ঢাকা, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১ জিলকদ ১৪৪৫

ঈদ ব্যস্ততায় হোসেনপুরের সুঁই সুতা শিল্পীরা

প্রকাশনার সময়: ২১ মার্চ ২০২৪, ১৭:২৪

পবিত্র ঈদুল ফিতরকে ঘিরেই মার্কেট ও বিপনি বিতনে বেড়েছে ক্রেতাদের সমাগম। শিশু-কিশোরসহ সব বয়সীরাই নতুন পোশাক কেনাকাটা নিয়ে ব্যস্ত। তাই কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে আকর্ষণীয় ও মনোরম ডিজাইনের পুঁতি ও সুতা দিয়ে শাড়িতে বাহারি রঙের নকশার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন সুঁই সুতা শিল্পীরা। তারা রাত-দিন একটানা শাড়িতে নকশার কাজ করছেন।

সরেজমিনে উপজেলার কুড়িমারা, রহিমপুর, আশুতিয়া, দ্বীপেশ্বরসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি বাড়িতে এখন পুরোদমে শাড়িতে পুঁতি ও সুতা দিয়ে বাহারি রঙের শাড়িতে বিভিন্ন নকশার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন নারীরা।

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ী ও মহাজনদের কাছ থেকে বিভিন্ন ডিজাইনে আঁকা শাড়িগুলোতে কাজ করতে নেন শিল্পীরা। এরপর শাড়ির ডিজাইন মতো সুতা ও পুঁতি দিয়ে নকশা প্রস্তুত করে থাকেন। শাড়ির ডিজাইন ও প্যাটার্ন ভিত্তিক মজুরি ভিন্ন হয়ে থাকে। ডিজাইনের ওপর নির্ভর করে প্রতিটা শাড়ি তৈরিতে দুই থেকে তিন দিন সময় লাগে। প্রতিটা শাড়িতে নকশার মজুরি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা দেয় ব্যবসায়ীরা। ওই সব শাড়ি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন মার্কেটের দোকানগুলোতে বিক্রি হয়ে থাকে। যা খুচরা বিক্রেতারা আট থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে থাকে।

উপজেলার দ্বীপেশ্বর গ্রামের নকশা কারিগর রহিমা খাতুন বলেন, সংসারের দিনমজুর স্বামীর পক্ষে ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ ও খাবার

জোগাড় করা কষ্টসাধ্য ছিল। ফলে বাড়তি কিছু উপার্জনের জন্য শাড়ির নকশাতে কাজ করছি। এসব শাড়ির কাজে যে মজুরি পাই তা অতি সামান্য। শাড়ির ব্যবসায়ী ও মহাজনরা শাড়িগুলো অনেক বেশি দামে বিক্রি করে অথচ আমরা ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত।

শাহেদল গ্রামের শাড়িতে নকশাকর্মী হনুফা বলেন, পারিবারিক অস্বচ্ছলতার কারণে শাড়িতে কাজ করি। শাড়িতে কাজ করে যা পাই তা দিয়ে কোনোমতে সংসার চালাতে পারছি।

কুড়িমারা গ্রামের নকশাকর্মী বিলকিস বলেন, অভাবের তাড়নায় শাড়ির কাজ করি। তবে মহাজনরা যদি আরো বেশি মজুরি দিত, তাহলে ভালোভাবেই সংসার চালাতে পারতাম।

উপজেলার আশুতিয়া গ্রামের সখিনা বেগম জানান, কাঠের ফ্রেমের শাড়ির কাপড় লাগিয়ে তাদের চুন দিয়ে অঙ্কিত ডিজাইনের চুমকি, পুঁতি ও পাথরের গায়ে লাগিয়ে শাড়িকে আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন করি। দু-তিনদিন একটি সারিতে চুমকি ও পাতলা কোনো কাজ শেষ করা যায়। আগে শাড়ি প্রথম ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করে দেয়া হতো যাতে তার কিছু টাকা সঞ্চয় করা যেত।

এব্যাপারে ঢাকার শাড়ির ব্যবসায়ী রেনু মিয়া জানান, পুঁতি-সুতার মূল্য বেশি, পরিবহন খরচ ও আনুষঙ্গিক ব্যয়ে তাদের খুব বেশি লাভ থাকে না। তাই কারিগরদের পারিশ্রমিক বাড়ানো আপাতত সম্ভব নয়। তবে তিনি এ খাতে আরো বেশি সরকারি পৃষ্টপোষকতার দাবি জানান।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ