ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

মাটি ছাড়াই নার্সারিতে চারা উৎপাদন

প্রকাশনার সময়: ১৮ ডিসেম্বর ২০২২, ২০:০৭

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে নার্সারিতে মাটি ছাড়াই উন্নতজাতের সবজির চারা উৎপাদন করে সফলতা পেয়েছেন প্রবাসফেরত শহীদুল ইসলাম (৩২)। চারা উৎপাদনের এই আধুনিক পদ্ধতিতে মাটির পরিবর্তে ব্যবহার করা হয় কোকোপিট ও প্লাস্টিকের ট্রে। শহীদুলের বাড়ি উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের চরশ্রীরামপুর গ্রামে। বাড়ির পাশে নন্দীগ্রামে দেড়কাঠা জমি ভাড়া নিয়ে শেডনেট দিয়ে নার্সারি করে মাটি ছাড়াই পেঁপে, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মরিচ, বেগুন ও টমেটোর চারা উৎপাদন করে বিক্রি করছেন।

জানা গেছে, অভাবের তাড়নায় শহীদুলের পড়াশোনা হয়নি। জীবিকার তাগিদে ছোটবেলায় দর্জি কাজে যোগ দেন। ভাগ্যবদলের আশায় ২০১৭ সালে পাড়ি জমান মরিসাসে। ২০২০ সালে করোনা পরিস্থিতিতে দেশে ফিরে পরের বছর পাড়ি জমান দুবাইয়ে। কিন্তু সেখানে স্থায়ী হতে না পেরে দেশে চলতি বছরের জুন মাসে দেশে ফিরে আধুনিক নার্সারির উদ্যোগ নেন। শহীদুল বলেন, প্রবাসে থাকাকালীন সময়ে মাটি ছাড়া চারা উৎপাদনের বিষয়টি দেখে উদ্বুদ্ধ হই। পরে দেশে ফিরে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুমন দার পরামর্শ চাইলে তিনি বগুড়া থেকে বীজ চারা উৎপাদনের অন্যান্য উপকরণ সংগ্রহ করে দেয়। পরে নার্সারিতে চারা উৎপাদানের কাজ শুরু করি।

চলতি বছরের জুলাই মাসে ৩০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ভাড়া জমিতে নেটশেড তৈরি করে চারা উৎপাদন শুরু করেন শহীদুল। তার এখানে পেঁপে, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মরিচ, বেগুন ও টমেটোর চারা উৎপাদন হয়। প্রতি পিস পেঁপে চারা ৪৫ টাকা ও অন্যান্য সবজির চারা প্রতি পিস ২ টাকা দরে বিক্রি হয়। ইতোমধ্যে ৩০ হাজার টাকা চারা বিক্রি করেছেন। নার্সারিতে বিক্রির জন্য আরো প্রায় ২৫ হাজার টাকার চারা রয়েছে। সেগুলো দ্রুত বিক্রি হবে বলে আশা করছেন শহীদুল। মাটি ছারা চারা উৎপাদনের জন্য নারিকেলের ছোবরা ও ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করে তৈরি করা হয় কোকোপিট। পরিমাণমত সেগুলো গুড়ো করে ট্রে ও গ্লাসে দিয়ে বীজ বপণ করা হয়। তিনদিনের মধ্যে বীজ থেকে অঙ্কুর বের হয়। ১৫ দিন থেকে বিক্রির উপযোগী হয়।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র সরকার বলেন, প্রবাসফেরত শহীদুল এই উপজেলায় প্রথম মাটিবিহীন চারা উৎপাদনের নার্সারি করে সফলতা পেয়েছে। আমরা তাকে প্রথম থেকেই পরামর্শ ও সহযোগিতা করার পাশাপাশি সার্বিক যোগাযোগ রাখছি। তার সাফল্য দেখে অন্যান্য কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার লুৎফুন্নাহার লিপি বলেন, আধুনিক এই পদ্ধতিতে অল্প জমিতে স্বল্প খরচে গুণগত মানসম্পন্ন অধিক চারা উৎপাদন করে কৃষক লাভবান হয়। চারা সম্পূর্ণ মাটিবিহীন উৎপাদন হওয়ায় মাটিবাহিত কোনো রোগ হয় না। চারা নেটশেডে ঢাকা থাকায় পর্যাপ্ত আলো বাতাস প্রবেশ নিশ্চিত হয় ও ক্ষতিকারক পোকামাকড় থেকে সবজি চারা রক্ষা পায়।

নয়াশতাব্দী/এফআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ