ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

নতুন বর্ষকে স্বাগত জানাতে সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ভীড়

প্রকাশনার সময়: ৩১ ডিসেম্বর ২০২১, ২১:০৬

করোনা মহামারি আর রোহিঙ্গা ইস্যুর কারণে বেশ কয়েক বছর থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন নিয়ে সৈকতের বালিয়াড়ি বা উন্মোক্ত কোনো স্থানে অনুষ্ঠান হয়নি। এবারও কক্সবাজারে হচ্ছে না কোনো আয়োজন। তবে, নিয়মরক্ষায় তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইজ, সায়মন বিচ রিসোর্ট, কক্স-টু-ডে এবং সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা’ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ইনডোর প্রোগ্রামের আয়োজন করছে। হোটেলের অতিথি, বিদেশি পর্যটক এবং বিশেষ মেহমান ছাড়া এসব অনুষ্ঠানে অন্যদের শরিক হওয়ার তেমন সুযোগ নেই।

তারপরেও পুরোনো বছরের গ্লানি ভুলে নতুন দিনকে স্বাগত জানিয়ে বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে সমাগম হয়েছে বিপুল মানুষের। সেখানে রয়েছে পর্যটক ও স্থানীয়রা। সব রকমের দর্শনার্থীদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো সমুদ্র সৈকত। তবে প্রতি বছর শেষ সূর্যাস্তের দৃশ্য অবলোকন করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কক্সবাজারে ছুটে আসেন অগণিত পর্যটক। তার জন্য কয়েক দিন আগে থেকেই কক্সবাজারের হোটেলের কক্ষ বুকিং হয়ে যায়। তবে এবারের চিত্র একটু ভিন্ন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামতেই সমুদ্র সৈকতে আসতে শুরু করে দর্শনার্থীরা। এর মধ্যে কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকেরা সকাল থেকে সৈকতে বিচরণ করে আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠেন। বিকেলের দিকে সৈকতে নামতে শুরু করে স্থানীয় লোকজনও। তবে এবার আশানুরূপ পর্যটক নেই দাবি সংশ্লিষ্ট ব্যবসীদের।

ব্যবসায়ীরা বলছে, প্রতি বছর থার্টিফাস্ট নাইট উপলক্ষ্যে প্রায় সব হোটেল বুকিং হয়ে যায়। কিন্তু এবার তা হয়নি। এবার সর্বসাকুল্যে ৬০ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়েছে বলে দাবি করেছেন হোটেল মালিকরা।

বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে এসেছেন রামু সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আসলাম ও তার সঙ্গীরা। তারা বলেন, ‘শুক্রবারের এ সূর্যটি পশ্চিমাকাশে অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদায় হয়েছে ঘটনাবহুল ২০২১ সাল। শনিবার থেকে পথচলা শুরু হবে নতুন বছর ২০২২ সালের। এ বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে আমরা বন্ধুরা মিলে বালিয়াড়িতে এসেছি।’

হোটেল আলম গেস্ট হাউসের ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান বলেন, ‘প্রতিবছরের মতো এবারও থার্টিফাস্ট নাইটে আমরা তেমন আশা করেছিলাম। কিন্তু পর্যটক সমাগমের প্রবণতায় কম।’ তবে ট্যুরিস্ট পুলিশ বলছে, করোনা সতর্কতার কারণে থার্টিফাস্ট নাইটের কোনো অনুষ্ঠান রাখা হয়নি। সেকারণে পর্যটক কিছুটা কম এসেছে।

কক্সবাজারের তারকা হোটেল ওশ্যান প্যারাডাইসের পরিচালক আবদুল কাদের মিশু বলেন, ‘পর্যটন বিকাশে আমরা শুরু থেকেই বাংলা নববর্ষ, থার্টিফার্স্ট নাইটসহ নানা দিবসকে পর্যটকদের কাছে উপভোগ্য করে তুলি। পর্যটক চাহিদার কারণে এবারও বলরুমে ইনহাউজ গেস্টদের জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে। ব্যুফে ডিনারের সঙ্গে ছাদে থাকছে স্টেজ প্রোগ্রাম।’

কক্সবাজার হোটেল-গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘হোটেলগুলোতে এখনও কিছু রুম খালি আছে। তবে সাপ্তাহিক ছুটি ও থার্টিফার্স্ট নাইট উপলক্ষে অতীতের মতো পর্যটকে ভরে গেছে সৈকত।’

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন বলেন, ‘পর্যটকদের নির্বিঘ্ন চলাফেরা নিশ্চিত করতে কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তবে থার্টিফার্স্ট নাইটের অনুষ্ঠান না থাকায় পর্যটক আশানুরূপ আসেনি।’

কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার কামাল বলেন, ‘এবারের থার্টিফার্স্ট নাইটে কক্সবাজারে পর্যটক না থাকার কারণ কক্সবাজারে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এসব কারণে পর্যটনখাতে প্রভাব পড়ে। কক্সবাজারের অনেক দর্শনীয় স্থান এখনও পর্যটক শূন্য। তবে পরিস্থিতি ঠিক থাকলে নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহে প্রচুর পর্যটক সমাগম হবে বলে আশাবাদী পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।’

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপনে কোনো আতশবাজি, পটকা ফুটানো বা কোনো উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান করা যাবে না। পাশাপাশি রাত ১২টার পর উচ্চস্বরে কোনো মাইক কিংবা সাউন্ড বাজানো নিষেধ।’

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেছেন, ‘কক্সবাজারের পর্যটন সেক্টরে যে দু’টি ঘটনা ঘটেছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত। এতে পর্যটন শিল্পের উপর পড়া প্রভাব উত্তরণে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পর্যটনের ন্যূনতম সমস্যা হলে এর জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ