ঢাকা, শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

বিএনপির ভারতীয় পণ্য বর্জন নাটকের ইতিবৃত্ত ও নেপথ্য

প্রকাশনার সময়: ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৩৯

বাংলাদেশ, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে রক্তাক্ত ও বীরোচিত বিসর্জনের মধ্য দিয়ে জন্ম নেয়া বিশ্ব মানচিত্রে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। এটি তদানীন্তন ব্রিটিশ শাসকের ‘বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি’ এর আওতাভুক্ত একটি পূর্ববঙ্গীয় ভূখণ্ড। ব্রিটিশ তার ঔপনিবেশিক প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার সুবিধার্থে বর্তমান দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিস্তৃত অঞ্চল এই বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অধিভুক্ত করেছিল।

প্রেসিডেন্সির আওতাভুক্ত পূর্ববঙ্গ, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ওড়িশা, ত্রিপুরা, মেঘালয়ের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য এক হওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক বিবেচনায় (দ্বিজাতি তত্ত্ব) বিভাজিত হয়ে ‘পূর্ব বাংলা’ ১৯৪৭ সালে ‘পূর্ব পাকিস্তান’ নামে নিখিল পাকিস্তানের প্রাদেশিক অঞ্চল হয়ে ওঠে। উল্লেখ্য, ১৭৫৭ সালে গভীর ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে বাংলার স্বাধীনতা হরণ করার পর ধূর্ত ব্রিটিশ তার ঔপনিবেশিক ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী ও বাধামুক্ত করার কূটকৌশল আঁটতে থাকে। এই দুরভিসন্ধি চরিতার্থে ভবিষ্যতে গণমানুষের ঐক্যবদ্ধ শক্তি যাতে বাধা হয়ে না দাঁড়ায় সে লক্ষ্যে আবহমান বাংলার চির নান্দনিক অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনে ফাটল ধরানোর অপচেষ্টা চালায়।

সে লক্ষ্যে তারা প্রীতিবদ্ধ সংখ্যাধিক্য হিন্দু-মুসলিম গোষ্ঠীর মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার বিষাক্ত বীজ বপন করে থাকে। ধীরে ধীরে সেই বীজ অঙ্কুরোদগম হয়ে তা বিষাক্ত মহীরুহের আকার ধারণ করে এই শান্তিময়, অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক জনপদকে বিষময় করে তোলে। ১৮৮২, ১৯২১, ১৯২৭, ১৯৪৬-এ সংঘটিত যথাক্রমে তামিলনাড়ু, মাপ্পিতা, নাগপুর, কলকাতার দাঙ্গা সহ বহু দাঙ্গা তার ঘৃণ্য উদাহরণ। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, ১৯৪৬-এ কলকাতায় সংঘটিত হূদয় বিদারক হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা যাতে কয়েক হাজার প্রাণহানি ঘটেছিল এবং হাজার হাজার মানুষ ভিটেমাটি ছাড়া হয়েছিল।

২০০ বছরের দীর্ঘ শোষণে সৃষ্ট নেতিবাচক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় ব্রিটিশ টিকতে না পেরে অবশেষে ১৯৪৭-এ নিখিল ভারত পরিত্যাগে বাধ্য হয় ঠিকই কিন্তু সম্প্রদায় ভিত্তিক দেশ বিভাজনের মধ্য দিয়ে সেই সাম্প্রদায়িক বিষাক্ত মহীরুহের শেকড় গভীরে গ্রথিত করে যায়! অর্থাৎ হিন্দুস্তান ও পাকিস্তান নামক সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িকতাকে রাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর আওতায় এনে চির অশান্তির অনলে এই উপমহাদেশীয় জনপদকে ঠেলে দেয়া হয়।

সাম্প্রদায়িক নকশা অনুযায়ী পূর্ববঙ্গকে ভারতীয় বঙ্গাঞ্চল থেকে আলাদা করে পূর্ব পাকিস্তান নামে পাকিস্তানের প্রাদেশিক অঙ্গরাজ্য করা হয়। সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অভিরুচির দুই ভিন্ন জাতকে যে সমসাম্প্রদায়িক সুতোয় বেঁধে রাখা যায় না ১৯৪৭-১৯৭০ অবধি দীর্ঘ ২৩ বছরের বিচিত্র তিক্ত-বিরক্ত ইতিহাস সেই সত্যকেই প্রমাণ করে। পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল স্রেফ ঔপনিবেশিক। ব্রিটিশ যেমন সমগ্র বিশ্বে তার একচ্ছত্র প্রভাব-প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ঔপনিবেশিক অপকৌশলকে বেছে নিয়েছিল ঠিক সেই অনুকরণীয় পথেই পশ্চিম পাকিস্তান হেঁটেছিল (যদিও পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি তাদের ঔপনিবেশিক নিষ্পেষণের মাত্রা ব্রিটিশকেও ছাড়িয়েছিল)।

এ অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে ভারত ছিল তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। পাশাপাশি অতীত থেকে উদ্ভূত সাম্প্রদায়িক জিঘাংসা তো আছেই। উপরন্তু পূর্ববাংলার চিরায়ত অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতি (যা অবিভক্ত বাংলার আবহমান সংস্কৃতি থেকে উদ্ভূত)’র বিরুদ্ধে তাদের চিরাচরিত ঘৃণ্য মনোভাব তো ছিলই। এটাকে তারা হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি বলে মনে করত। এ ছাড়াও জাতি সংস্কৃতির ঐশী শক্তি (spiritual power) ভবিষ্যতে তাদের ঔপনিবেশিক শোষণের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিতে পারে- এ আশঙ্কায় তারা ’৫২ তে বাংলা ভাষার ওপর চরম আঘাত হানতে চেয়েছিল। এমনকি কবিগুরুর অমর সৃষ্টি বর্তমান জাতীয় সংগীতকেও তারা নিষিদ্ধ করণের মাধ্যমে মাতৃভূমি পূর্ববাংলার প্রতি বাঙালিদের আবেগকে হত্যা করতে চেয়েছিল।

অর্থনীতি, শিক্ষানীতিতেও তারা প্রবল আঘাত হেনেছিল। যেমন, ১৯৬৪ সালের আগে উভয় পাকিস্তানে কলকারখানার সংখ্যা ছিল প্রায় সমান; অথচ ১৯৬৫ সালে পূর্বে কমে পশ্চিমে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় দ্বিগুণে। ১৯৬৯-৭০ সালে পূর্ব অপেক্ষা পশ্চিমে মাথাপিছু আয় ৬১% পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। শিক্ষায় বরাদ্দ কমতে থাকায় পূর্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমে অথচ পশ্চিমে বাড়ে। এভাবে পূর্ব বাঙালিদেরকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত (paralyzed) করার মাধ্যমে কার্যত একটি দাস (slave) জাতিতে পরিণত করার নীলনকশা তারা এঁকেছিল যা অসংখ্য ঘৃণ্য ঘটনায় জর্জরিত। ভারতকে টেক্কা দিতে পূর্ববাংলা থেকে শোষিত অর্থ দিয়ে তারা নিজেদের সামরিক খাতে ৭০% পর্যন্ত বরাদ্দ রেখেছিল। পরিসংখ্যান মতে, তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে সর্বশেষ জনসংখ্যা ছিল সাত কোটি ৮০ লাখ। তার মধ্যে হিন্দু ছিল প্রায় এক কোটি। পক্ষান্তরে, পশ্চিম পাকিস্তানে পাঁচ কোটি ৮০ লাখের মধ্যে হিন্দু ছিল প্রায় আট লাখ। অর্থাৎ পূর্ব পাকিস্তানেই সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের বসবাস ছিল।

অথচ এ মুসলমানদেরকেই নির্যাতন, নিষ্পেষণ করতে তারা এতটুকু দ্বিধা করেনি। অর্থাৎ ধুরন্ধর জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্ব ছিল মূলত গভীর ও সুদূরপ্রসারী সাম্প্রদায়িক কূটকৌশল যার দ্বারা সে মুসলিম অধ্যুষিত পূর্ব পাকিস্তানকে ঘেরাটোপে এনে, ঔপনিবেশিক জাঁতাকলে ফেলে, শোষণের দ্বারা আত্মবলীয়ান হয়ে ব্রিটিশের মতোই দক্ষিণ এশিয়ায় একচ্ছত্র প্রতিপত্তি স্থাপন করে বিশ্বে তার অবস্থানকে সুসংহত করতে চেয়েছিল। আর এ লক্ষ্য পূরণে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে ভারতকে ভাবত। বলাবাহুল্য উত্তর, পূর্ব পশ্চিমের বিস্তৃত ভারতীয় অংশের সঙ্গে সমসাংস্কৃতিক সম্প্রীতির কারণে ভবিষ্যতে পূর্ব পাকিস্তান যাতে ভারতের দিকে ঝুঁকে না পড়ে সে লক্ষ্যে শুরুতেই তারা পূর্ব পাকিস্তানে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের দেয়াল তৈরি করে।

এ লক্ষ্যে তারা ধর্মের অপব্যবহারকে হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করে। বাঙালি সংস্কৃতিকে হিন্দুয়ানী আখ্যা দিয়ে সাংস্কৃতিক বিভাজন সৃষ্টির মাধ্যমে বাঙালি জাতীয়তাবাদে ফাটল ধরিয়ে বাঙালি ঐক্য দুর্বল করার অপপ্রয়াস চালায়। লক্ষণীয়, ব্রিটিশ তার ঔপনিবেশিক বুর্জোয়াবৃত্তি চরিতার্থের জন্য বাঙালির চিরায়ত অসাম্প্রদায়িক বন্ধনে শুধু সাম্প্রদায়িক বিষ ঢুকিয়ে বিভাজন সৃষ্টি করে ঐক্যবদ্ধ শক্তিকে দুর্বল করেছিল। অপরদিকে পশ্চিম পাকিস্তান একই দুরভিসন্ধি চরিতার্থে শুধু অসাম্প্রদায়িক বন্ধনেই নয়, সাংস্কৃতিক বন্ধনেও আঘাত হেনেছিল। অর্থাৎ এদের ষড়যন্ত্র ছিল ব্রিটিশের চেয়ে অনেক বিস্তৃত ও গভীরে গ্রথিত। এটা বললে অত্যুক্তি হবে না যে, পশ্চিম পাকিস্তানের ভিশন ছিল বাঙালির অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক চেতনে আঘাত হেনে জাতিসত্তাকে নির্মূলের মাধ্যমে বাঙালি জাতির অস্তিত্ব বিপন্ন করে তোলা।

বাঙালি জাতির পরিত্রাতা- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী দূরদর্শী ও ধ্রুপদী নেতৃত্বের কারণে তাদের সকল প্রকার ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়ে যায়। বঙ্গবন্ধু তাদের অপকৌশল মর্মে মর্মে বুঝতেন; ফলে রাজনীতিতে ধর্মের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে তিনি প্রবল সোচ্চারিত ছিলেন এবং একটি ধর্ম নিরপেক্ষ, অসাম্প্রদায়িক ও সর্বজনীন মানবিক ‘বাঙালি রাষ্ট্র’ গঠনে ব্রতী হয়ে উঠেছিলেন। ফলে,ব্যর্থ হয়ে পশ্চিম পাকিস্তান ১৯৭১ সালে নৃশংসতম ‘পোড়ামাটি নীতি’ এর মিশনে নামে। গভীর লক্ষণীয়, যে ইসলামের ধোঁয়া তুলে পাকিস্তানি শাসক, রাজনীতিক ও তাদের পূর্ব বঙ্গীয় দোসররা (রাজাকার, আলবদর, আলশামস) পূর্ব বাঙালিদেরকে ভারতপ্রেমী ও ইসলাম বিরোধী তকমা লাগিয়েছিল, বাস্তবে তাদের ব্যক্তিগত জীবনাচার ছিল সেই ইসলামেরই আদর্শ পরিপন্থি। তাদের রাজনৈতিক নীতিও ছিল ইসলামের নীতি বিরোধী যা ’৭১-এ দীর্ঘ নয় মাসের পৈশাচিক বর্বরতায় প্রতীয়মান হয়।

মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবিস্মরণীয় ও ঐতিহাসিক সহযোগিতার ফলে এদেশীয় স্বাধীনতা বিরোধী গোষ্ঠীর মাঝে ভারত বিরোধিতা প্রবলতর হয়ে ওঠে। জাতির পরিত্রাতা ও পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর প্রতিক্রিয়াশীল স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে সেই পুরাতন প্রবণতা প্রতিস্থাপন করে। বলাবাহুল্য সদ্যপ্রসূত দেশকে সেই পাকিস্তানি দুর্বিষহে ফিরিয়ে আনার ঘৃণ্য চক্রান্তেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় যা ’৭৫ পরবর্তী রাজনীতির (?) ভিন্ন ও ঘৃণ্য ধারা সেই দুরভিসন্ধিই প্রমাণ করে। লক্ষণীয়, ’৭৫ এর ৩ নভেম্বর চার জাতীয় নেতা হত্যায় ও ৭ নভেম্বরের রক্তাক্ত ঘটনাপ্রবাহে যারা ভারত বিরোধী প্রচারণা চালিয়েছিল, তারাই পরবর্তীতে জিয়াকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসায়।

অর্থাৎ কার্যত জিয়া ছিল ভারত বিরোধী (তথা পাকিস্তানপন্থি) গোষ্ঠীদের বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য এজেন্ট। তৎপরবর্তী জিয়া মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনা জাতির মগজ ও মনন থেকে নস্যাৎ করার লক্ষ্যে সংবিধানের মৌলিক নীতি থেকে ‘ধর্ম নিরপেক্ষতা’ বাতিল করে সাম্প্রদায়িকতা কায়েম করে। বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রকাশ্য বিরোধী (একই সঙ্গে যারা ভারত বিরোধী) গোষ্ঠীর সমন্বয়ে এক প্রহসনী রাজনৈতিক (?) ধারা প্রবর্তন করেন। এভাবে পূর্ব বাংলার আবহমান সৃজনশীল রাজনৈতিক সংস্কৃতির গতিপথ পরিবর্তন করে রাজনীতির ধ্রুপদী (classical) বৈশিষ্ট্যে আঘাত হানে যা ছিল তার বহুল আলোচিত অরাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিও ‘make politics difficult for the politicians’ এর সফল পরিণতি। যদিও জিয়া তার সামগ্রিক শাসনকালে ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কৌশলগতভাবে সচেষ্ট ছিল তবু নীতিগতভাবে ভারত বিরোধিতায় তাকে অনড় থাকতে দেখা যায়; ফলে, স্বাধীনতা উত্তর এদেশে থেকে যাওয়া অবাঙালিদের (পাকিস্তান পন্থি) শত ভাগই তাকে সমর্থন করত এবং আজও তার গঠিত দল বিএনপিকে করে যাচ্ছে। তাদের এই রাজনৈতিক ভুলের খেসারত ঢাকতে তারা পূর্বের ন্যায় ভারত বিরোধী খেলায় মেতে উঠেছে।

তবে এবার খেলাটি রীতিমতো ‘ফানি ড্রামা’ তে পরিণত হয়েছে। ঈদে চিত্রনাট্যটি দর্শকপ্রিয়তা না পাওয়ায় তা গুড়ে-বালিতে একাকার হয়ে গেছে। উল্লেখ্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য হিসেবে ভারত থেকে পেঁয়াজ, রসুন, আলু, গম, ভুট্টা, ডাল, চিনি প্রভৃতি আমদানি করা হয়। এ ছাড়াও প্রয়োজনীয় অন্যান্য পণ্যও আমদানি করা হয়। সীমান্তবর্তী তথা প্রতিবেশী দেশ হওয়ায় এগুলোর সরবরাহ খরচ কম পরে। এটা অনস্বীকার্য যে, আমাদের অভ্যন্তরীণ বাজারে এসব পণ্যের জরুরি চাহিদার ক্ষেত্রেও ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, পণ্য চাহিদার ১৮% আমদানি আসে ভারত থেকে। এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। শীর্ষে রয়েছে চীন।

বলাবাহুল্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী হলো মানুষের বেঁচে থাকার মৌলিক উপাদান। প্রসঙ্গত রাজনীতিতে পারস্পরিক বা দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট মতবিরোধ থাকতেই পারে। তাই বলে রাজনীতির নামে মানুষের মৌলিক চাহিদায় বিঘ্ন ঘটানো বা তাতে নিরুৎসাহ সৃষ্টি করা কখনোই প্রকৃত বা আদর্শিক রাজনীতির বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। এমন অনাদর্শিক চর্চা বিগত দিনে জাতীয় রাজনীতিতে পরিলক্ষিত হয়নি। অবস্থাদৃষ্টে, বিএনপির এ হেন কর্মকাণ্ডে তাদের গণবিরোধী অপরাজনীতির স্বরূপ প্রকাশ পেয়েছে। ‘Necessity knows no bound’- এ দর্শনের আলোকে সাধারণ জনগণ বিএনপির এই বিরাজনৈতিক কর্মসূচি মূলত প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রমাণিত হলো- জনগণই রাজনীতির ভিত্তিমূল। লেখক: কলামিস্ট

নয়া শতাব্দী/আরজে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ