ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

একজন বঙ্গবন্ধু ও একটি বাংলাদেশ

প্রকাশনার সময়: ১৫ ডিসেম্বর ২০২২, ১৪:১৪

১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পথ বেয়ে উপমহাদেশের জনগণ পেয়েছিল পাকিস্তান ও ভারত নামক দুটি রাষ্ট্র। এরপর শুরু হয় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক বাঙালিদের নতুন করে শোষণ ও পরাধীনতার শৃঙ্খলে বেঁধে রাখার ষড়যন্ত্র। পাকিস্তানি হানাদারদের শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় বাঙালি জাতি। স্বাধীনতার জন্য দৃঢ় প্রত্যয়ে দীপ্ত বাঙালির সামনে কোনো মারণাস্ত্রই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। বাঙালি হয়ে ওঠে সংগ্রাম, আন্দোলন আর স্বাধিকারে জাগরিত মহান স্বাধীনতা অর্জনের অনন্য উজ্জ্বলতার প্রতীক। বাঙালি জাতিকে মুক্তির এই মহামন্ত্রে উজ্জীবিত করে ধাপে ধাপে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পথে এগিয়ে নিয়ে যান ইতিহাসের মহানায়ক, মহাবীর, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান আর ২ লাখ মা-বোনের ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং কোটি বাঙালির আত্মনিবেদন ও সংগ্রামের ইতিহাসের ৫১ বছরে বাংলাদেশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের স্ফুলিঙ্গে উজ্জীবিত সশস্ত্র জনযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে মুক্তির ইতিহাস, স্বাধীনতার ইতিহাস। হয়েছে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ৪৮-এ বাংলাভাষার দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের পথ বেয়ে ’৫২-এর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে জয়লাভ, ’৫৬-এর সংবিধান প্রণয়ন আন্দোলন, ’৫৮-এর মার্শাল ল বিরোধী আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা কমিশনবিরোধী আন্দোলন, ’৬৬-এর বাঙালির মুক্তির সনদ ৬-দফা আন্দোলন, ’৬৮-এর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ’৬৯-এর রক্তঝরা গণঅভ্যুত্থান, ৬-দফাভিত্তিক ’৭০-এর ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রামখ্যাত কালজয়ী ঐতিহাসিক ভাষণ ও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন প্রভূত ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জনের চূড়ান্ত লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওঠে বাঙালি জাতি।

১৯৭১-এর ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করলে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলার সর্বস্তরের জনগণ জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে অস্থায়ী সরকারের অধীনে দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহিদের আত্মত্যাগ ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। বিশ্বমান চিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের। বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের এই ধারাবাহিক সংগ্রামে জীবনের অধিকাংশ সময় জেলে কাটিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দুবার ফাঁসি কাষ্ঠের মুখোমুখি হয়েছেন, অসংখ্য মিথ্যা মামলায় অসংখ্যবার কারাবরণ করার পরও স্বাধীনতা অর্জনের প্রশ্নে আপস করেননি। তিনি বাংলার মানুষকে দিয়েছেন একটি স্বাধীন ভূখণ্ড, একটি পতাকা, একটি মানচিত্র, জাতীয় সংগীত, সংবিধান, বিশ্বের বুকে গর্বিত পরিচয়। বাংলা, বাঙালি ও বঙ্গবন্ধু একই বৃত্তে তিনটি চেতনার ফুল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের মাধ্যমে গরিব-দুঃখী-মেহনতী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই ছিল বঙ্গবন্ধুর সারাজীবনের একমাত্র লক্ষ্য। তিনি জেল-জুলুম-হুলিয়া, শত যন্ত্রণা, দুঃখ-কষ্ট-বেদনাকে সহ্য করে বাংলার কৃষক-শ্রমিক জনতার মুখে হাসি ফোটাতে নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের মাঝে বঙ্গবন্ধু চিরদিন অম্লান এবং বাংলার জনতার হূদয়ে চিরভাস্বর হয়ে থাকবেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে অর্জিত স্বাধীনতার মূলমন্ত্র আজও আমাদের প্রেরণা জোগায় নির্ভীক যোদ্ধা হওয়ার, দেশ গড়ার কাজে আত্মনিবেদিত রাখার। এর মধ্য দিয়েই বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে আসবে প্রকৃত মুক্তি।

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়েই বাঙালির ভবিষ্যৎ ভাগ্য স্পষ্ট নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। মহান স্বাধীনতার স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে জনযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এ দেশের মানুষ। ৯ মাসের বীরত্বপূর্ণ লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ মানুষের জীবন উৎসর্গ করা ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আসে আমাদের জাতীয় জীবনে মুক্তি নিয়ে আসে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল ১৬ ডিসেম্বর। আবার এই ডিসেম্বর মাসেই পাকিস্তানিরা তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার আলবদর আলশামস বাহিনীর সহযোগিতায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যার নৃশংস হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছিল। এই কারণে বাঙালি বিজয়ের মাসটি উদ্‌যাপন করে একই সঙ্গে আনন্দ ও বেদনায়। ডিসেম্বর আমাদের বিজয়, গৌরব আর অহংকারের মাস। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পূর্ণতা পেয়েছিল স্বাধীনতার জন্য বাঙালির দীর্ঘ সংগ্রাম। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত হয় হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী। বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ এর যাত্রা। আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সবচেয়ে বড় স্মারক আমাদের জাতীয় পতাকা। সারাবিশ্বে আজ সেই জাতীয় পতাকাই আমাদের পরিচয়ের প্রধান বাহক। এরপর আসে জাতীয় সংগীত।

দেশ পুনর্গঠনের এ মহাকর্মযজ্ঞে যখন হাত দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ঠিক তখনই দেশের ভেতরে ও বাইরে দানা বাঁধতে থাকে ষড়যন্ত্র। সেগুলো মোকাবিলা করে উন্নয়ন ও পুনর্গঠনের পথে বঙ্গবন্ধু এগিয়ে যাচ্ছিলেন ঠিকই। কিন্তু সব প্রয়াস ব্যর্থ করে দিয়ে ১৯৭৫-এর পনেরোই আগস্টে ষড়যন্ত্রকারীরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে এবং একটি সদ্য স্বাধীন দেশের উন্নয়ন স্পৃহাকে। কিন্তু সফল তারা হয়নি। জাতির জনকের হাতের স্পর্শে গড়ে ওঠা এ দেশের একেকটি প্রতিষ্ঠান আজও সাক্ষ্য দিচ্ছে— স্থপতি কখনও মরে না। জাতির পিতারও মৃত্যু নেই। তাঁর সুনিপুণ হাতের ছোঁয়ায় গড়ে ওঠা এ রাষ্ট্র তাঁরই আদর্শে উন্নয়নের শিখরে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁরই সুযোগকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিভিন্ন জাতির স্বাধীনতার অভিজ্ঞতা থেকেই প্রতীয়মান হয় যে, স্বাধীনতা অর্জন করা কঠিন হলেও তাকে রক্ষা ও ফলপ্রসূ করার কাজটাও অনেক কঠিন। তাই মিল্টন বলেছিলেন, স্বাধীনতা মানুষের প্রথম এবং মহান একটি অধিকার। সেই অধিকারের জায়গাতেই মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা থাকতে হবে। কাজেই উন্নয়নের প্রতি সব মানুষের সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। তবেই তো স্বাধীনতার মূল্যায়ন হবে। এদেশের স্বাধীনতার মর্যাদা সব জাতিকেই ধরে রাখতে হবে। আর তাকে রক্ষা কিংবা সুসংহত করার জন্যই জাতীয় জীবনে অনেক গুরুদায়িত্ব পালন করতে হবে। আজ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। ঠিক বঙ্গবন্ধু যেমনটি স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই লক্ষেই পৌঁছে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দ্য ডনে প্রকাশিত এক নিবন্ধে পাকিস্তানের অর্থনীতিবিদ এবং দেশটির প্রধানমন্ত্রীর ইনস্টিটিউশনাল রিফর্মস অ্যান্ড অস্টারিটি উপদেষ্টা ইশরাত হুসাইন বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় আয় বেড়েছে ৫০ গুণ আর মাথাপিছু আয় বেড়েছে ২৫ গুণ, যা ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বেশি। দেশটির খাদ্য উৎপাদনও বেড়েছে চার গুণ। রফতানি বেড়েছে শত গুণ। বেশিরভাগ সামাজিক সূচক আঞ্চলিক দেশগুলোর তুলনায় বেশ ভালো।

আজ দেশটির মানব উন্নয়ন সূচকের মান বেড়েছে ৬০ শতাংশ। ১৯৯০ সালে বাংলাদেশে ৬০ শতাংশ দারিদ্র্য ছিল। তা কমে এখন ২০ শতাংশে নেমেছে। গড় আয়ু বেড়ে ৭২ বছর হয়েছে। গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সিপিডি সম্প্রতি বলেছে, বাংলাদেশ এখন তার স্বাধীনতার ৫০ বছরে দাঁড়িয়ে। একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ এই সময়ের মধ্যে যেভাবে অর্থনৈতিক, সামাজিকসহ পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন বিষয়ে উন্নতি লাভ করেছে এক কথায় সেটি একটি মিরাকল। বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৫.৪৭ শতাংশ। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার পাকিস্তানের ৩.৫ শতাংশ এবং ভারতের ৫ শতাংশ। বাংলাদেশের শিক্ষার হার ৭৫.৬০ শতাংশ। পাকিস্তানের শিক্ষার হার ৫৯.১৩ শতাংশ এবং ভারতের ৭৪.৪ শতাংশ। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পাকিস্তানের ২০ বিলিয়ন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশের ৪৫ বিলিয়ন ডলার। দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা নাগরিক ভারতে ২১.৯ শতাংশ, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে সমান ২৪.৩ শতাংশ। ক্ষুধা সূচকে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের রফতানি আয় ৪৩ বিলিয়ন ডলার, পাকিস্তানের সেখানে ২৩ বিলিয়ন ডলার। গ্রস সেভিংস জিডিপির ক্ষেত্রে শীর্ষে বাংলাদেশ ৩৩.৩ শতাংশ। ভারত ৩১.১ শতাংশ এবং পাকিস্তান ১৯.৩ শতাংশ। ২০২১ সালে বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ১১৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭৬তম। অন্যদিকে এই সূচকে পাকিস্তানের অবস্থান ৯২ এবং ভারতের অবস্থান ১০১তম। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা এখন পুরো বিশ্বের জন্য দৃষ্টান্ত। এর নাম অদম্য বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও আর্থ-সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ ছাড়িয়ে গেছে দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব দেশকে। স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল উদ্দেশ্য ছিল শোষণ, বৈষম্য, অন্যায়ের অবসান ঘটিয়ে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত একটি সুখীসমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠা, আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার অর্জন ও অসাম্প্রদায়িক, কল্যাণমুখী, মানবিক, প্রগতিশীল স্বতন্ত্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। এছাড়াও মানুষের মৌলিক অধিকার ও ন্যায় সঙ্গত অধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে জাতীয় পরিচয় প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ছিল স্বাধীনতার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য।

স্বাধীনতা যে কোনো জাতির পরম আকাঙ্ক্ষিত বিষয়। আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার লাভ, গণতান্ত্রিক সুশাসন প্রতিষ্ঠা, ন্যায়নীতিভিত্তিক সমাজ গঠন, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন, জানমালের নিরাপত্তা বিধান, ধর্ম পালন, নিজস্ব সংস্কৃতি-মূল্যবোধ-বিশ্বাসের অবারিত চর্চা নিশ্চিত করা ইত্যাদি সাধারণ জাতীয় আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রতিটি জাতির জন্য অপরিহার্য। সুতরাং জাতীয় জীবনে স্বাধীনতার তাৎপর্য অপরিসীম। এ দিনটি বাঙালির জীবনে বয়ে আনে আনন্দ-বেদনার অম্ল-মধুর অনুভূতি। একদিকে হারানোর কষ্ট অন্যদিকে প্রাপ্তির আনন্দ। তাই স্বাধীনতার অর্জন যাতে কোনোভাবেই ম্লান না হয়, সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা উচিত। প্রত্যেক মানুষ তার স্বাধীন সত্তা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে এবং স্বাধীনভাবে বাঁচতে চায়। এটা তার জন্মগত অধিকার। এই অধিকার যখন অন্যের দ্বারা লুণ্ঠিত হয় তখনই সে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। সেই দ্রোহ থেকে সচেষ্ট হয় নিজ স্বাধীনতা এবং স্বদেশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করতে। তাই স্বাধীনতা শব্দটির তাৎপর্য গভীর ও ব্যাপক। স্বাধীনতা মানে ইচ্ছের স্বাধীনতা, রাজনীতির স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক মুক্তি। একটি দেশের স্বাধীনতা সেদিনই সার্থক হয় যেদিন দেশের আপামর জনগণ প্রকৃত অর্থে গণতান্ত্রিক পরিবেশে, নিজেদের নাগরিক অধিকার নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার ক্ষমতা অর্জন করে।

লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ