ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ৭ জিলকদ ১৪৪৫

পবিপ্রবিতে অনুমোদনহীন নিয়োগের পাঁয়তারা, প্রশ্নবিদ্ধ প্রশাসন

প্রকাশনার সময়: ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ১৬:৪৭

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন নেই, তবু্ও বিতর্কিত নিয়োগের পথেই হাঁটছে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) প্রশাসন। ইউজিসির নিয়মকে তোয়াক্কা না করেই বিশ্ববিদ্যালয়টির পোস্ট হারভেস্ট টেকনোলজি অ্যান্ড মার্কেটিং বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের অপচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।

এর আগে ২০২২ সালের ২৬ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে প্রভাষক নিয়োগের এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে ইউজিসির অনুমোদন না নিয়ে পোস্ট হারভেস্ট টেকনোলজি অ্যান্ড মার্কেটিং বিভাগে প্রভাষক পদে প্রার্থীদের আবেদন চাইলে সমালোচনার মুখে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সমালোচনার জের ধরে নানা চাপে ওই পদের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রশাসন।

এসব বিতর্ক থাকলেও নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করেই সম্প্রতি অনুমোদনহীন এই পদের জন্য ভাইভা কার্ড প্রদান করেছে পবিপ্রবি প্রশাসন।

নিয়োগ স্থগিত করেও ফের অনুমোদনহীন পদে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে প্রশাসনের এমন তোড়জোড়কে বিতর্কিত কর্মকাণ্ড হিসেবেই বিবেচনা করছেন সচেতন মহল। গুঞ্জন উঠেছে উল্লিখিত পদে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এক সভাপতির স্ত্রীকে নিয়োগ দেওয়ার লক্ষ্যেই ইউজিসির নিয়মকে তোয়াক্কা করছেন না প্রশাসন।

ইউজিসির অনুমোদন নিয়ে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সুযোগ থাকলেও নির্দিষ্ট প্রার্থীকে সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে সেই নীতিতে হাঁটেনি প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা। নিয়ম মেনে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলে কাঙ্ক্ষিত প্রার্থীকে সুবিধা দিতে পারবে না বলেই এমন সিদ্বান্ত নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে প্রকাশিত পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক নিয়োগের যোগ্যতা নির্ধারণের নীতিমালা অনুসারে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে হলে প্রার্থীকে স্ব-স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে একই শিক্ষাবর্ষের সর্বোচ্চ ফলাফলধারী শতকরা ৭ জনের মধ্যে থাকতে হবে। প্রশাসনের তথাকথিত কাঙ্ক্ষিত প্রার্থী মেধাক্রমে শতকরা ৭জনের মধ্যে নেই বলে প্রশাসন এমন বিতর্কিত নিয়োগের আশ্রয় নিচ্ছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের। তাছাড়া প্রভাষক নিয়োগের ক্ষেত্রে অনুষদীয় ডিন ও বিভাগীয় চেয়ারম্যানের মতামত গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করা হয় ওই নীতিমালায়। কিন্ত এ নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভাগ সংশ্লিষ্ট কারো মতামত নেওয়া হয়নি বলে অনুসন্ধানে জানা যায়।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক জেহাদ পারভেজ জানান, ‘প্রশাসনের অনুমোদনহীন নিয়োগের বিষয়টি আমরা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় উত্থাপন করব। সকলের মতামতের ভিত্তিতে বিষয়টি নিয়ে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অ.দা.) অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু সাংবাদিকদের জানান, ‘ওই বিভাগে কেবল একজন শিক্ষক রয়েছেন, একজনের মাধ্যমে অনুষদের ১৮ ক্রেডিট কোর্স সম্পন্ন করা কিছুটা দুরূহ। প্রশাসন এ জটিলতা কাটানোর চেষ্টা করছে। তবে নিয়োগের বিষয়টি সম্পূর্ণ নিয়োগ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হবে।’ তবে ইউজিসির অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও এ নিয়োগের কোনো বৈধতা আছে কি না? এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্তের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, ‘ওই বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের অনুমোদন আছে কি না সেটি আমার জানা নেই, তবে আমি এ বিষয়ে খোঁজ নেব।’

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ