ঢাকা, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১ জিলকদ ১৪৪৫

আল-আজহারে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ইফতার যেন মিলনমেলা

প্রকাশনার সময়: ১৫ মার্চ ২০২৪, ১৫:৩১

মিশরে রমজান মানেই আনন্দ আর উৎসব। বছরের অন্যান্য মাসের মধ্যে দেশটিতে সবচেয়ে বেশি আনন্দমুখর হয় ‘পবিত্র রামজান’ মাসে। এই মাসকে কেন্দ্র করে গোটা মিশর সাজে ব্যতিক্রমী এক সুন্দর-রূপে।

পবিত্র রমজানে বিশ্ব বিখ্যাত আল-আজহার মসজিদের ইফতার নিয়ে আরও জানাচ্ছেন মিশরে নয়া শতাব্দীর প্রতিনিধি আফছার হোসাইন।

মিশরের বিশ্ববিখ্যাত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৩৫ হাজারের ও অধিক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করেন। তার মধ্যে আবাসিক ও অনাবাসিক মিলে রয়েছে ১২শ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী।

বিখ্যাত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে প্রতিদিন পাঁচ হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থীর জন্য ইফতার পরিবেশন করা হয় এই মসজিদে।

আসরের আজানের সময় হলেই ইফতারের জন্য দলে দলে ছুটে আসেন আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা।

নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ মোবাইলের অ্যাপসের মাধ্যমে পূর্ব পাশের গেট দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করেন। সুউচ্চ মিনারের প্রাচীন মসজিদটির ভেতরের চারপাশে কাঠের দেয়াল। যার মধ্যে নারী শিক্ষার্থীরা ইফতার করেন ও নামাজ আদায় করেন। মাঝখানে খোলা ময়দান, যেখানে রয়েছে সাদা টাইলসের উঠান। নামাজ আদায় করে মসজিদের বারান্দায় বসে কেউ কেউ কুরআন পড়ছেন, কেউ তাসবিহ পাঠ করছেন; এ যেন জান্নাতি এক পরিবেশ।

এরইমধ্যে আল-আজহারের আন্ডার সেক্রেটারি ডক্টর মুহাম্মাদ আল-দুওয়াইনির তত্ত্বাবধানে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শুরু করেন ইফতারের প্রস্তুতি।‌ যেখানে সবাই সুন্দরভাবে ইফতারের সামগ্রীগুলো সাজিয়ে গুছিয়ে রেখে দিচ্ছেন। কারও সঙ্গে কারও কথা নেই। যে যার মতো কাজ করছেন। কেউ কেউ দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন।

মাগরিবের আজানের ৩০ মিনিট আগে সবাইকে ডাকা হয় ইফতার সামনে নিয়ে বসার জন্য। আজানের ১৫ মিনিট আগে একজন ক্বারী সুমিষ্ট সুরে কুরআন তিলাওয়াত করতে থাকেন। আজান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খেজুর এবং পানি খেয়েই সবাই নামাজে দাঁড়িয়ে যায়। নামাজ শেষ করে সবাই বাকি খাবার শেষ করেন।

এখানকার ইফতারে থাকে মিশরের ঐতিহ্যবাহী খাবার- খেজুর, জুস, পানি, ভাত, এইশ বেলাদি (রুটি), ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চিকেন ফ্রাই, কোপ্তা, সব্জিসহ মিশরীয় মিষ্টি।

আল-আজহারের বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ময়মনসিংহের আজিজুল ইসলাম বলেন, নিজ মাতৃভূমি, পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, প্রিয়জনদের ছেড়ে জ্ঞান অর্জনের শর্তে এই প্রথম বিদেশের মাটিতে পবিত্র মাহে রমজান মাস অতিবাহিত করছি। সেহরির এবং ইফতারে সময় পরিবারের সকলকে বিশেষ করে প্রিয় মা-বাবা, ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধবদের খুব মিস করি, সেই সঙ্গে দেশিয় ইফতার আইটেমগুলোকেও। কিন্তু যখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৫ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী ভাইদের সঙ্গে একত্রে ইফতার করি, তখন অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে। এখানে এসে কিছু সহপাঠি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশিয় বড় ভাইদের সঙ্গেও দেখা হয়।

এমন মহতী উদ্যোগের জন্য আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে মোবারক বাদ জানান বাংলাদেশি এই শিক্ষার্থী।

নয়াশতাব্দী/এনএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ