ঢাকা, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ৬ জিলকদ ১৪৪৫

শামিয়ানার নিচে এসএসসি পরীক্ষা

প্রকাশনার সময়: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:৪৯ | আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:৫৭

জামালপুরের মেলান্দহে কলাবাধা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে শামিয়ানার নিচে। যে স্কুলের শিক্ষার্থী সে স্কুলে পরীক্ষা দেওয়ার নিয়ম না থাকলেও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে না জানিয়ে প্রথমদিন এ স্কুলের পরীক্ষার্থীরা নিজেদের স্কুলেই পরীক্ষা দিয়েছেন।

এদিকে, সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহ করে পরীক্ষা কেন্দ্রের বাহিরে আসলে সাংবাদিকদের দুরমুট ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বিলাশ সরকার বলেন,'এই পরীক্ষার কেন্দ্রের আমি দায়িত্ব রয়েছি। কি জন্য এসেছেন, কি সমস্যা.? এটা নিয়ে কোনো নিউজ করা যাবে না। ইউপি সদস্য হয়ে কিভাবে এ দায়িত্ব নিয়েছেন এ প্রশ্ন করলে তিনি বলেন,'পরীক্ষার কেন্দ্রে নকল হয় কিনা এটা বাহির থেকে আমি দেখাশোনা করি বলে ইউপি সদস্য বিলাস সরকার ফোন করে তার কয়েকজন অনুসারীদেরকে ডেকে আনেন।

কলাবাধা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়,'কলাবাধা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে চারটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। এসএসসি (জেনারেল) শিক্ষার্থী ৪৩২ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি (ভোকেশনাল) শিক্ষার্থী ২৭২ জন শিক্ষার্থী এ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছেন। তাদের মধ্যে শামিয়ানার নিচে পরীক্ষা দিচ্ছেন ১২০ জন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, 'কলাবাধা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার ১১১ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী একই বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়ার নিয়ম না থাকায় কলাবাধা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রের পাশেই কলাবাধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভেন্যু করেছেন। সেই কলাবাধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভেন্যুতে পরীক্ষার্থীদের আসন সংকট থাকায় মাঠের একপাশে শামিয়ানা টানিয়ে তাঁর নিচে ১২০ জন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,'কলাবাধা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রের চারপাশে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা দাঁড়িয়ে রয়েছেন। বিদ্যালয়ের মাঠের ঢুকতেই দেখা যায়, মাঠের একপাশে শামিয়ানা করা হয়েছে। শামিয়ানার মধ্যে আবার তিনটি কক্ষ করা হয়েছে। শামিয়ানার নিচে ১২০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছেন। এর মধ্যে ওই স্কুলেরই শিক্ষার্থী রয়েছেন ৫৬ জন। পার্শবর্তী অন্য স্কুল থাকলেও এভাবে পরীক্ষায় নেওয়ায় সুধী মহলের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। তারা বলেছেন, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজেদের পরীক্ষার্থীদের বেশি সুবিধা দিতেই শামিয়ানা করে পরীক্ষা নিচ্ছেন।

শামিয়ানার ভিতরে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন,'মাঠের ভিতরে শামিয়ানা টাঙিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। এই কেন্দ্রের পাশে একটু দূরে কলাবাধা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ছিল, সেখানে পরীক্ষা কেন্দ্র করতে পারতো। কিন্তু তা না একই এই কেন্দ্রের সাথে লাগানো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে একটা ভেন্যু করে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবন থাকাই আসন সংকট হয়েছে।‌ তাই মাঠের ভিতরে শামিয়ানা টাঙিয়ে পরীক্ষা নিচ্ছে। হঠাৎ যদি পরীক্ষা চলাকালীন বৃষ্টি নামে তাহলে কি হবে। এভাবে পরীক্ষা নেওয়াটা কখনোই ঠিক না।

কলাবাধা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব মো. মুনায়েম বলেন, 'কলাবাধা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কলাবাধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভেন্যুতে পরীক্ষা দিচ্ছেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনে আসন সংকট থাকায় শামিয়ানা করা হয়েছে। প্রথম পরীক্ষা কলাবধা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তাদের একাডেমি ভবনের পরীক্ষা হয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যারের সাথে কথা হয়েছে তারা একটা আবেদন দিতে বলেছেন। আমরা আজকেই আবেদন দিবো।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজাদুর রহমান ভূঁইয়া বলেন,'একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী একই বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। আর শামিয়ানার বিষয়টি আমি জানি না, আপনাদের কাছ থেকে বিষয়টি মাত্র শুনলাম। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।

এবিষয়ে মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত বলেন,'আমাদেরকে না জানিয়ে শামিয়ানা টাঙিয়ে পরীক্ষা নিয়েছে। এ বিষয়টি জানার পরে ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের পাশে একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে রয়েছে, সেই জায়গায় পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলেছি।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ