ইট কাঠের নাগরিক সভ্যতার শহরগুলো থেকে দ্রুতই হারিয়ে যাচ্ছে সবুজ। কিন্তু মানুষ তার শিকড়কে সহজে ভুলতে পারে না। সবুজে ভরা গ্রাম বাংলায় বেড়ে ওঠা নাগরিক সমাজের একটা অংশ সবুজকে ধরে রাখতে চায় আবাসস্থলে।
শৌখিন মানুষরা তাদের ঘরবাড়িতে সবুজকে ধরে রাখার জন্য একান্ত নিজস্ব ভাবনা আর প্রচেষ্টায় আপন আপন বাড়ির ছাদে তৈরি করছে ছাদ বাগান। সময়ের সাথে এ বাগান এখন আর শৌখিনতায় আটকে নেই।
তেমনি একজন শৌখিন গাছ প্রেমী মানুষ স্কুল শিক্ষিকা মাহবুবা খাতুন। তিনি তার বাসার ছাদে গড়ে তুলেছেন এক আকর্ষণীয় বাগান। করোনাকালীন অবসর সময়ে সিন্ধান্ত নেন তার বাড়ির ছাদে বাগান করবেন। তারপর থেকে শুরু হয় মাহবুবার ছাদ বাগানের যাত্রা। দুয়েকটা করে ফুলের চারা কিনতে কিনতে মাহাবুবা প্রায় ২৫০ প্রজাতির ফুল, ফল ও ওষুধি গাছের চারা লাগান তার বাড়ির ছাদে। এখন তার বাড়ির ছাদ পরিপুর্ণ ছাদ বাগানে রুপান্তরিত হয়েছে।
তার বাগানে রয়েছে ফলদ, বনজ, ভেষজ, শোভাবর্ধনকারী, দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় সবজি ও অন্যান্য নানান প্রজাতির গাছ। মাহবুবা তার প্রতিবেশীদের গাছ লাগাতে উৎসাহ প্রদান করেন এবং তার বন্ধু আত্মীয় স্বজনকে গাছের চারা উপহার দেন।
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়নের চান্দাইকোনা গ্রামের মাহবুবা খাতুন। পেশায় একজন স্কুল শিক্ষিকা। তিনি তার বাড়ির ছাদে গড়ে তোলেন শখের বাগান। এতে ২৫০ প্রজাতির ৩ হাজারের বেশী ফল, ফুল, ওষুধি জাতীয় এবং বিলুপ্ত প্রজাতির গাছ রয়েছে।
মাহবুবা খাতুন নয়া শতাব্দীকে বলেন, আমি ভুইয়াগাতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করি। মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায়। তখন বাড়িতে একাকি সময় কাটাই। ঠিক তখনই আইডিয়া আসে বাসার ছাদে বাগান করার। তখন থেকে গাছের চারা কেনা শুরু। বিভিন্ন স্থানে হাটে বাজারে ঘুরে ফুল ও ওষুধি গাছের চারা সংগ্রহ করেন। নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ২৫০ প্রজাতির গাছের চারায় ভরিয়ে তোলেন তার বাসার ছাদ।
প্রথম দিকে ফুল গাছের প্রতি বেশী আগ্রহী থাকলে পরে ধীরে ধীরে বনজ, ওষুধি ও বিলুপ্ত প্রায় গাছ সংগ্রহ করতে থাকেন তিনি। শিক্ষকতার বাইরের সবটুকু সময় এই ছাদ বাগানের পিছনে ব্যয় হয়। এছাড়াও মাহবুবার অর্বতমানে তার ছেলে বাগানের পরিচর্যা করেন।
মাহবুবার ছাদ বাগানের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ফুল গাছ হলো জবা, অপরাজিতা, দোপাটি, চন্দ্রমল্লিকা, শিউলি, রঙ্গন, কৃষ্ণচুড়া। বিলুপ্তপ্রায় শেতচন্দন, রক্তচন্দন, দোপাটি, ডেউয়া, কদবেল, গাব, চাপালিশ, সাদা লজ্জাবতি, জেট প্লাস্ট, ফোনেক্স, পাম্প, ক্যালাঞ্চু, করেন প্লান্ট, ভেরিগ্লেটড লিলি বটসহ নানান প্রজাতির গাছ।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ