সপ্তাহের ব্যবধানে অস্থিরতা বেড়েছে ডিমের বাজারে। বিগত মাসে সহনীয় পর্যায়ে থাকার পর ফের বাড়তে শুরু করলো নিত্যপণ্যটির দাম; ডজনপ্রতি ডিমের দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়াও বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে চড়া সবজির বাজার। একইভাবে ঊর্ধ্বমুখী পেঁয়াজের দাম। ভোটের সময় চালের দাম যে হারে বেড়েছিল, এখনো তা সহনীয় পর্যায়ে আসেনি।
শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়, পাইকারি বাজারে প্রতি ডজন বাদামি রঙের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪৫ টাকায়। সাদা রঙের ডিমের দাম ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা ডজন। গত সপ্তাহের তুলনায় বাদামি ডিমের দাম ডজনে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। সাদা রঙের ডিমের দাম বেড়েছে ডজনে ৫ টাকা।
এদিকে পাড়া-মহল্লার খুচরা দোকানে এখন প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা দরে। একটি ডিম ১৩ টাকা দরেও বিক্রি হচ্ছে কিছু জায়গায়। সে হিসাবে ডজন পড়ছে ১৫৬ টাকা। তবে বড় বাজারে ডিমের ডজন ১৪০-১৪৫ টাকায় মিলছে।
চাহিদার তুলনায় বাজারে ডিম কম আসছে, ফলে ডিমের দাম বেড়েছে বলে জানান পাইকারি ডিম বিক্রেতারা।
তারা বলছেন, মুরগির খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় ডিম উৎপাদনের খরচ বেড়েছে। এছাড়াও শীতকালীন সামাজিক অনুষ্ঠান বেড়ে যাওয়ায় ডিমের চাহিদা দিন দিন বেড়েছে। ফলে ডিমের দাম বাড়ছে।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে শীতকালীন সবজির বাজারে অস্থিরতা দেখা গেছে। প্রতিটি মৌসুমী সবজি কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা।
বাজারগুলোতে প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, শিম ৭০ থেকে ৯০ টাকা, ফুলকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বাঁধা কপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৫০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ টাকা এবং গাজর ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়, বরবটি ১২০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, লেবুর হালি ২০ থেকে ৪০ টাকা, ধনে পাতা কেজি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, পেঁয়াজের ফুলকলি ৬০ টাকা ও কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। এছাড়াও পালং শাক ১৫ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
তবে এ বছর শীতের সবজি দরদাম করে কিনতে হচ্ছে বলে জানান ক্রেতারা।
এদিকে মাসের শেষে নতুন করে বাজারে পেঁয়াজের দামে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। ফলে চলতি সপ্তাহে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে পেঁয়াজের দর। খুচরা বাজারে বেশিরভাগ দোকানেই নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজিতে। পুরোনোর কেজি ৯০ টাকা। তবে বড় বাজারে ৮০ টাকায়ও পাওয়া যাচ্ছে।
পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বলেন, মুড়িকাটা শেষ, নতুন হালি পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়তে কিছুদিন সময় লাগবে।
এদিকে ভোটের সময় সারাদেশে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছিল চালের দাম। সে সময় প্রতি কেজি চালের দাম ৬ টাকা পর্যন্ত বাড়ে। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আগেই উচ্চমূল্যে থাকা চালের দাম কমেছে সামান্যই। বাজারে মিনিকেট চাল কেজিতে সাড়ে ৬ টাকা বাড়লেও অভিযানের পর কমেছে ২ টাকা।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৮-৭০ টাকায়, এক সপ্তাহ আগেও যা ছিল সাড়ে ৭১-৭২ টাকা। তবে ভোটের আগে এ মিনিকেট বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৬৫-৬৬ টাকায়। হিসাব অনুযায়ী মিনিকেট চালের বাজার বেড়েছিল ৬ টাকা। অভিযানের পর সেই চালের দাম কমেছে মাত্র ২ টাকা।
এভাবে ব্রি-২৮ জাতের চালের কেজি আগে ৫৫ থেকে বেড়ে ৬০ টাকা হলেও সর্বশেষ এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকায়, স্বর্ণা ৫০ থেকে বেড়ে ৫৫ টাকা হলেও এখন ৫৩-৫৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, চালের দাম বাড়া শুরু করেছে নির্বাচনের পর থেকেই; যা বেড়েছিল তার থেকে অর্ধেক এখনো কমেনি।
নয়াশতাব্দী/ডিএ/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ