ দোকান এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় তাদের বাধা দিতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা উজ্জল মিয়াসহ ৫ জন আহত হয়েছেন।
কমলপুর মধ্যপাড়ার আইনুল মিয়া জানান, ফেসবুকে হা হা রিঅ্যাক্টের মতো তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কিছু কিশোর পোলাপান ঝগড়ায় মেতেছে। আমি তাদের ফিরিয়ে দিয়েছি। সংঘর্ষকারীরা অনেকগুলো দোকানের সাটার কুপিয়ে ভেঙে দিয়েছে।
পূর্বপাড়া এলাকার কাজী মামুন বলেন, আমি একটি চায়ের দোকানে বসেছিলাম। হঠাৎ দেখি দুই পক্ষের কিছু বখাটে যুবক দা, বল্লম, লাঠিসোটা নিয়ে ঝগড়া করছে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় মধ্য পাড়ার কিছু বখাটে যুবক দোকানপাট ভাঙচুর করছে। আমি চেষ্টা করেছি ফিরিয়ে দিতে, কিন্তু তারা আমার কোনো কথা শোনেনি। তারা সবকয়টা কম বয়সী কিশোর। এরা আমাদের এলাকার বেয়াদব ছেলেপেলে। দুই দিন যেতে না যেতেই তারা ঝগড়ায় লিপ্ত হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদার রিপন মিয়া ও বাচ্চু মিয়া বলেন, আমাদের কি অপরাধ? আমরা মসজিদে তারবি পড়তে গিয়েছিলাম দোকান বন্ধ করে। এসে দেখি দোকানের সাটারগুলো কুপিয়ে ভেঙে দিয়েছে। এরা সব কয়টা কিশোর গ্যাংয়ের পোলাপান। আমরা এদের বিচার চাই।
৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী সোহাগ জানান, তুচ্ছ একটি ঘটনায় দুই পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। ঝগড়া করেছে কিছু কিশোরগ্যাংয়ের পোলাপান। তারা অনেকগুলো দোকাপাট ভাঙচুর করেছে। বিষয়টি দুঃখজনক।
ভৈরব থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা সংবাদ শুনেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এ ঘটনায় থানার পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।
নয়াশতাব্দী/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ