ঢাকা, বুধবার, ৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

অজানা রোগে অর্ধশত গরুর মৃত্যু, সীমান্তে আতঙ্কে

প্রকাশনার সময়: ২৭ মার্চ ২০২৪, ১৫:৩০

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড় পলাশবাড়ী ইউনয়নের দুই গ্রামে অজ্ঞাতনামা রোগে প্রতিনিয়ত মারা যাচ্ছে গবাদিপশু। এমন ঘটনায় দুশ্চিন্তা ও আতঙ্কে দিন পার করছেন ওই দুই গ্রামের মানুষ।

অজ্ঞাতনামা রোগে সীমান্ত ঘেষা মশালডাঙ্গী গ্রাম ও পার্শ্ববর্তী ৪নং কলোনীতে গত দুই মাসে ২০ জন কৃষকের অর্ধশত গরুর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত এক সপ্তাহেই মারা গেছে ১৯টি।

বুধবার (২৭ মার্চ) দুই গ্রামের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন অজ্ঞাতনামা এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তাদের গরু। আক্রান্ত হওয়ার ৬-১০ ঘণ্টার মধ্যে মারা যাচ্ছে। রোগ নির্ণয় না করতে পারার কারণে কোনো ধরণের চিকিৎসাই কাজে আসছে না।

কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, অনেক কষ্ট করে গরু লালন-পালন করি। গরু বিক্রি করে মেয়ের বিয়ে দেবো ভেবেছিলাম। কিন্তু সব স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেল।

তিনি বলেন, অজ্ঞাতনামা এই রোগে প্রথমে গরুর শরীর গরম হয়ে যায়, এরপরে পেট ফুলে গিয়ে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেয়। এমন করে ৬-১০ ঘণ্টা পরই গরু মারা যায়। এক লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হয়ে গেল। আরও দুইটা গরু আছে, তাদের নিয়েও দুশ্চিন্তায় রাতে ঘুম হয় না।

আইয়ুব আলী নামে আরেক কৃষক বলেন, সীমান্ত ঘেষা এই দুটি গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ গরু পালন ও কৃষি কাজের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করে। গরু বিক্রি করে কৃষি কাজ, ছেলেমেয়ের পড়াশোনা, বিয়ে ইত্যাদি সকল খরচই এর মাধ্যমে বহন করে থাকে।

সীমান্তে চারণ ভূমি থাকায় গরু পালনে বেশ সুবিধা রয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, দুই গ্রামে অন্তত দেড় হাজার গরু পালছেন স্থানীয় কৃষকরা। তবে গত দুই মাসে অর্ধশত গরু মারা গেছে এই দুই গ্রামে। অনেকে নিঃস্ব হয়ে গেছেন।

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান, গ্রাম দুটোর একদম কাছাকাছি ভারতের সীমান্ত। সব পরিবার গরু লালন-পালন করে থাকে। কয়েকদিন থেকে ভাইরাসের প্রখরতা বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত কারো না কারো গরু মারা যাচ্ছে।

এই ভাইরাস ভারত থেকে এসেছে কি-না, তা শনাক্ত করা জরুরি। সেই সঙ্গে জীবিত গবাদি পশুগুলোর চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রাণীসম্পদকে আহ্বান জানান তিনি।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা নাসিরুল ইসলাম বলেন, আমরা সরজমিনে গ্রাম দুটিতে গিয়েছিলাম। গত এক সপ্তাহে বেশ কয়েকটি গরু মারা গেছে। প্রাথমিকভাবে আমাদের বাদলা ভাইরাস মনে হয়েছে। এছাড়াও সীমান্তে লালন-পালন হওয়ায় এটি ভারত থেকে আসা কোনো ভাইরাস হতে পারে। আমরা কিছু গরুকে বাদলা ভাইরাসের ভ্যাকসিন দিয়েছি। আর নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করে আমরা চিকিৎসা ও পরামর্শ দেবো।

নয়াশতাব্দী/এনএইচ/এনএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ