ঢাকা, রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫
ফ্রিল্যান্সিং ‘ফাঁদে’ তরুণীরা

হুজুগে গা ভাসানো যাবে না

প্রকাশনার সময়: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৪৬

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত করতে চেয়েছেন গতিময় একটি জীবন উপহার দেয়ার জন্য। যাতে এদেশের মানুষ ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় জীবনে বহির্বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সমান তালে এগিয়ে যেতে পারে। তবে সব ইতিবাচক পদক্ষেপকে নেতিবাচকভাবে ব্যবহার করার জন্য সমাজে একটি দুষ্টচক্র সব সময়ই কাজ করে। একইভাবে তারা ফেসবুকের মতো একটি জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যমকেও নেতিবাচকভাবে ব্যবহার করে অনেকের চরম বিপদের কারণ ঘটিয়ে যাচ্ছে।

বর্তমান সময়টাকে আমরা প্রযুক্তি এবং আধুনিক যুগ বলি। প্রধানমন্ত্রী সময়ের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ করে তুলতে চান। স্মার্ট বাংলাদেশে কাউকে অলস বা বেকার বসে থাকা যাবে না। প্রত্যেককে যার যার শিক্ষা, বুদ্ধি, দক্ষতা এবং দুরদর্শিতা অনুযায়ী কাজ করে যেতে হবে। চাকরি বা বাণিজ্য ছাড়াও আজকাল বহু অপশন রয়েছে যেখানে যে কেউ ইচ্ছে করলেই আয় করতে পারবে। অনেক তরুণ-তরুণী আছে যারা তাদের মেধা, বৃদ্ধি সৃজনশীলতার মাধ্যমে নানা ধরনের কন্টেন্ট তৈরি করেন এবং তা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ করে আয় করতে থাকেন। তবে সব ক্ষেত্রেই যে আয় করা সহজ তা নয়। অনেকেই এটিকে কেন্দ্র করে প্রতারণার ফাঁদও পেতেছে। তারা ফ্রিল্যান্স কাজ করে আয়ের লোভ দেখিয়ে নানাভাবে ফাঁদে ফেলে তরুণীদের বিপদে ঠেলে দিচ্ছে।

১৩ সেপ্টেম্বর নয়া শতাব্দীতে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে জ্যামিতিক হারে বেড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ইন্টারনেটের ব্যবহার। আর এ সুযোগে অনলাইনে পরিচয়ের সূত্র ধরে ফ্রিল্যান্সিং কাজের লোভ দেখিয়ে ভিডিও কলে কথোপকথন ও পরে আপত্তিকর মুহূর্তের ভিডিও রেকর্ড করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এক শ্রেণির প্রতারক। ফ্রিল্যান্সিংয়ের কথা বলে স্ক্রিন রেকর্ডারের মাধ্যমে শত শত নারীকে ফাঁদে ফেলা এমন এক প্রতারককে গ্রেপ্তারের পরে এ বিষয়ে জানতে পেরেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ। ডিবি জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে আপত্তিকর মুহূর্তের ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টাকার প্রতি মাত্রাতিরিক্ত লোভ ও স্মার্টফোনের যথাযথ ব্যবহার না জানায় এমন প্রতারণার শিকার হচ্ছেন তরুণীরা।

এক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার একটি বিষয় রয়েছে। সন্তানের হাতে স্মার্টফোন তুলে দিয়ে তারা আর খোঁজ রাখেন না কীভাবে এর ব্যবহার হচ্ছে। তার চেয়েও বড় কথা- সন্তানকে নীতি, আদর্শের শিক্ষা দিন। সীমা শেখান। তাকে কোথায় কতটুকু অগ্রসর হতে হবে সে সম্পর্কে ধারণা দিন। ফেসবুকে কারও সঙ্গে পরিচয় হলেই তা এমন পর্যায়ে কেন যাবে যা পরবর্তীতে বিপদ ডেকে আনবে? আজকাল প্রতারকদের নানা ফাঁদ বা কৌশল সম্পর্কে বিভিন্ন মাধ্যমে নানা রকম সতর্কতামূলক বার্তা দেয়া হচ্ছে। সেগুলো সম্পর্কে জানতে হবে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের সাইবার অপরাধ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত চার বছরে সাইবার ক্রাইম ইউনিটে প্রায় পাঁচ হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে কেবল গত ছয় মাসে প্রায় ২ হাজার লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। এতে তদন্তে নেমে হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশকে।

প্রতারকদের কবল থেকে নিরাপদ থাকতে হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বল্প সময়ের পরিচয়ে কারও সঙ্গে গভীর সম্পর্ক স্থাপন থেকে বিরত থাকা, যার-তার বন্ধুত্বের আবেদন গ্রহণ না করা, অনলাইনে কাউকে নিজের ছবি বা ভিডিও না পাঠানো এবং আপত্তিকর অবস্থায় ভিডিও কলে কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে। এরপরেও যদি কেউ ব্লাকমেইলের শিকার হয়, তাহলে পুলিশের সাইবার বিভাগে যোগাযোগ করতে হবে।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ