ঢাকা, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ৬ জিলকদ ১৪৪৫

এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিলেন ৩ জনপ্রতিনিধি!

প্রকাশনার সময়: ০১ মার্চ ২০২৪, ১৫:০২
শিলা খাতুন, শাহানাজ বেগম ও মুর্শিদা বেগম (বাঁ থেকে ডানে)। ছবি- নয়া শতাব্দী

একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষিত হওয়াটা যেমন জরুরি, তেমনি জনগণের সার্বিক সেবা দেওয়ার জন্য বর্তমান ডিজিটাল বাংলাদেশের ডিজিটাল নাগরিক হওয়াটাও অত্যাবশক। আর যেহেতু শিক্ষার কোনো বয়স নেই- সেই বাস্তবতা মেনে নিয়েই পুনরায় লেখাপড়া শুরু করেন তারা তিনজন।

এমনকি চলতি ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায়ও অংশ নিচ্ছেন নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডের সাবেক-বর্তমান তিন ইউপি সদস্য।

তারা তিনজনই কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব সামসুন্নাহার।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে পরীক্ষা শেষে তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পরীক্ষায় অংশ নেওয়া মুর্শিদা বেগম বাগাতিপাড়া পৌরসভার ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর। শিলা খাতুন পাঁকা ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য এবং শাহানাজ বেগম একই ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য। তারা তিনজনই বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট থেকে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।

শিলা খাতুন জানান, ছোটবেলায় পরিবার থেকে তাকে বিয়ে দেওয়া হয়। এতে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হন তিনি। তাই পড়াশোনার আক্ষেপটা তার থেকেই যায়। শেষ পর্যন্ত স্বামীর অনুপ্রেরণায় তিনি আবার লেখাপড়া শুরু করেন।

সাবেক ইউপি সদস্য শাহানাজ বেগম জানান, দশম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তার বিয়ে হয়ে যায়। তারপর আর এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া হয়নি। লেখাপড়া জানা থাকলে, যেকোনো সময় কাজে আসেই। তাই তিনি সাংসারিক জীবনের পাশাপাশি লেখাপড়াটাও চালিয়ে যেতে চান।

পৌরসভার সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর মুর্শিদা বেগম বলেন, শিক্ষার কোনো বয়স নেই। তার ছেলে-মেয়েরা সবাই শিক্ষিত এবং তিনি একজন প্রতিনিধি হিসেবেও শিক্ষিত হওয়াটা জরুরি বলে মনে করেন। তাই পুনরায় লেখাপড়া শুরু করেছেন।

বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং ওই কেন্দ্রের সচিব সামসুন্নাহার বলেন, তাদের এই আগ্রহ দেখে অনেকে অনুপ্রাণিত হবেন।

তারা যে শেষ পর্যন্ত লেখাপড়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে পেরেছেন, সেজন্য তাদের সাধুবাদ জানান তিনি।

এ বিষয়ে বাগাতিপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, লেখাপড়ার জন্য আসলে কোনো বয়স নেই। আর তারা সাংসারের পাশাপাশি লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার যে উদ্যোগ নিয়েছেন, সেজন্য তিনি তাদের ধন্যবাদ জানান।

নয়াশতাব্দী/এনএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ