সাফল্য সাধারণত খুব সহজে ধরা দেওয়ার বিষয় নয়। অনেকে মনে করেন, সফলতা একদিন নিজ থেকেই চলে আসবে। এটি ভুল ধারণা। আপনার প্রচেষ্টাই কেবল পারে আপনাকে স্বপ্নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে। যারা ব্যর্থ, তাদের মধ্যে কিছু সাধারণ অভ্যাস লক্ষ্য করা যায়। যিনি ব্যর্থ, তিনি কি বুঝতে পারেন যে তিনি ব্যর্থ? সম্ভবত না। কারণ নিজের ব্যর্থতা বুঝতে পারলে মানুষ আর সেই পথে থাকে না। তখন সঠিক পথ খুঁজে নেন এবং অল্প হলেও সফলতার দেখা পান। আপনার অজান্তেই হয়তো এমনকিছু কাজ বা অভ্যাস রয়ে গেছে যা দিনশেষে আপনাকে একজন ব্যর্থ মানুষ হিসেবে প্রকাশ করে। হয়তো আপনি বুঝতে পারছেন না, কেন আপনার জীবনে সফলতার দেখা মিলছে না। চলুন, জেনে নেওয়া যাক, আপনি ব্যর্থ মানুষ কি না-
১. ভুল মানুষের সঙ্গে সময় কাটানো
আপনার চারপাশে ভুল মানুষ নেই তো? জীবনে সফলতা পেতে হলে সঠিক মানুষকে পাশে রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। একজন ভুল মানুষ আপনাকে ভুল পথে নিয়ে যেতে পারে, আপনার আত্মবিশ্বাস চূর্ণ করে দিতে পারে। তাই সঙ্গী কিংবা বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্ক হোন। এমনকী আত্মীয়-পরিজনদের মধ্যে যারা নেতিবাচক চিন্তাধারার, তাদের সঙ্গ যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
২. নেতিবাচক চিন্তা
ব্যর্থ মানুষের আরেকটি লক্ষণ হলো, তারা সারাক্ষণ নেতিবাচক চিন্তায় ডুবে থাকেন। যেকোনো জিনিসেরই দুটি দিক থাকে। নেতিবাচক আর ইতিবাচক। ব্যর্থ মানুষেরা সারাক্ষণ নেতিবাচক দিকগুলো ভাবেন এবং উদ্বিগ্ন হন। এই নেতিবাচক চিন্তা তাদেরকে সামনে এগিয়ে যেতে বাধা দেয়। সারাক্ষণ এক ধরনের ভয় কাজ করে। তাদের শুরুতেই মনে হয়, ‘আমি পারবো না’!
৩. দেরি করা
ব্যর্থ মানুষের একটি লক্ষণ হলো যে তারা যেকোনো জায়গায় দেরি করে যায়। নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত হতে তারা জানেই না। এর অর্থ হলো সময়ের প্রতি গুরুত্ব না দেওয়া। যে কারণে সময়ও তাকে গুরুত্ব দেয় না। দিনশেষে ব্যর্থদের কাতারে নিজেকে আবিষ্কার করে। সময় মেনে চলা অনেক বড় একটি গুণ। এটি আপনাকে সফল তো করবেই, সেইসঙ্গে দেবে স্বস্তিও। যেকোনো জায়গায় নির্দিষ্ট সময়েরও পাঁচ-দশ মিনিট আগে উপস্থিত হওয়ার চেষ্টা করুন।
৪. দুপুরের খাবার না খাওয়া
দুপুরের খাবার খাওয়া দিনের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমাদের দেশে সাধারণত এসময় মূল খাবারটি খাওয়া হয়ে থাকে। আপনি যদি নিয়মিত দুপুরের খাবার বাদ দিতে থাকেন আর বিকেলের দিকে ক্ষুধা পেলে ফাস্টফুড বা মুখরোচক খাবার আনিয়ে খান, তাহলে জেনে নিন আপনি ব্যর্থদের তালিকায় নাম লেখাতে চলেছেন। একজন সফল মানুষ নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হন। তারা জানেন, কী করে নিজেকে সুস্থ রাখতে হয়।
৫. একসঙ্গে অনেক কিছু করার চেষ্টা
মাল্টিটাস্কিং বলে কিছু নেই। হতে পারে তা আপনার নিজেকে অনেক দক্ষ বলে প্রমাণের চেষ্টা। কিন্তু এই একসঙ্গে অনেকগুলো কাজ করতে যাওয়ার অভ্যাস আপনাকে কোনোকিছুতেই দক্ষ করে তোলে না। আপনি সবগুলো বিষয়ে ভাসা ভাসা ধারণা পান কেবল। একই সময়ে একাধিক বিষয়ে মনোযোগ দিলে তা আপনার ক্ষতি ছাড়া কিছুই করে না। তাই সবকিছুতে দক্ষ হওয়ার প্রয়োজন নেই। যে কাজটি আপনি ভালোভাবে পারেন, সেটিই কেবল করুন।
৬. ক্রমাগত ফোন চেক করা
অনেকেই আছে যারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোন স্ক্রল করে যায়, কিন্তু কী দেখছে, কেন দেখছে কিছুই জানে না। অপরদিকে ঘড়ির কাঁটা ঘুরতে থাকে নিজের গতিতে। সময় নষ্ট হয় এভাবেই। এটি হলো বর্তমান ব্যর্থ মানুষের আরেকটি লক্ষণ। সফল মানুষেরা নিজের সময়ের গুরুত্ব জানেন। যে কারণে তারা কোনো সময় নষ্ট করেন না। ফোন অবশ্যই চেক করবেন, তবে তার সময়সীমা নির্দিষ্ট করুন। প্রতি মিনিটে মিনিটে রিফ্রেশ দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
নয়াশতাব্দী/ডিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ