ঢাকা, সোমবার, ৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জীবিত ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা, ভাতা বঞ্চিত রুস্তম!

প্রকাশনার সময়: ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:২৩
ছবি- নাতির কোলে শারীরিক প্রতিবন্ধী রুস্তম আলী মীর

ফরিদপুরের নগরকান্দার চরযশোরদি ইউনিয়নের আশফোরদী গ্রামের ৮১ বছর বয়সী শারীরিক প্রতিবন্ধী জীবিত রুস্তম আলী মীরকে ২০১৯ সালে জাতীয় পরিচয়পত্রে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে জীবিত থেকেও জাতীয় পরিচয়পত্রে এখন মৃত তিনি। মৃত ঘোষণা করার পর রুস্তমের প্রতিবন্ধী ভাতা বাতিল করেছে সমাজ সেবা অফিস। ফলে চার বছর ধরে ভাতা বঞ্চিত শারীরিক প্রতিবন্ধী দরিদ্র অসহায় রুস্তম।

জীবিত ব্যক্তিকে জাতীয় পরিচয়পত্রে মৃত ঘোষণা করায় সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ থেকে বঞ্চিতসহ উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরেও যেতে পারছেন না রুস্তম আলী। ভোটার তালিকা থেকে তার নাম বাতিল করায় ভোটাধিকার থেকেও বঞ্চিত হয়েছেন। তার প্রতিবন্ধী ভাতা বাতিল হওয়ায় আর্থিক সংকটে দুশ্চিন্তায় মানবেতর জীবনপার করছেন তিনি।

প্রতিবন্ধী রুস্তম আলী মীর বলেন, ২০১৯ সালে ভোটার তালিকা হাল-নাগাদ করার সময়, আমার প্রতিবন্ধী ভাতা বাতিল করে অন্য কাউকে ভাতা পাইয়ে দিতেই চরযশোরদী ইউনিয়নের মুকন্দপুট্টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সালাউদ্দিন মুন্সী টাকার বিনিময়ে প্রতিবেশী কুদ্দুস আলী মীরের যোগসাজসে আমাকে জাতীয় পরিচয়পত্রে মৃত ঘোষণা করেছে। জীবিত থাকতেই আমাকে মৃত ঘোষণা করায়, আমার প্রতিবন্ধী ভাতা বাতিল করে দিয়েছে সমাজ সেবা অফিস। আমি কোনো নির্বাচনে ভোট দিতে পারছি না। মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমাকে মৃত ঘোষণা করায় আর্থিক, সামাজিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ। ক্ষতি যারা করেছে, আমি তাদের বিচার চাই এবং ক্ষতিপূরণ চাই।

জীবিত ব্যক্তিকে মৃত বানানোর বিষয়টি জানতে অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষক সালাউদ্দিন মুন্সির কাছে গেলে তিনি বলেন, রুস্তম আলী মীরের প্রতিবেশী কুদ্দুস আলীর মীরের তথ্যের ভিত্তিতে তাকে মৃত ঘোষণা করে নগরকান্দা উপজেলা নির্বাচন অফিসে ফরম জমা দিয়েছি। এখানে আমার কোনো দোষ নেই। আমি সঠিক নিয়ম মেনেই কাজ করেছি।

এব্যাপারে মীর কুদ্দুস আলী মীর বলেন, স্কুল শিক্ষক সালাউদ্দিন মুন্সিকে আমি চিনি না। তিনি আমার কাছে তথ্য নিতে আসেনি। রুস্তম আলী মীরের সম্পর্কে আমি এ ধরনের কোনো তথ্য তাকে দেইনি।

জীবিত ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করার ঘটনায় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু তালেব বলেন, মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহকারীদের গাফিলতির কারণেই এমন ঘটেছে।

নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাফী বিন কবির বলেন, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে বিষযটি খতিয়ে দেখাসহ দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এরমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ