রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় র‌্যাবের মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনাকালে খেলনা পিস্তল ঠেকিয়ে র‌্যাব সদস্যদের হত্যার হুমকির দায়ে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী বলে জানায় র‌্যাব। শুক্রবার র‌্যাবের বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

গ্রেফতারকৃত তিনজনকে মাদকের মামলায় শুক্রবার জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত মাদকব্যবসায়ীরা হলেন- গোদাগাড়ী পৌরসভার মাদারপুর ডিম ভাঙা মহল্লার শাহরিয়ার নাজিম ওরফে জয় (২১), বুজরুক রাজারামপুর হলের মোড় এলাকার পরশ ওরফে মাহিদ হাসান (১৯) ও সিঅ্যান্ডবি গড়ের মাঠ এলাকার তারেক মাহফুজ (১৯)।

গোদাগাড়ী পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত শাহরিয়ারের মা আমেনা বেগম ওরফে মুক্তি একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার প্রথম স্বামী শহিদুল ইসলামের ছেলে শাহরিয়ার। মাদকব্যবসায় জড়িয়ে পড়ায় আমেনা বেগমের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করেন শহিদুল। পরে মতিউর রহমান নামে গোদাগাড়ীর এক মাদকব্যবসায়ীকে বিয়ে করেন আমেনা।

মতি র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। এরপর গোদাগাড়ী পৌর যুবলীগের নেতা নুরুজ্জামান ওরফে কাজলকে বিয়ে করেন আমেনা। কিছুদিন আগে একটি মাদক মামলায় নুরুজ্জামান, আমেনা ও তাঁর ছেলে শাহরিয়ারকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

সম্প্রতি তাঁরা জামিনে বের হন। তারপর আবার র‌্যাবের কাছে মাদকসহ গ্রেপ্তার হলো শাহরিয়ার।

র‌্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ফেনসিডিল বিক্রির জন্য মাদক ব্যবসায়ীরা অপেক্ষা করছেন এমন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৫ এর রাজশাহীর মোল্লাপাড়া ক্যাম্পের স্কোয়াড কমান্ডার ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মারুফ হোসেন খানের নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি দল বিজয়নগর গ্রামে অভিযান চালায়।

এসময় চারজন দুটি বস্তা ফেলে পালানোর চেষ্টা করে। র‌্যাব সদস্যরা তাদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেললে পরশ তাঁর হাতে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়ে কনস্টেবল রোকনুজ্জামানের মাথায় আঘাতের চেষ্টা করে। তা প্রতিহত করতে গেলে রোকনুজ্জামানের একটি আঙুল কেটে জখম হয়। আর শাহরিয়ার তাঁর কোমর থেকে একটি খেলনা পিস্তল বের করে এক র‌্যাব সদস্যের মাথায় ধরে বলেন, ‘গুলি করে দেব’।

এভাবে তারা ভয় দেখিয়ে পালানোর চেষ্টা করলেও র‌্যাব সদস্যরা তিনজনকে ধরে ফেলেন। একজন পালিয়ে যান। আহত র‌্যাব সদস্য রোকনুজ্জামান গোদাগাড়ী ৩১ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ ঘটনায় র‌্যাবে কর্মরত উপপরিদর্শক ত্রিনিবাস মিস্ত্রি বাদী হয়ে গোদাগাড়ী থানায় চারজনের নামে একটি মামলা করেছেন। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মারুফ হোসেন খান জানান, খেলনা পিস্তলটি হাতে না নিলে বোঝার উপায় নেই। এগুলো দিয়েই মাদক ব্যবসায়ীরা মানুষকে জিম্মি করে বলে জানান তিনি।

নয়া শতাব্দী/এম