মুখে স্মিত হাসি। ডেভিড ওয়ার্নার তাকিয়ে মাঠের বড় স্ক্রিনের দিকে, রিভিউয়ের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা তার। বলটা পিচ করলো ঠিকঠাক, আঘাত হানলো উইকেটেও; ওয়ার্নার আউট! ইতি ঘটলো এক কিংবদন্তীর টেস্ট ক্যারিয়ারের।
অপরপ্রান্তে থাকা মার্নাশ লাবুশেন তখনই এসে জড়িয়ে ধরলেন ওয়ার্নারকে। অভিবাদন পেলেন পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের কাছ থেকেও। সিডনির মাঠ থেকে ড্রেসিংরুমের পথের পুরোটাজুড়েই করতালি ভেসে এলো ওয়ার্নারের জন্য। কিংবদন্তীরা বুঝি এভাবেই বিদায় নেন!
ওয়ার্নারের বিদায়-বিষাদের ম্যাচতি অবশ্য জয়েই রাঙিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসে পাকিস্তান লিড নেওয়ার পরও যে একটু-আধটু সংশয় ডালপালা মেলেছিল, সেখানে লড়াই-ই হয়নি। দ্বিতীয় ইনিংসে অল্পতেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তান, পরে ওই রান সহজেই টপকে যায় অজিরা।
সিডনিতে তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজের শেষটিতে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে স্বাগতিকরা। প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের ৩১৩ রানের জবাবে ২৯৯ রান করতে পারে অজিরা। কিন্তু ১৪ রানের লিড কাজে লাগাতে পারেনি পাকিস্তান। দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয়ে গেছে মাত্র ১১৫ রানে।
৭ উইকেট হারিয়ে ৬৮ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করে পাকিস্তান। যদিও তাদের আশা হয়ে ছিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও আমের জামাল। সেই আশার পালে চতুর্থ দিন সকালেও কিছুটা হাওয়া পায় পাকিরা, কিন্তু সেটা খুব বেশিক্ষণ না। নাথান লায়নের ওভারে ৫৭ বলে ২৮ রান করে ওয়ার্নারের হাতে ক্যাচ দেন তিনি।
তিন বল পর আমের জামালের বিদায়ে পাকিস্তানের হার নিশ্চিত হয়ে যায় অনেকটাই। ৪৭ বলে ১৮ রান করে প্যাট কামিন্সের শিকার হন তিনি। ৯ ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়ে ৪তি উইকেট নেন জশ হ্যাজলউড। এছাড়া নাথান লায়ন নেন তিনটি উইকেট। একটি করে উইকেট নেন মিচেল স্টার্ক, ট্রাভিস হেড ও প্যাট কামিন্স।
১৩০ রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় অস্ট্রেলিয়া। ৬ বলে কোনো রান করার আগেই সাজঘরে ফেরেন উসমান খাজা। কিন্তু এরপর লাবুশেনের সঙ্গে ১১৯ রানের জুটি গড়েন ওয়ার্নার। নিজের শেষ টেস্ট ইনিংসেও হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন এই ব্যাটার। যদিও আউট হন ৭৫ বলে ৫৭ রান করে। ১১২ টেস্টের ক্যারিয়ার ৪৪.৫৯ গড়ে ৮,৭৮৬ রানে শেষ করেন ওয়ার্নার। যে পথে আছে ২৬টি সেঞ্চুরি ও ৬৭টি হাফ-সেঞ্চুরি।
ওয়ার্নারের বিদায়ের পরও জয়ে কোনো অসুবিধা হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। ৭৩ বলে ৬২ রান করে অপরাজিত থাকেন লাবুশেন। এক বল খেলে বাউন্ডারি হাঁকান স্মিথ। তিন ম্যাচের সিরিজে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে অস্ট্রেলিয়া।
৮২ রানের পাশাপাশি ৬ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন আমের জামাল। তবে সিরিজ সেরা হন ১৯ উইকেট নেয়া প্যাট কামিন্স।
নয়া শতাব্দী/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ