ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

৩ কোটি টাকা মূল্যের অডিটোরিয়াম এখন ভুতুড়ে ঘর

প্রকাশনার সময়: ২৮ ডিসেম্বর ২০২২, ১৮:৪১ | আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২২, ২০:০৩

কক্সবাজারের পেকুয়ায় সুষ্ঠু তদারকির অভাবে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকা মূল্যের পেকুয়ার বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট (বিএমআই) অডিটোরিয়াম ভবন ও অত্যাধুনিক মূল্যবান জিনিস সামগ্রী। একমাত্র এই অডিটোরিয়াম অব্যবস্থাপনা ও সুষ্ঠু তদারকির অভাবে বর্তমানে ভুতুড়ে ঘরে পরিণত হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় তিন ফুট ময়লা-আবর্জনার নিচে তলিয়ে গেছে অডিটোরিয়ামের ফ্লোর। ফ্লোরে জমে আছে হাঁটু পরিমাণ ময়লা পানি। অধিকাংশ ফ্যান ও চেয়ার ভাঙ্গা। হদিস নেই লাইট ও সাউন্ড সিস্টেমের। দরজা নেই বললেই চলে। প্রায় সবকটি জানালার কাচ ভাঙ্গা। ছাদের একটি অংশ ভেঙে সূর্যের আলো প্রবেশ করাতে খসে পড়া প্লাস্টার ও দেয়ালের ফাটল দৃশ্যমান।

তথ্য সংগ্রহে জানা যায়, পেকুয়া বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট (বিএমআই) এর পাশে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত অডিটোরিয়ামটির ২০০৩ সালের ২০ মার্চ কাজ শুরু হয়। এর পরের একই বছরের ১৮ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করেন তৎকালীন সরকারের যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাউদ্দিন আহমদ। শুরুর কয়েক বছর অডিটোরিয়ামটির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা থাকলেও পরবর্তী সময়ে তা ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে পেকুয়া উপজেলা প্রশাসনের তদারকিতে থাকা অডিটোরিয়ামটি হাতবদল হয়ে বর্তমানে পেকুয়া বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউট’র তদারকিতে আসলেও তারা এ বেহাল দশার দায় নিতে অনিচ্ছুক।

পেকুয়া বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট’র অধ্যক্ষ এ এম ফরিদুল আলম চৌধুরী বলেন, অডিটরিয়ামটি আমাদের তদারকিতে আসার আগে থেকে এই বেহাল অবস্থায় ছিলো। ২০১৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আনসার সদস্যরা এখানে বসবাস শুরু করে। তারা যাওয়ার আগে অডিটোরিয়ামকে গোয়াল ঘরে পরিণত করে। এটি সংস্কারের উদ্যোগ নিতে প্রধান নির্বাহী প্রকৌশল অধিদফতরসহ ও বিভিন্ন দফতরে লিখিত আবেদন করেও কোন সুরাহা মেলেনি। আমি এ বিষয়ে চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সাংসদ জাফর আলমের সহযোগিতা কামনা করছি।

২০০৯ সালের আগে ৬০০ আসনের এই অডিটোরিয়ামটি মুখর ছিল বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মকাণ্ডে। নিয়মিত চলতো বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এনজিও সংস্থার সভা, সেমিনার। বাংলাদেশ টেলিভিশনের অনেক অনুষ্ঠানও ধারণ করা হয়েছে এই অডিটরিয়াম থেকে। চোখের সামনে সংস্কৃতির এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নষ্ট হয়ে যাওয়াতে হতাশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা।

সাংস্কৃতিককর্মী ইমরান হোছাইন বলেন, অডিটোরিয়ামটি উদ্বোধনের পর পেকুয়ার সাংস্কৃতিক অঙ্গন বিকাশের একটি দ্বার উন্মোচিত হয়েছিলো। কিন্তু এভাবে অযত্ন-অবহেলায় এটি নষ্ট হয়ে যাওয়া পেকুয়াবাসীর জন্য খুবই হতাশাজনক।

সাংস্কৃতিককর্মী পারভেজ বলেন, সাংস্কৃতিক ও বিনোদন জগতের একমাত্র উপযোগী স্থান এই অডিটোরিয়াম। এটি রক্ষা করতে না পারলে চরম ক্ষতির মুখে পড়বে বিনোদন জগৎ।

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমা বলেন, বিএমআই এর অধীনে একটি অকেজো অবস্থায় অডিটোরিয়াম রয়েছে সেটা আমি শুনেছি। অডিটরিয়ামটি সালাহ উদ্দিন সাহেব করেছিল। ওই অডিটরিয়ামটি সংস্কার করার আমার আপাতত কোনো পরিকল্পনা নেই।

নয়াশতাব্দী/জেডএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ