ঢাকা, শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২ জিলকদ ১৪৪৫

শেরপুরে খেজুর রসের টানে, ভিড় গাছির বাড়ির পানে

প্রকাশনার সময়: ২৯ ডিসেম্বর ২০২২, ১৫:১৩ | আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২২, ১৫:২১

খেজুরের রস-গুড়ের জন্য দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোর খ্যাতি থাকলেও সীমান্তবর্তী জেলা শেরপুরে খেজুরের চাষ হয় না তেমন। ফলে খেজুরের রসও এখানে দুর্লভ। তবে এবার শেরপুরে মিলছে খেজুরের টাটকা রস। আর এই রস পান করতে ভোর থেকে আগ্রহীরা ভিড় জমাচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শত শত মানুষ ভিড় করে খেজুরের টাটকা রস কিনছেন। খেজুরের রসের এমন বিকিকিনি চলায় পুরো এলাকা এখন ভোরবেলা সরব থাকে।

জানা যায়, জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার মধুটিলা যাওয়ার পথে সড়কের দুধারে দেখা মিলবে এসব খেজুর গাছের সারি। পরিচর্যার ফলে ওই গাছগুলোতে এবার মিলছে টাটকা রস। রসের খবর ছড়িয়ে পড়েছে পুরো জেলাজুড়ে। ফলে টাটকা খেজুরের রস পান করতে ভোর থেকে পিপাসুরা ছুটে আসছেন ওই এলাকায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রথম দিন রস সংগ্রহ করার খবর পাওয়ায় পরদিন থেকে শহরসহ দূর দূরান্তের মানুষ ভোর ৫টা থেকে ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করে রস কিনছে। প্রতি লিটার ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক গ্লাস রস খুচরা ১০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে।

ভোরবেলা মোটরসাইকেলে কুমিল্লা শহর থেকে কয়েকজন বন্ধু নিয়ে রস খেতে এসেছেন তামজিদ, সম্রাট ও ফাহিম। তারা জানান, কোনো দিন খেজুরের টাটকা রস দেখিনি, খাইওনি। লোক মারফতে জেনে আজ খেতে এলাম। অনেক ভালো লেগেছে। ভোরে সদর উপজেলার পৌর শহরের মোবারকপুর মহল্লা থেকে কয়েকজন বন্ধু নিয়ে রস পান করতে এসেছেন মেহেদী হাসান হৃদয়। তিনি বলেন, খেজুর রসের কথা অনেক শুনেছি। কিন্তু কোনো দিন গাছ থেকে নামানো টাটকা রস পান করিনি। ফেসবুকে দেখলাম এখানে খেজুরের রস পাওয়া যায়। তাই আজ বন্ধুদের নিয়ে পান করতে আসলাম। তারা আরও জানান, নির্ভেজাল রসের চাহিদা বেশি হওয়ায় দামও ভালো পেয়েছি। ক্রেতাদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। নিপাহ ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে কলসীর মুখে জাল বেঁধে দেই। এতে করে বাদুড়সহ যেকোনও পাখি সেই গাছের রস পানে বাধা পায়।

স্থানীয়রা জানান, এখানকার গাছ থেকে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ লিটার রস পাওয়া যায়। একটি গাছ থেকে দুই দিন পরপর রস সংগ্রহ করা হয়। মাটির হাঁড়ি ও প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হয়। প্রতি গ্লাস খেজুরের রস ১০ টাকা করে বিক্রি করা হয়।

খেজুরের রস বিক্রেতা আক্কাছ আলী বলেন, এখানে বেশ কিছু খেজুরগাছ রয়েছে। এরমধ্যে সবগুলো থেকে রস নামানো যায় না। তেমন একটা লাভ না হলেও এটা একটা সৌখিনতা। লোকজন আসে, ভালো লাগে।

তিনি আরও বলেন, আমরা নিপা ভাইরাস সম্পর্কেও অবগত আছি। তাই রস সংগ্রহের পাত্র যতোটা সম্ভব নেট দিয়ে ঢেকে রাখি এবং রাতে পাহারার ব্যবস্থা করি।

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সুলতান আহম্মেদ বলেন, শেরপুর অঞ্চলের কৃষকদের খেজুর গাছ চাষের প্রবণতা কম। সাধারণত দেশের উত্তরাঞ্চলের কৃষকরা বেশি খেজুরের চাষ করেন। পর্যাপ্ত রোদ, কম আর্দ্রতা, কম বৃষ্টিপাত এবং উষ্ণ আবহাওয়ায় চাষের জন্য উপযোগী।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ