ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

রমজানে অভ্যস্ত হোন তাহাজ্জুদে

প্রকাশনার সময়: ১৯ মার্চ ২০২৪, ১০:৫৩

আল্লাহতায়ালা তাঁর বান্দাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ইবাদত প্রবর্তন করেছেন। এতে করে তারা যেমন বহুমুখী ইবাদত করে বেশি বেশি পুণ্য অর্জন করবে, তেমনি এক প্রকারের ইবাদতে একঘেয়েমি লাগলে অন্য ধরনের ইবাদতে সাগ্রহে মনোনিবেশ করতে পারবে।

এসব ইবাদতের মধ্যে কিছু রয়েছে ফরয যাতে কোনো প্রকার কমতি বা ত্রুটি করা যাবে না। আবার কিছু রয়েছে সুন্নত-নফল যা ফরজে পরিপূর্ণতা ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সহায়ক।

এসব ইবাদতের মধ্যে অন্যতম হলো নামাজ। আল্লাহ বান্দাদের ওপর দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। যা কার্যত পাঁচ হলেও মিজানের পাল্লায় পঞ্চাশ। আল্লাহ নফল নামাজকে ফরজ নামাজের ক্ষতিপূরণ এবং তার নৈকট্য লাভের মাধ্যম স্থির করেছেন।

এসব সুন্নত-নফলের মধ্যে রয়েছে— কিছু সুন্নাত নামাজ, যা ফরজ নামাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। যেমন, ফজরের ফরজ নামাজের পূর্বে দু’রাকাত, জোহরের ফরজের পূর্বে চার রাকাত ও পরে দু’রাকাত। মাগরিবের ফরজের পর দু’রাকাত ও এশার ফরজের পর দু’রাকাত। আর নফল নামাজের অন্যতম হলো কিয়ামুল লাইল (রাতের নামাজ বা তাহাজ্জুদ)।

তাহাজ্জুদ নামাজ একটি বরকতময় নফল নামাজ। এ নামাজ সাধারণত আমরা রাতের শেষভাগে পড়ে থাকি। তাহাজ্জুদ নামাজের আল্লাহর কাছে একতা আলাদা গ্রহণযোগ্যতা আছে। এ নামাজ পড়ে আপনি আল্লাহর কাছে যা চাবেন আল্লাহ তাই দেবেন। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘আর রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ পড়বে। এটা তোমার অতিরিক্ত দায়িত্ব। অচিরেই তোমার রব তোমাকে প্রশংসিত স্থানে প্রতিষ্ঠিত করবেন।’ (সুরা বনি ইসরাঈল: ৭৯)

তাহাজ্জুদ নামাজ ওলি বা আল্লাহর প্রিয়দের বৈশিষ্ট্য। তাহাজ্জুদ আদায়কারীদের প্রশংসা করে আল্লাহ বলেন, ‘আর যারা তাদের রবের জন্য সিজদারত ও দণ্ডায়মান হয়ে রাত্রি যাপন করে।’ (সূরা ফুরকান: ৬৩)। আল্লাহ আরও বলেন, ‘তাদের পার্শ্ব দেশ বিছানা থেকে আলাদা হয়। তারা ভয় ও আশা নিয়ে তাদের রবকে ডাকে। আর আমি তাদের যে রিজিক দান করেছি, তা থেকে তারা ব্যয় করে। অতঃপর কোনো ব্যক্তি জানে না তাদের জন্য চোখ জুড়ানো কী জিনিস লুকিয়ে রাখা হয়েছে, তারা যা করত, তার বিনিময় স্বরূপ।’ (সূরা সিজদা: ১৬-১৭)।

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ফরজ নামাজের পর অধিক ফজিলতপূর্ণ হলো রাতের নামাজ।’ (মুসলিম: ১১৬৫)। অন্য হাদিসে তিনি বলেন, ‘হে লোকসব! সালামের প্রসার ঘটাও, গরিব-দুঃখীদের খাদ্য দান কর, আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখ, রাতে যখন মানুষ ঘুমিয়ে থাকে, তখন নামাজ আদায় কর, তাহলে নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (তিরমিজি: ২৪৫৮)।

তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার ইচ্ছা-আগ্রহ প্রায় সব মোমিনের হূদয়েই সুপ্ত থাকে। কর্মব্যস্ত জীবনে শেষ রাতে ঘুম থেকে ওঠার সুযোগ হয় না বলে তা পড়তে পারেন না। রমজানে সাহরির জন্য সবাইকে যেহেতু শেষ রাতে জাগতেই হয়, তাই রমজান মাস তাহাজ্জুদে অভ্যস্ত হওয়ার জন্য সুবর্ণ সুযোগ।

প্রতিদিন সাহরির কয়েক মিনিট আগে উঠে অজু করে মাত্র দু’রাকাত নামাজ পড়েও আমরা তাহাজ্জুদের অশেষ সাওয়াব পেতে পারি। দুই রাকাত চার রাকাত যতটুকু পারেন পড়ুন। তারপর নীরবে প্রাণ খুলে কয়েক মিনিট আল্লাহকে ডাকুন। তারপর মসজিদে গিয়ে ফজর পড়ুন। দেখবেন আপনার জীবনে অন্য রকম পরিবর্তন ও প্রশান্তির ঝিরিঝিরি হাওয়া বইতে শুরু করেছে।

নয়া শতাব্দী/আরজে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ