ঢাকা, সোমবার, ৩ জুন ২০২৪, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৫ জিলকদ ১৪৪৫

আজি এ বসন্তে কেটে যাক সব শঙ্কা

প্রকাশনার সময়: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০:৫৪

ঋতু বৈচিত্র্যের দেশ বাংলাদেশ। বছরজুড়ে ছয়টি অসাধারণ ঋতু সম্ভারে সেজে ওঠে এদেশের প্রকৃতি। যেহেতু এদেশের মানুষ এই ছয়টি ঋতুর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তাই তারা প্রতিটি ঋতুকে ভিন্ন ভিন্ন আমেজে উপভোগ করে। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত— এই ছয়টি ঋতু পালনে বাংলাদেশের মানুষ প্রাণ ও মন এক করে নিজেকে নিবেদিত করে। বৈচিত্র্যময় এই প্রকৃতির কারণেই হয়তো এদেশের মানুষের মনে মায়া-মমতার পরিমাণও বেশি। তারা সহজে মানুষকে ক্ষমা করতে পারে, আবার অচেনাকেও কম সময়ে আপন করে নিতে পারে, আতিথেয়তায় তারা অতুলনীয়। আবার গ্রীষ্মের রুক্ষতাও এদেশের মানুষের ব্যক্তি চরিত্রে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এর প্রমাণও আমরা নানা পারিবারিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে দেখতে পাই। তবে অধিকাংশ মানুষ সহজ, সরল স্বভাবের। বন্ধু মনোভাবাপন্ন।

আজ ১ ফাল্গুন। প্রকৃতিতে বসন্তরাজের আজ আগমন। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসও আজ। বিশ্বের সব বয়সি নর-নারী আজ ভালোবাসা দিবস পালন করবে। এটি শুধু প্রেমিক-প্রেমিকার জন্যই নয়। যে কোনো মানুষ, যে কোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রে তার ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারে। তবে অনেকেই মনে করেন বিশেষ একটি দিন শুধু নয়, ভালোবাসার প্রকাশ থাকুক সারাবছর, প্রতি মুহূর্তে। আমাদের দেশে বসন্তকালকে আলাদাভাবে উদযাপন করা হয়। কারণ, এই সময়ে প্রকৃতি নতুন করে সাজে। শীতে জবুথবু প্রকৃতি পুরোনো পাতা ঝরিয়ে নতুন কচি সবুজ পাতায় নতুন আঙ্গিকে তার রূপ সম্ভার নিয়ে হাজির হয়। প্রতি বছর এদেশের মানুষ মহাসমারোহে বসন্ত উদযাপন করে। কারণ প্রকৃতির মতো মানুষও চায় মনের যত জরা আছে তা বসন্ত বাতাসে দূরীভূত হয়ে যাক। শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী কিংবা বয়ষ্করাও বসন্তের আহ্বানে নিজেকে নতুন করে সাজায়। শুধু ব্যক্তি নয়, বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকেও নানা আয়োজনে বসন্ত পালনে নানা আয়োজন করা হয়। একে অপরকে বসন্ত শুভেচ্ছা বিনিময় করে মানসিক দূরত্ব অতিক্রম করার একটি সুযোগ পায়। তবে গত দু’বছরে সামাজিকভাবে দিবসটি পালন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কারণ, বিশ্বব্যাপী মহামারির থাবা স্বাভাবিকভাবেই সবকিছুর গতিকে শ্লথ করে দিয়েছে। প্রতিদিন আমরা মৃত্যু সংবাদ পাচ্ছি। সরকার বাধ্য হচ্ছে জনগণকে কঠোর বিধিনিষেধে আটকে রাখতে। এটি জনস্বার্থেই করা হচ্ছে। কারণ, করোনা বারবার ধরন পাল্টে যেভাবে থাবা বসাচ্ছে এর থেকে রক্ষা পেতে হলে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলা সবার জন্য আবশ্যক। যেমন— বারবার হাত ধোয়া, বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরা, যতটা সম্ভব দূরত্ব বজায় রেখে চলা। যদিও ইতোমধ্যে প্রায় ১০ কোটি মানুষ করোনার প্রথম ডোজ গ্রহণ করায় এর ভয়াবহতার পরিমাণ কমেছে। তবুও সবাই মিলে সচেতন না থাকলে এটি মারাত্মক আকার ধারণ করতেও সময় নেবে না।

করোনা আমাদের শারীরিক মানসিক আর্থিক অবস্থাকে একটি নাজুক অবস্থার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। তবে অদম্য ইচ্ছা শক্তি এই পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রচেষ্টাও জোরালোভাবে অব্যাহত রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি এই অবস্থা হয়তো আর বেশিদিন চলমান থাকবে না। কারণ, করোনার ভয়াবহতা থেকে মানবজাতিকে রক্ষা করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বিজ্ঞানীরা অনেকখানি এগিয়ে গেছে। পুরোপুরি তা নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলেও এখন তা আর অসম্ভব মনে হচ্ছে না। বসন্তের আগমন পুরোনো পাতার মতো বিশ্ব থেকে সব জরা দূর করে দেবে— এমন প্রত্যাশা করি আমরা। সবাইকে বসন্ত দিবসের শুভেচ্ছা, ভালোবাসাময় হয়ে উঠুক সবার জীবন।

নয়া শতাব্দী/এসএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ