ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

প্রধানমন্ত্রীর কাছে ৬০ হাজার শিক্ষার্থীর প্রাণের দাবি

প্রকাশনার সময়: ২৫ জুলাই ২০২১, ২১:৪৪

প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর নিকট মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ করে দিতে আকুতি জানিয়েছেন ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের অনার্স ফাইনাল পরীক্ষায় এক-দুই বিষয়ে ফেল করা প্রায় ৬০ হাজার শিক্ষার্থী।

দেশে চলমান মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বিস্তারে ছাত্র-ছাত্রীদের বিপর্যস্ত জীবনমান বিবেচনায় এনে যেকোনো মূল্যে মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ করে দিতে এটি শিক্ষার্থীদের প্রানের দাবি৷

জানা যায়, চলমান করোনা পরিস্থিতিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এসকল ফেলকরা শিক্ষার্থীরা অনেক ভোগান্তিতে পরেছেন। তাদের ৪র্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা ২০১৯ সালে শুরু হয়ে ২০২১ সালে শেষ হয়। দীর্ঘ সময় বিরতির পর পরীক্ষা নেওয়ায় ৪ বছরের অনার্স কোর্স ৬ বছর লেগে যায়৷

এদিকে চাকরির বয়স কমে যাচ্ছে৷ অনেকেই পরিবারের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। হতাশাগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের অনেকে আত্মহত্যার পথও বেছে নিয়েছে৷ এমন পরিস্থিতিতে মোটামুটি জীবন বাঁচানোর লড়াইয়ে টিকে থাকা শিক্ষার্থীরা অনেক মানসিক চাপ নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও ফেল করার মতো পরীক্ষা দেননি তারা৷

গত ২০ জুলাই কাঙ্খিত পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে অনাকাঙ্খিত বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর এক-দুই বিষয়ে ফেল আসায় ধ্বংস হয়ে গেলো তাদের স্বপ্ন।

চরফ্যাশন সরকারি কলেজ থেকে এক বিষয়ে ফেলকরা মাসুদ, সোহাগ, লিমা ও ফাতেমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, দেশের প্রথম সিরিয়ালের ২০ থেকে ২৫ টি কলেজে ইতিপূর্বে এমন বিপুল সংখ্যক পরীক্ষার্থী এক-দুই বিষয়ে ফেলকরার নজির আগে কখনো শুনিনি৷ এটা বিশ্বাস যোগ্য কোনো ঘটনা নয়৷ আমরা ফেল করা বিষয়ে ভালো পরীক্ষা দিয়েছি৷ পেপার না দেখে ইচ্ছে মতো নাম্বার বসিয়ে ফেল করানোর আশঙ্কাও করেছেন অনেকে৷ ফেলকরা এক বিষয়ের জন্য পুনরায় দুইটি বছর আমাদের জীবন থেকে কেড়ে না নিয়ে যেকোনো মূল্যে মাস্টার্সে ভর্তির বিষয়টি বিবেচনা করতে কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধও জানান এসকল ফেলকরা শিক্ষার্থীরা৷

শিক্ষার্থী আরিফ হোসেন বলেন, আমাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে “বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ছাত্র ঐক্য পরিষদ” সংগঠনের ব্যানারে সারা দেশে আগামী ৭ আগষ্ট থেকে ৯ আগষ্ট পর্যন্ত তিনদিনের শান্তিপূর্ণ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবো৷ ৬০ হাজার শিক্ষার্থীর দাবি মেনে নেয়া না হলে পরবর্তীতে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারিও দেন আরিফ হোসেন৷

উল্লেখ্য ১৫ মার্চ ২০১৭ইং তারিখে তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক একটি জাতীয় দৈনিকে বলেছেন, খাতা না দেখেই চূড়ান্ত ফল দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে তাদের শিক্ষার মান কেমন হতে পারে তা সহজেই অনুমান করা যায়।

তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের আত্মীয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষক। তিনি একবার অনার্সের খাতা নিলেও অসুস্থতার কারণে দেখতে পারেননি। তাই তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানান, দ্রুত যেন খাতা নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর দ্বারা খাতা দেখা সম্ভব নয়। কিন্তু মাসখানেক পার হলেও কেউ খাতার ব্যাপারে খোঁজ নেয়নি। এর কিছুদিন পরেই ফলাফল দিয়ে দেওয়া হয়। অথচ তখন অদেখা অবস্থায় কয়েক শ খাতা ওই শিক্ষকের বাসায় পড়ে ছিল। এই হলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখার অবস্থা। ২০১৭ সালের সেই ঘটনার পুনরাবৃতি হয়েছে ২০২১ সালে এমনটাই আশঙ্কা করছেন অনার্স ফাইনাল পরিক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থীরা৷

নয়া শতাব্দী/এম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ