ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ৭ জিলকদ ১৪৪৫

শেষ মুহুর্তে চাক সেমাই তৈরিতে ব্যস্ত রূপগঞ্জের কারিগররা

প্রকাশনার সময়: ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ২২:৩০ | আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ২২:৩৪

ঈদকে সামনে রেখে হাতের সেমাই তৈরিতে ব্যস্ত সময়ে পার করছেন রূপগঞ্জের কারিগররা। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ভোলাবো ইউনিয়নের চারিতালুক গ্রামের প্রায় সব ঘরে ঘরে চলছে সেমাই তৈরির কাজ। পরিবারের নারী-পুরুষসহ সকলেই ব্যস্ত সেমাই তৈরির কাজে। এবার এ সেমাইয়ের চাহিদাও অনেকটা বেড়েছে।

রূপগঞ্জ ছাড়াও রাজধানীসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলার বেড়েছে এই সেমাইয়ের কদর। প্রতিদিন সেই গ্রামসহ আশপাশের প্রায় এক‘শোটি পরিবারে তৈরি করা হচ্ছে ১২৫ মণের মত সেমাই। বছরে দুই ঈদে ২ মাস সেমাই বিক্রি করেই বেশ স্বাবলম্বী এখানকার পরিবারগুলো। সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা পেলে দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারবে বলে আশাবাদী এই এলাকার এক জনপ্রতিনিধি।

সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, ভোলাবো ইউনিয়নের চারিতালুক গ্রামের আশপাশে নেই কোনো শিল্পকারখানা। সবাই কৃষি নির্ভর, দিনমজুর, খেটে মানুষ। গত ৩০ বছর আগে এ গ্রামের কবির হোসেন নামের এক ব্যক্তি রাজধানীর ডেমরা থেকে শিখে এখানে তৈরি শুরু করেন হাতের তৈরি চাক সেমাই বানানো। বর্তমানে এ গ্রামের ৮০ টি পরিবারসহ কাঞ্চন, মুড়াপাড়া, বিরাবো, রানীপুড়াসহ আশপাশের প্রায় এক‘শোটি পরিবার এ সেমাই তৈরি করছেন। বছরে দুই ঈদে ২ মাস সেমাই বিক্রি করা হয়।

প্রতিদিন ভোর সকালে থেকে রাত পর্যন্ত চলে সেমাই তৈরির ধুম। কেউ সেমাই তৈরির জন্য ময়দা গোলা তৈরি করছে। কেউ রোদে শুকাচ্ছে। আবার কেউবা চুলায় তাপ দিয়ে ভাজছে। সেই তৈরি সেমাই প্রতিদিন দুরদরান্ত থেকে আসা পাইকারের কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে চারিতালুক গ্রামের হাতে তৈরি সেমাইয়ের খ্যাতি রূপগঞ্জ ছাড়াও রাজধানীসহ আশপাশে পাশের বিভিন্ন বিভিন্ন জেলায়।

সেমাই তৈরিতে জড়িতরা বলেন, গত বছর ৫০ কেজির এক বস্তা ময়দার দাম ছিল ২৬শ টাকা। তখন ভালো তেমন হয়নি। এবার তা নেমে এসেছে ১৬শ টাকায়। এক বস্তা ময়দা দিয়ে সেমাই তৈরি করতে খরচ পড়ে ৫শ টাকা। বিক্রি হয় ৪ হাজার টাকায়। প্রতি কেজি সেমাই বিক্রি করে লাভ হয় ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। এখানে পাইকারী দরে প্রতি কেজি সেমাই বিক্রি করা হয় ৮০ থেকে ৮৫ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১২৫ মণ সেমাই তৈরি ও বিক্রি হয়। বর্তমানে এ সেমাইয়ে চাহিদা অনেকটা বাড়ায় বেচাকেনাও বেশ ভাল। পরিবার পরিজন নিয়ে মোটামুটি বেশ ভালই আছে এ শিল্পের সাথে জড়িতরা।

এব্যাপারে ভোলাবো উনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর হেসেন টিটু বলেন, চারিতালুক গ্রামের আশপাশে কোনো শিল্প কারখানা নেই। এখানকার বেশিরভাগ মানুষ নিন্ম আয়ের। হাতের তৈরি চাক সেমাই তৈরি করে বেশ ভালই আছেন তারা। এ সেমাইয়ের কদর আমাদের এলাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলায় বেশ সমাদৃত।

তবে সরকার যদি তাদের আর্থিকভাবে সহায়তা করতেন তবে এ সেমাই তৈরি ও বিক্রি করে দেশের অর্থনীতে বিরাট ভূমিকা পালন করতো বলে তিনি আশাবাদী।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ