ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আবারও অস্থির চালের বাজার

প্রকাশনার সময়: ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৬:৩৯

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারকে কুষ্টিয়ার মিল মালিক ও চাল ব্যবসায়ীদের ‘বাজারে আর বাড়বে না চালের দাম’ মর্মে দেওয়া প্রতিশ্রুতির এক মাস না যেতেই আবারও কেজিতে দাম বেড়েছে ৪ থেকে ৬ টাকা। এ যেন মগের মুল্লুক। দেখার কেউ নেই বলেই আবারও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে কুষ্টিয়ার চালের বাজারে। দেশের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগর হলেও বাজারে হু হু করে এ দাম।

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, মোকাম থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। আর ব্যবসায়ী ও চালকল মালিকেরা বলছেন, প্রতিদিনই বাড়ছে ধানের দাম। সে কারণে চালের দাম বাড়াতে হচ্ছে। মিল গেটে কেজি প্রতি দুই থেকে আড়াই টাকা বেড়েছে। ধানের দাম বৃদ্ধির ওপরও নজরদারি করার দাবি জানিয়েছেন চালকল মালিকেরা।

বাজার সূত্রে জানা যায়, নানা অজুহাতে গত বছরের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে বেড়েছিল ৩ টাকা পর্যন্ত। মাত্র দুই মাস পর কয়েক দিনে খুচরা বাজারে আবারও সব ধরনের চাল কেজিতে ৪ টাকা থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। মৌসুম শেষে এ নিয়ে কুষ্টিয়ায় চালের দাম বাড়ল। ধানের দাম বাড়ার অজুহাতে চালের দাম বৃদ্ধি করেছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। বারবার চালের দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ ভোক্তাদের নাভিশ্বাস উঠছে।

কুষ্টিয়া পৌর বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৬৮ টাকার মিনিকেট চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৭২ টাকায়। কয়েক দিন আগেও ৫৬ টাকায় বিক্রি হওয়া কাজললতা চাল এখন ৬৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মোটা চাল কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকা।

কয়েক দিনের মধ্যে দাম বাড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর বাজারের কয়েকজন চাল বিক্রেতা বলেন, বেশি দামে মোকাম থেকে চাল কিনতে হচ্ছে। কদিন আগে কাজললতা চাল ৫৬ টাকায় বিক্রি করেছেন। সেটি এখন ৬৫ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। মোকাম থেকে বস্তা প্রতি বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে চাল। সেই সঙ্গে পরিবহন খরচ যোগ করে কেজি প্রতি চালের দাম ৪ টাকা থেকে ৬ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।

চাল কিনতে আসা কয়েকজন ক্রেতা অভিযোগ করেন, ব্যবসায়ী সরকারি কর্মকর্তা ও মিল মালিকেরা বরাবরের মতো আবার সিন্ডিকেট করে চাল মজুদ রেখে দাম বাড়াচ্ছে। প্রশাসন চাইলে ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর এই প্রবণতা ঠেকিয়ে দিতে পারে বলে মনে করেন তারা।

বাজার নিয়ন্ত্রণকারীরা বলছেন- অতিরিক্ত মুনাফা করে কেউ দাম বাড়াচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তারা।

কুষ্টিয়া পৌর মার্কেটের তদারকিতে থাকা সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান বলেন, সকালেও আমাদের একটি টিম বাজার ঘুরে দেখেছে। দাম বেড়েছে। আমরা মিলগুলোর ধান ক্রয় ও মাড়াইয়ের খরচের সঙ্গে বিক্রয় মূল্যের তুলনা করে দেখছি। কেউ অতিরিক্ত মুনাফা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চালের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতি কুষ্টিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন প্রধান বলেন, ধানের দাম বৃদ্ধির সাথে কুষ্টিয়ার মিল মালিকেরা দাম বৃদ্ধি করেছে। দাম বৃদ্ধি না করলে মিলাররা পথে বসে যাবে। কারণ বর্তমান ধানের সংকট চলছে বেশি দামে বিক্রয় করার কারণে চালের দাম বৃদ্ধি করতে বাধ্য হয়েছে মিলাররা।

এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া জেলার খাদ্য কর্মকর্তা বাবুল হোসেন বলেন, আমরা শুনেছি আবারও চালের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। কারণ জানতে মাঠে কাজ করছে ভোক্তা অধিদপ্তরের টিমসহ আমাদের খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। বাজার মনিটরিং শুরু করা হয়েছে। মিলারদের কাছে কোনো চাল বা ধান মজুদ নাই। তবে ধানের সংকট চলছে, যার কারণে চালের দাম বৃদ্ধি হতে পারে।

নয়াশতাব্দী/টিএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ