ঢাকা, শনিবার, ১ জুন ২০২৪, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৩ জিলকদ ১৪৪৫

শিশু ধর্ষককে ছদ্মবেশে লুঙি পড়ে আটক করলো পুলিশ

প্রকাশনার সময়: ০৯ মে ২০২৪, ২১:০৫

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় শিশু শ্রেণিতে পড়ুয়া এক কন্যা শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সেকান্দর প্রকাশ ছুট্টু (৬০) নামে এক বৃদ্ধকে আটক করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) নিজ বাড়িতে পুলিশ দেখে দৌড়ে পালাতে গিয়ে তাকে সীতাকুণ্ড থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাদিম মাহমুদের নেতৃত্বে তাকে আটক করা হয়।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) বিকালে সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন তার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওই শিশুর বাবা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।

গ্রেপ্তার সেকান্দর প্রকাশ ছুট্টু উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে। নিহত শিশু একই বাড়ির বাসিন্দা।

ওই শিশুর বাবা জানান, তার মেয়ে বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি হয়ে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।

ভিকটিমের দাদি গোলবাহার বলেন, গত রমজানের ৭-৮ দিন আগে আমার নাতিন জানায় সেকান্দর প্রকাশ ছুট্টু নামে বাড়িওয়ালা (জেঠা) তাকে ঢেকে নিয়ে বিভিন্ন সময় যৌন নির্যাতন করেছে। কিন্তু আমি তার কথা বিশ্বাস করিনি। পরে নাতিন একই বয়সী বাড়ির অন্য ছেলেমেয়েদের সব খুলে বলে। এরপর বাড়িতে বিষয়টি জানাজানি হলে অনেকেই আমাকে ঘটনাটি জানায়। সবার কথা শুনে হতবাক হয়ে গেলাম। এরই মধ্যে কয়েকদিন আগে আমি দুপুরে ঘুমাচ্ছিলাম এমন সময় হঠাৎ বাইরে থেকে নাতি এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে দাদু আমাকে ছুট্টু তার ঘরে ডাকছে। তখন নাতিন ভয়ে কাঁদছিল। তখন তাকে বলেছিলাম আমার পাশে শুয়ে থেকো। পরে বেশ কয়েকবার যৌন নির্যাতনের কথা পুরো পরিবারকে জানায়। এ ঘটনার পর জানাজানি হলে উল্টো গালিগালাজ করছে অভিযুক্ত ছুট্টুর স্ত্রী।

ভিকটিমের মা পান্না আক্তার বলেন, আমি গর্ভবতী ছিলাম সেজন্য কয়েকমাস ঘর থেকে বের হতে পারিনি। মেয়ে উঠানে খেলাধুলা করত। মাঝে মধ্যে চকলেট (চকোচকো) ও পিঠা খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে গোয়াল ঘর এবং তার নিজ ঘরে নিয়ে যেত। মেয়ে আমাকে বলে, আমাকে নিয়ে যেত সেকান্দর প্রকাশ ছুট্টু (জেঠা) উলঙ্গ হয়ে আমার সাথে খারাপ কাজ করত। আমার খুব কষ্ট হত। ছুট্টু এসব কাউকে না বলতে ভয় দেখাতো।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল আলিম জানান, বিষয়টি জানার পর সেকান্দার প্রকাশ ছুট্টুকে জানালে তিনি অস্বীকার করেন। যাইহোক, ব্যাপারটা খুবই দুঃখজনক। স্বীকার না করলেও অভিযুক্ত ব্যক্তি মীমাংসা করতে রাজি আছে। ঘটনাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় আমি আমাদের চেয়ারম্যানকে অবহিত করেছি।

ভিকটিমের বাবা মো. জামাল উদ্দিন বলেন, আমার ২৭ বছর পর দ্বিতীয় ঘরের সংসারে এই কন্যার জন্ম হয়। আমার ৬-৭ বছরের নাবালিকা মেয়েকে এভাবে যৌন নির্যাতন করা হবে তা কখনো কল্পনাও করিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করতে মেয়েকে নিয়ে বুধবার সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়েছি। হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে (মেয়েকে) ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসিতে) ভর্তি করানে হয়। বৃহস্পতিবার তার ডাক্তারি পরীক্ষার পর চিকিৎসকের রিপোর্টে যৌন নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া যায়। সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভিকটিম (শিশুর) বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক সত্যতা এক ঘণ্টার মধ্যে অভিযান চালিয়ে তাকে তার বাড়ি বাড়বকুণ্ড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার মামলা মোতাবেক তাকে আদালতে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ