ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

শুষ্ক ত্বক পরিচর্যায় পেট্রোলিয়াম জেলি

প্রকাশনার সময়: ২৭ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:০৬

পেট্রোলিয়ামের উপজাত পণ্য হিসেবে পেট্রোলিয়াম জেলি সৃষ্টি হওয়াতে অনেকেই এর ব্যবহার নিয়ে শঙ্কায় থাকেন। তবে ক্যালফোর্নিয়ার ত্বক বিশেষজ্ঞ ডা. সান্ড্রা লি বলছেন, পেট্রলিয়াম জেলি পরিশোধিত এবং নিরাপদ, বিশেষত শুষ্ক ত্বকের জন্য।

ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, এটা ত্বকে বাইরের বাতাস প্রবেশ করতে বাধা দেয়। ফলে ত্বক থেকে আর্দ্রতা শুষে নিতে পারে না। যে কারণে শুষ্কতার সমস্যা কমে।

ডা. লি মনে করেন, পেট্রোলিয়াম জেলির ঘন ফর্মুলা ত্বকের ওপর প্রলেপের মতো কাজ করে। তবে সব ধরনের ত্বকের জন্য প্রযোজ্য নয়।

আর্দ্রতা ধরে রাখে

পেট্রোলিয়াম জেলি ঘন। তাই এটা ত্বকের প্রলেপের মতো কাজ করে। সারা শরীরে নয় বরং যেসব স্থান বেশি শুষ্ক যেমন- ঠোঁট, কনুই, হাঁটু ইত্যাদি স্থানে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করা উচিত বলে মনে করেন, ডা. লি।

তিনি বলেন, শীতে ত্বকে বাড়তি আর্দ্রতার প্রয়োজন হয়। আমার ত্বক খুব বেশি শুষ্ক হওয়ায় আমি মেইকআপের নিচে পেট্রোলিয়াম জেলির পাতলা স্তর ব্যবহার করতে পারি। তবে যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাদের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য নয়।

দাগ ও ক্ষত সারাতে শুষ্ক গোড়ালি, ফাটা বা চামড়া ওঠা আঙ্গুলে ও ফাটা ঠোঁটে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্যবহার করা উপকারী পেট্রোলিয়াম জেলি। এতে ব্যথাভাব কমার পাশাপাশি আর্দ্রতা বজায় থাকে। আর ক্ষত সারাতে দেহের প্রায় সকল স্থানেই তা ব্যবহার করা যায়।

এটা স্বস্থিজনক, সুরক্ষা বান্ধব যা ঠোঁট ফাটা কমায়, ত্বকের জ্বলুনি কমায় এবং ক্ষত সারাতে সহায়তা করে, বলেন ক্যালিফোর্নিয়ার ‘কেক স্কুল অফ মেডিসিন’য়ের সহযোগী অধ্যাপক, শিশুচর্মরোগ বিশেষজ্ঞ সিপোরা শাইনহাউজ।

তিনি আরও বলেন, এটা ত্বকে অ্যালার্জি ছাড়াই প্রতিরক্ষামূলক স্তর তৈরি করে। আর্দ্রতা ধরে রাখে। আর নিরাময় করতে সহায়তা করে।

দাগ কমাতে শুষ্ক ত্বকে কাজ করে ডা. লি বলেন, শুষ্ক ত্বকে পেট্রোলিয়াম জেলি ‘স্পট ট্রিটমেন্ট’ বাদ দাগ কমাতে কাজ করে। কনুই, হাঁটু-সহ অন্য শুষ্ক অংশে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার শুষ্কতা কমাতে সহায়তা করে। পাশপাশি একজিমার জন্যও খুব ভালো কাজ করে।

পেট্রোলিম জেলির ব্যবহার শুষ্ক ত্বকের স্বাভাবিকভাবে মাখা ছাড়াও বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করা যায়।

যদি একজিমা থাকে এই ধরনের চর্মরোগ দেখা দিলে ত্বক মসৃণ ও আর্দ্র রাখে এমন উপাদান ব্যবহার করতে হবে। নিউইয়র্ক’য়ের ‘ইউনিয়ন স্কয়ার লেজার বোর্ড’য়ের ত্বক বিশেষজ্ঞ ওয়াই ক্লেয়ার চ্যাং বলেন, কসমেটিক গ্রেড পেট্রোলিয়াম’ প্রকৃত রূপ থেকে বেশি নিরাপদ, পরিশোধিত উপকরণ সমৃদ্ধ। আমি সাধারণত পেট্রোলিয়াম সমৃদ্ধ উপাদান নির্ভর মলম ক্ষত সারাতে, শুষ্কতা ও একজিমার সমস্যা দূর করতে ব্যবহার করার পরামর্শ দেই।

শুষ্ক ত্বকে তৈলাক্ত বা ব্রণ প্রবণ ত্বক হলে, ডা. লি পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার না করার পরামর্শ দেন। ত্বক ব্রণ প্রবণ না হলে বা ‘ব্রেক আউট’ হওয়ার ঝুঁকি না থাকলে ঘন ঘন ভ্যাসলিন ব্যবহার করা যেতে পারে। এটা ত্বকের লোমকূপ আবদ্ধ করে ফেলতে পারে এবং ‘ব্রেক আউট’য়ের সম্ভাবনা বাড়ায়। এছাড়াও ‘মিলিয়া’র মতো ছোট ছোট ‘সিস্ট’ দেখা দিতে পারে। যাদের ত্বক খুব বেশি শুষ্ক এটা তাদের জন্য ‘স্পট ট্রিটমেন্ট’ হিসেবে কাজ করে। তৈলাক্ত ত্বকে পেট্রোলিয়াম জেলির ব্যবহার ব্রণ বাড়াতে পারে।

ক্যালিফোর্নিয়া’র ‘রিনিউএমডি বিউটি অ্যান্ড ওয়েলনেস’য়ের ডা. সিমরান সেঠি, ত্বকে কোনো রকম ক্ষত, কাটা বা জ্বলুনির সমস্যা থাকলে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহারের পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, অন্যথায় তৈলাক্ত ত্বকে তা ব্যবহার না করাই ভালো। এতে ব্রণের সমস্যা বাড়তে পারে। ব্রণের সমস্যা কমাতে মেডিকেটেড উপকরণ প্রয়োজন। যা ত্বক পরিষ্কার করে, ত্বকের প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা কেড়ে নেয় না এবং কোষের পুনর্গঠনে সহায়তা করে ত্বকের যাবতীয় সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।

চামড়া ওঠার সমস্যা এই সমস্যায় পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার কতটা উপকারী তা নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে। উত্তর হচ্ছে- হ্যাঁ এবং না।

ডা. সেঠি বলেন, পেট্রোলিয়াম জেলি সাময়িকভাবে চামড়া ওঠার সমস্যা বন্ধ করে। কারণ এটা ত্বকের ওপর এক ধরনের সুরক্ষার স্তর দেয়। চামড়া ওঠার সমস্যায় এমন পণ্য ব্যবহার করতে হয় যা ত্বকের ভেতর ঢুকে পুর্গঠনে সহায়তা করে।

তাই ডা. সেঠি পরামর্শ দেন, ভেতর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ত্বক সেরে ওঠার ক্ষেত্রে ওপরে সুরক্ষার স্তর হিসেবে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করা উপকারী।

নয়াশতাব্দী/এফআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ