ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ৭ জিলকদ ১৪৪৫

শেখ হাসিনার অর্জন, বাংলাদেশও গৌরবের অংশীদার

প্রকাশনার সময়: ২৯ ডিসেম্বর ২০২২, ১৫:৩২

বাংলাদেশে গণতন্ত্রের লড়াই চালিয়ে মার্কিন অর্থ ও বাণিজ্যবিষয়ক সাময়িকী ফোর্বসের প্রভাবশালী নারীর তালিকায় টানা তৃতীয়বারের মতো উঠেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম। ২০২২ সালের বিশ্বের প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ৪২তম স্থানে রয়েছেন। এর আগে, গত বছর এই তালিকায় ৪৩তম স্থানে ছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। এ বছর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানের একধাপ উন্নতি ঘটেছে। তার আগের বছর ২০২০ সালে ফোর্বসের এই তালিকায় তিনি ছিলেন ৩৯তম স্থানে। শেখ হাসিনার এ অর্জন শুরু তার একার নয়, বাংলাদেশও গৌরবের অংশীদার।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাময়িকী ফরচুনের করা বিশ্বের প্রভাবশালী শীর্ষনেতাদের তালিকায় স্থান পেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তাছাড়া প্রভাবশালীদের তালিকায় তাকে রেখেছিল টাইম ম্যাগাজিনও। সম্প্রতি প্রকাশিত ফোর্বসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনীতির ক্ষেত্রে জিডিপি-জনসংখ্যার বিষয় ও করপোরেট নেতাদের ক্ষেত্রে আয় ও কর্মীদের বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। মূলত বিদ্যমান অবস্থার সঙ্গে যারা লড়াই করছেন তাদের গুরুত্ব দেয়া হয়েছে এ তালিকায়।

প্রধানমস্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বর্তমান বিশ্বে উল্লেখযোগ্য অবস্থানের দিকে এগিয়ে চলেছে। উন্নত বিশ্ব থেকে শুরু করে উন্নয়নশীল দেশগুলো বাংলাদেশ এবং দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির স্বীকৃতি দিচ্ছে। বর্তমান বাংলাদেশের প্রতিটি খাতভিত্তিক দৃশ্যমান অগ্রগতির তথ্য যথাযথ নেতৃত্বকে নির্দেশ করে। একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, একটি দেশের অগ্রগতি তথা উন্নয়নের প্রামাণ্যে খাতভিত্তিক অগ্রগতির তথ্য সহায়ক প্রমাণ হিসেবে গৃহীত হয়। আর সেই আলোকে বাংলাদেশের বর্তমান বিভিন্ন খাতভিত্তিক অগ্রগতির তথ্যে দেখা যায়, জাতীয় প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু গড় আয়, জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ কৃষি খাত, শিল্প খাত, বিভিন্ন উৎপাদন খাত, বিদ্যুৎ খাত, শিক্ষা খাত, স্বাস্থ্য খাত, সেবা খাত, সামাজিক নিরাপত্তা খাত, দুর্যোগ প্রতিরোধ খাত, গড় আয়ু বৃদ্ধি, অবকাঠামোগত খাত, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, রফতানি, রিজার্ভ বৃদ্ধিসহ সব অর্থনৈতিক সূচকে বাংলাদেশের অভাবনীয় অগ্রগতি নির্দেশ করে যোগ্য নেতৃত্বকে। আর এই যোগ্য নেতৃত্ব সামনে থেকে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শত সংগ্রাম আর ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে হচ্ছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে। অসংখ্যবার মৃত্যুঝুঁকি সামলিয়ে অকুতোভয় দৃঢ়চিত্তে এগিয়ে চলেছেন শেখ হাসিনা। যার বুদ্ধিদীপ্ত চিন্তা-চেতনা বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পরিচিত করে তুলেছে ইমার্জিং টাইগার হিসেবে। ফলে স্বীকৃতি লাভ করেছেন, পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। শেখ হাসিনা অর্জন করেছেন অগণিত আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। এর মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামের সংঘাত অবসানের জন্য অসামান্য অবদানে শেখ হাসিনাকে ১৯৯৮ সালে ইউনেসকো Houphouet-Boigny শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করে। এছাড়াও মানবাধিকার, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা সাহসিকতা এবং দৃঢ়চিত্তের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের র‍্যানডল্ফ ম্যাকন উইমেন্স কলেজ ২০০০ সালে তাকে Pearl S. Buck-99 পুরস্কার দেয়। জাতিসংঘের বিশ্বখাদ্য কর্মসূচি ক্ষুধার বিরুদ্ধে আন্দোলনের অবদানের জন্য শেখ হাসিনাকে সেরেস মেডেল দেয়া হয়। এছাড়া ১৯৯৮ সালে শেখ হাসিনাকে ‘মাদার তেরেসা’ পদক প্রদান করে সর্বভারতীয় শান্তি সংঘ থেকে। আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় পর্যায়ে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ শেখ হাসিনা ভূষিত হয়েছেন অসংখ্য পুরস্কারে। যেমন: বাংলাদেশের করোনা টিকাদানসহ অন্যান্য টিকাদান কর্মসূচির সাফল্যের জন্য গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইউমিনাইজেশন— প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ সম্মাননায় ভূষিত করে। তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক তহবিল ইউনিসেফ শেখ হাসিনাকে ‘চ্যাম্পিয়ন অব স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফর ইয়ুথ’ সম্মাননা প্রদান করে। বাংলাদেশের কৃষি খাতের সার্বিক উন্নয়নে প্রতিনিয়ত সহযোগিতা, খাদ্যোৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি উন্নয়নে অবদানের জন্য ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় শেখ হাসিনাকে সম্মাননা সনদ প্রদান করে।

২০১৫ সালে জাতিসংঘ পরিবেশ উন্নয়ন কর্মসূচি শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পরিবেশ এবং টেকসই উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য লিডারশিপ ক্যাটাগরিতে ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ ২০১৫’ পুরস্কার প্রদান করে। পাশাপাশি টেকসই ডিজিটাল কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ‘International Telecommunication Union (ITU)’ শেখ হাসিনাকে ICTs in Sustainable Development Award-2015 প্রদান করে।

পিপলস অ্যান্ড পলিটিকস বিশ্বের পাঁচজন সৎ সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত করেছেন যাদের মধ্যে শেখ হাসিনা একজন। যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ নেই, বিদেশে কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই, এমনকি নেই প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ। এছাড়া মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে যে মানবতার দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন শেখ হাসিনা এজন্য তিনি ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ সম্মান অর্জন করেছেন আন্তর্জাতিক মহলে।

পাশাপাশি জাতিসংঘের মিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল অ্যাওয়ার্ড, কালচারাল ডাইভারসিটি অ্যাওয়ার্ড, গ্লোবাল ডাইভারসিটি অ্যাওয়ার্ড, ইন্দিরা গান্ধী শান্তি পদক, ডক্টরস অব হিউম্যান লেটার্স, ‘নেতাজি মেমোরিয়াল’ পদকসহ অসংখ্য আন্তর্জাতিক সম্মাননা পেয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়, জাপানের ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়, ভারতের বিশ্বভারতি ও ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়, অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, রাশিয়ার স্টেট ইউনিভার্সিটি অব পিটার্সবাগসহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয় শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দিয়েছে।

ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি ও সমুদ্রবক্ষে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ব্লু ইকোনমির নতুন দিগন্ত উন্মোচন হয়েছে। ভারতের সঙ্গে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন ও ছিটমহল বিনিময়, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট সফল উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে মহাকাশ বিজয়, সাবমেরিন যুগে বাংলাদেশের প্রবেশ, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, দেশের প্রথম মেট্রোরেল চালু, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মহাসড়কগুলো চার লেনে উন্নীত করা, এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন ও মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮২৪ ডলারে উন্নীতকরণ।

এসব অর্জনে একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, শেখ হাসিনার রাষ্ট্রপরিচালনায় দক্ষতা এবং তার নেতৃত্ব তাকে অবিসংবাদিত জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক নেতায় পরিণত করেছে।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ