ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

সমস্যার বানে জর্জরিত নবগঙ্গা নদী

প্রকাশনার সময়: ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৪:৪৩ | আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৪:৪৯

চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে পাঁচটি নদী। এর মধ্যে জেলার বুকচিরে যে নদীটি বয়ে গেছে তার নাম নবগঙ্গা। কয়েকযুগ ধরে রক্ষাণাবেক্ষণ ও দেখভাল না করায় প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট কারণে হারিয়ে গিয়েছে নদীটি। নদীর এক কিলোমিটার অংশে রয়েছে অবৈধ স্থাপনা, সরকারী ভবন ও স্থানীয়দের দখলে। এছাড়াও মামলা, উৎপত্তি নদীর সাথে সংযোগ না থাকাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত নদীটি।

নবগঙ্গা নদী পুন:খনন কার্যক্রম শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর। ১৫ কিলোমিটারের মধ্য ১৪ কিলোমিটার নদী পুন:খনন কাজ সম্পন্ন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। নবগঙ্গা নদীটি মাথাভাঙ্গা নদী থেকে উৎপত্তি হয়। নদীর অংশ শেষ হয়েছে সদর উপজেলার দশমাইল অংশে। নবগঙ্গা নদী চুয়াডাঙ্গা অংশে রয়েছে ২২ কিলোমিটার। উৎপত্তি স্থল খনন না হওয়া ও সুইচ গেট অপসারণ না করার কারণে পানি প্রবাহ সম্ভব হয়নি।

স্থানীয়রা জানান, নদীতে এক সময় অনেক পানি থাকতো। চলাচল করতো নৌকা-লঞ্চ। স্থানীয়দের দখল, নদীর বুকে নির্মাণ করা হয়েছে সরকারি ভবন। নদী খননের সময় স্থানীয়রা নিজেদের জমি দাবি করে আদালতে মামলা করেন। নদীর দুই পাড় ঘেঁসে নির্মাণ করা হয়েছে বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এমনকি যুব উন্নয়ন ভবন ও রেজিস্ট্রি অফিস নির্মাণ করা হয় নদীর বুকে। নদীর জায়গায় স্থাপনা রেখেই সরু নালার মত করে খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। নদী খননের সময় স্থানীয়রা নদীর জায়গা নিজেদের দাবি করে আদালতে মামলা দায়ের করায় বন্ধ হয়ে যায় পুন:খনন কার্যক্রম। পরিকল্পনা না করে খনন করায় কোটি কোটি টাকা মাটির নিচেই রয়ে গেল।

জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সাতগাড়ি পাড়া থেকে জাফরপুর গ্রাম পর্যন্ত ১ কিলোমিটার নদী খনন সম্ভব হয়নি ২১টি মামলা চলমান থাকায়। নদী খনন না হওয়ার স্থানে রয়েছে পাঁকা স্থাপনা ও ফসল চাষ। এসব কারণে নদীটি মৃত প্রায়। পানির প্রবাহ বন্ধ রয়েছে। নদীতে পানি না থাকায় কৃষক ও স্থানীয়রা সমস্যার মুখে পড়ছেন।

চুয়াডাঙ্গা নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহজান আলী বলেন, নবগঙ্গা নদী চুয়াডাঙ্গার মানুষের কোনো কাজে আসছেনা। উৎপত্তিস্থলের সাথে সংযোগ নেই। মাথাভাঙ্গা নদী থেকে নবগঙ্গায় পানি আসার কথা থাকলেও আসছে না। মাথাভাঙ্গার চেয়ে নবগঙ্গা অনেক উঁচুতে রয়েছে। উৎস মুখে সুইচ গেট রয়েছে। পুন:খনন যথাযথ ভাবে না হওয়ায় আমরা সুফল পাচ্ছিনা।

চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ আহমেদ বলেন, মামলা জটিলতার কারণে এক কিলোমিটারও নদী খনন করতে পারেনি। মামলার রায় সরকারের পক্ষে আসলে আবার খনন শুরু করা সম্ভব হবে। নদীর পানি প্রবাহ রাখতে বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা হয়েছে। দ্রুত সময়ে সমাধান হবে বলে আশা করছি।

নয়াশতাব্দী/টিএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ