ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

প্রার্থীর ফলাফল পাল্টে দেয়ার অভিযোগে সহিংসতা, পুলিশসহ আহত ১৭

প্রকাশনার সময়: ০৯ মে ২০২৪, ২০:৩৭

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বেসরকারিভাবে রাজীব আহমেদ তালুকদারকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটারিং কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম। দেড় ঘণ্টা পর ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর ফলাফল ঘোষণা করতেই বাধে বিপত্তি।

নির্বাচনের ফলাফলকে কেন্দ্র করে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ৭ পুলিশ সদস্য ও প্রার্থীর সমর্থক নারী-পুরুষসহ ১০ জন আহত হয়েছেন।

বুধবার (৮ মে) উপজেলা পরিষদ হলরুমে সন্ধ্যার পরে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা শুরু হলে সেখানে প্রার্থী ও তার সমর্থকরা জড়ো হয়।

ফলাফল প্রকাশের শেষ দিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলামের তালা মার্কা ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও হঠাৎ করে সার্ভার সমস্যা দেখায় উপজেলা প্রশাসন। এ সময় শতভাগ বিজয় নিশ্চিত হয়ে তালা মার্কার সমর্থকরা বিজয় মিছিল দিতে থাকে। তখন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম সার্ভার সমস্যার কথা বলে ফলাফল প্রকাশ বন্ধ রাখেন। তখন হলরুম ছেড়ে উপজেলার কর্মকর্তারা তাদের অফিসে গিয়ে দুই ঘণ্টা পর রাত ১টায় হল রুমে ফিরে এসে সাইফুল ডাকুয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বর্তমান এমপি আব্দুল হাফিজ মল্লিকের আপন ছোট ভাই উড়োজাহাজ মার্কার সালাম মল্লিকের হাতে বিজয়ী ফলাফল তুলে দেয়।

এ সময় সাইফুল ডাকুয়ার সমর্থকরা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার রফিকুলের উপর ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে ক্ষিপ্ত হয় এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এতে ১০ জন সমর্থক আহত হন।

উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ডাকুয়া অভিযোগ করে বলেন, আমি ১১৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ৮৯টি কেন্দ্রে ১৩ হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়েছিলাম বাকি কেন্দ্রগুলোতেও আমি এগিয়েছিলাম, ফেসবুকের টাইমলাইনে উপজেলা জুড়ে ছিল বিজয়ের অভিনন্দন বার্তা, হঠাৎ গভীর রাত্রে সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা ফলাফল পাল্টে দিয়ে এমপির ভাই আব্দুল সালাম মল্লিককে বিজয়ী ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফজাল হোসেন বলেন, ‘পুলিশ সদস্য ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত সাত জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এএসআই আরিফুর রহমান, এসআই নাসির উদ্দিনসহ পাঁচ কনস্টেবল আহত হয়েছে। তারা এখন চিকিৎসাধীন রয়েছে। এই ঘটনায় বাকেরগঞ্জ থানায় দুটি লিখিত অভিযোগ হয়েছে। রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের আউলিয়াপুর থেকে বাদল খলিফা নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে তিনজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।’

উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ডাকুয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম ভোট কারচুপির মাধ্যমে স্থানীয় এমপির আপন ছোট ভাই সালাম মল্লিকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে। এ সময় আমার সমর্থকরা উত্তেজিত হলে পুলিশ নির্বিচারে রাতে আঁধারে নারী-পুরুষদের উপর লাঠিচার্জ চালায়। এ সময় পুলিশের ওপরও হামলার ঘটনা দেখিয়ে আমার একজন সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনে কোনো কারচুপি করা হয়নি। আমার উপর মিথ্যা অভিযোগ এনে হামলা করা হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনে কারচুপি কেউ করেনি। ফলাফল প্রকাশের সময় লাগতেই পারে যেহেতু সার্ভার সমস্যা এটা কারো হাতে না। কিন্তু সাইফুল ইসলাম ডাকুয়ার সামর্থকরা উপজেলা চত্বরে বসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন ,এ ঘটনায় আমরা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ