ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

যে গ্রামে নেই কোনো স্কুল!

প্রকাশনার সময়: ২৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১৯:১৭ | আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১৯:৪১

যে গ্রামে নেই কোনো স্কুল। আর স্কুল না থাকায় প্রাথমিক শিক্ষায় পিছিয়ে পড়ছে অন্তত পাঁচ শতাধিক সুবিধাবঞ্চিত শিশু। দীর্ঘ কয়েক যুগ পেরিয়ে গেলেও ভৈরব উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের (৬নং ওয়ার্ড) রঘুন্নাথপুর গ্রামে গড়ে উঠেনি কোনো সরকারি কিংবা বেসরকারি স্কুল। এতে করে প্রতিবছরই মৌলিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রায় পাঁচ শতাধিক শিশু।

প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় নিরক্ষরই রয়ে যাচ্ছে গ্রামের অধিকাংশ মানুষ। শিক্ষার অভাবে প্রতিনিয়তই বাড়ছে ওই গ্রামে শিশু শ্রম, নির্যাতন, মাদকাসক্ত ও বাল্যবিয়ের পরিধি। সরকারি শিক্ষা প্রকল্পের সুফল না পাওয়া শিক্ষা বঞ্চিত গ্রামের শতশত শিশু ও তাদের অভিভাবকদের দাবি গ্রামের যেন সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়।

সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা জানান, রঘুন্নাথপুর গ্রামে স্কুল না থাকায় তাদের দূরের স্কুলে গিয়ে পড়তে হয়। অনেক দূরের স্কুল হওয়ায় নিয়মিত ক্লাসও করতে তাদের সমস্যা হয়। তাছাড়া রেললাইন ও ব্যস্ততম সড়ক পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। অনেকেই আবার স্কুলে যেতে না পেরে বিভিন্ন শিশু শ্রমে ঝুঁকে পড়ছে। কোমলমতি শিশুদের দাবি, রঘুন্নাথপুর গ্রামে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করে সকল শিশুদের পড়াশোনার সুযোগের মাধ্যমে শিশু শিক্ষার হার যেন বৃদ্ধি করা হয়।

রঘুন্নাথপুর গ্রামের সন্তান স্কুল শিক্ষক মো. সোহরাব হোসেন জানান, যুগের যুগ পার হলেও এই গ্রামে কোন স্কুল নেই। সব জায়গায় সরকারি স্কুলে রয়েছে। কোনো কোনো গ্রামে দুটি সরকারি স্কুলও রয়েছে, একাধিক কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। অথচ রঘুন্নাথপুর গ্রামে নেই কোনো সরকারি স্কুল, বেসরকারি স্কুল। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় আমাদের বাচ্চারা দিনের দিন পিছিয়ে পড়ছে। ঝুঁকি নিয়ে শিশুরা দূরের স্কুলে পড়াশোনা করতে প্রায় সময় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। দূরের স্কুলে সহজে বাচ্চাদের পাঠাতে পারিনা আবার পাঠালেও রাস্তাপার হওয়ার ভয় থাকে। তাই, এ গ্রামে শিক্ষার প্রসার ঘটাতে খুবই দ্রুত একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রয়োজন। এ বিষয়ে এলাকাবাসীর সহযোগিতা ও সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।

২০১৪ ও ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্রকল্প ‘বিদ্যালয় বিহীন গ্রামে বিদ্যালয় স্থাপন’ প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে আড়াইহাজার নতুন স্কুল নির্মাণ করা হলেও রঘুন্নাথপুর গ্রামের বিষয়টি নজরে পড়েনি কারো। তাই সরকারি ব্যবস্থাপনায় স্কুল নির্মাণের দাবি জানান গ্রামবাসী লোকজন ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা।

কিশোরগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সুব্রত কুমার বণিক বলেন, যেহেতু রঘুন্নাথপুর গ্রামে কোনো স্কুল নেই। সেক্ষেত্রে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে নতুন স্কুলের জন্য মহাপরিচালক (ডিজি) বরাবর আবেদন করতে হবে। যদি আবেদন করা হয়, সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চেষ্ট করবো কিভাবে একটি নতুন স্কুল স্থাপন করা যায়।

নয়া শতাব্দী/এস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ