জাতীয় প্রেস ক্লাব এলাকায় গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও ব্যবসায়ী মো: আনিসুর রহমানকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন।
তিনি বলেন, দগ্ধ কাজী আনিসের অবস্থা ভেরি ক্রিটিক্যাল। তার শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে। বর্তমানে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে।
এর আগে বিকেলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার ঘটনার ব্যাপারে নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, বেলা ১১টার দিকে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী আনিস কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার পানতি গ্রামের বাসিন্দা।
মো. আলী নামে এক ব্যক্তি জানান, আনিস গত ২ মাস আগে একটি কোম্পানির কাছে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা পাওনার দাবি নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একটি মানববন্ধন করেছিলেন। আজ হঠাৎ প্রেস ক্লাবের সামনে এসে নিজের শরীরে আগুন দেন।
এদিকে দগ্ধ গাজী আনিসের পরিচিত তুহিন নামে এক ব্যক্তি মোবাইলের মাধ্যমে জানান, ব্যবসার জন্য বেশ কয়েক বছর আগে একটি কোম্পানির মালিকের স্ত্রীকে এক কোটি ২৬ লাখ টাকা দেন আনিস। এই টাকা ফিরে পাওয়ার জন্য তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবের তিনতলায় সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন গত মে মাসের দিকে।
আনিসের ভাই নজরুল ইসলাম জানান, তাদের বাবার নাম মৃত ইব্রাহীম হোসেন বিশ্বাস। ৯১-৯৫ সাল পর্যন্ত তিনি কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। তার স্ত্রী স্বপ্না। ৩ মেয়ের জনক তিনি। ব্যবসার পাশাপাশি চাকরিও করতেন তিনি। ওই কোম্পানির কাছে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা পান। এজন্য কয়েক দফায় সংবাদ সম্মেলনও করেছেন। কিন্তু টাকা না পাওয়ায় তিনি আজ এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।
মে মাসে সংবাদ সম্মেলনে যা বলেছিলেন আনিস
আনিস বলেন, ২০১৬ সালে হেনোলাক্স গ্রুপের কর্ণধার মো. নুরুল আমিন ও তার স্ত্রী ফাতেমা আমিনের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে তাদের সাথে আমার সখ্যতা ও আন্তরিকতা গড়ে ওঠে। ২০১৮ সালে কলকাতায় হোটেল বালাজিতে একইসঙ্গে অবস্থানকালে তারা আমাকে হেনোলাক্স গ্রুপে বিনিয়োগ করে যথেষ্ট লাভবান হওয়ার সুযোগ আছে বলে জানান। আমি প্রথমে অসম্মতি জ্ঞাপন করলেও পরে রাজি হই। প্রাথমিকভাবে এক কোটি টাকা বিনিয়োগ করি আমি। পরে আরও ২৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করি। অধিকাংশ টাকা ঋণ হিসেবে আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধবের কাছ থেকে নেওয়া।
তিনি বলেন, বিনিয়োগ করার সময় পরস্পরের প্রতি সম্মান ও বিশ্বাসের কারণে এবং তাদের অনুরোধে চূড়ান্ত রেজিস্ট্রি চুক্তি করা হয়নি, তবে প্রাথমিক চুক্তি করা হয়েছে। বিনিয়োগ পরবর্তী চূড়ান্ত রেজিস্ট্রি চুক্তিপত্র সম্পাদন করার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও তারা গড়িমসি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তারা প্রতিমাসে যে লভ্যাংশ প্রদান করতেন সেটাও বন্ধ করে দেন এবং কয়েকবার তাদের লোকজন দিয়ে আমাকে হেনস্তা ও ব্ল্যাকমেইল করেন। বর্তমানে তাদের কাছে লভ্যাংশসহ আমার ন্যায্য পাওনা তিন কোটি টাকার বেশি। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া আদালতে আমি তাদের আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করেছি, যা বিচারাধীন।
নয়া শতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ