ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

ভুট্টা চাষে প্রবাস ফেরত যুবকের বাজিমাত

প্রকাশনার সময়: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:২১

ভাগ্য বদলের আশায় সৌদি আরবে যান মো. রাসেল মিয়া। দুর্বিষহ প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে ফিরে আসেন। তবে গ্রামে কি করবেন এই নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না। অবশেষে বাপ-দাদার পৈতৃক পেশা কৃষিকাজকে বেছে নেনে। তবে সনাতন নয় আধুনিক পদ্ধতিতে লাভজনক চাষাবাদ করার সিদ্ধান্ত নেন রাসেল। এতে সফলতার মুখও দেখেন প্রবাস ফেরত এই যুবক।

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের আড়াইবাড়িয়া ইউনিয়নের পূর্ব দ্বীপেশ্বর গ্রামের রসুন আলীর ছেলে মো. রাসেল মিয়া। পরিবারে তিন বোন ও তিন ভাই।

বাবার সংসারের হাল ধরতে ২০০৫ সালে সৌদি আরবে যান। অনেক টাকা ধারদেনা করে বিদেশে যাওয়ায় আর্থিক অনটনের মধ্যেই থাকতো বেশিরভাগ সময়। এরপরে বিদেশে বসেই স্বপ্ন দেখেন দেশে কৃষি কাজ করেও স্বাবলম্বী হওয়া যায়।

কৃষিকাজের বিষয়ে ইউটিউবে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও দেখতে শুরু করেন রাসেল। ২০২১ সালের শেষদিকে দেশে ফিরে আসেন। এরপরে কৃষি বিভাগের পরামর্শে কৃষি কাজ শুরু করেন তিনি। একপর্যায়ে সফলতার মুখও দেখেন তিনি। এখন রাসেল অন্যকে পরামর্শ দেন বিদেশ নয়, দেশেই সমপরিমাণ শ্রম দিয়ে বৈদেশিক পর্যায়ের অর্থ উপার্জন সম্ভব। এর জন্য দরকার সুন্দর পরিকল্পনার সঙ্গে একাগ্রতা।

রাসেল প্রথম বছর এক বিঘা জমিতে ভুট্টা, দুই বিঘা জমিতে মরিচ, আলু চাষাবাদ শুরু করেন। ভুট্টা চাষে কম খরচ থাকায় ব্যাপক লাভের মুখ দেখেন তিনি। পরবর্তী বছরে ৪ একর জমিতে ভুট্টা চাষা করেন। ভুট্টার বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

এ বছর চার একর জমিতে ভুট্টা চাষ করেন। এই ভুট্টা চাষ করতে ১লাখ ৫০ হাজার টাকা তার খরচ হয়েছে। বর্তমানে ভুট্টার প্রতি মন ১৩০০ টাকা। তিনি আশা করছেন, ৬ লাখ টাকার ভুট্টা বিক্রয় করতে পারবেন। প্রবাস ফেরত এই যুবকের ভুট্টা আবাদ দেখে অন্যরাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

হোসেনপুরের কৃষক সবুজ মিয়া বলেন, আমাদের প্রতিবেশী রাসেল বিদেশ থেকে বাড়ি ফিরে ভুট্টা চাষ করে লাভবান হয়েছে। আমরাও পরামর্শ নিতে এসেছি ভুট্টার ফলন কিভাবে বাড়ানো যায়।

উপজেলার চরবিশ্বনাথপুর গ্রামের আব্দুল হক বলেন, রাসেল ভুট্টা চাষে লাভবান হচ্ছে এমন খবর শুনে ভুট্টার খেত দেখতে এসেছি। তার পরামর্শ ও সহযোগিতায় ভুট্টার বাম্পার ফলন বাড়ানোর পদ্ধতি জেনে চাষ শুরু করব।

রাসেল জানান, বিদেশ থেকে ফিরে বেকারত্ব ঘোচাতে কৃষিতে আত্ননিয়োগ দেন তিনি। প্রথম বছর ভুট্টা চাষে সামান্য লাভ, এখন ব্যাপকভাবে চাষাবাদ করেছেন।

কৃষি ফসলের রোগবালাই হলে তিনি কি করেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার অনেকটা অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে, তা ছাড়া ওষুধের দোকানে গিয়ে লক্ষণগুলো বললেই ওষুধ দিয়ে দেয়। এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকলে ভুট্টা খেত থেকে ছয় লাখ টাকা আয় করতে পারবেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এম শাহজাহান কবির জানান, এ বছর আগাম ভুট্টা চাষে রাসেল চমকপদ উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। অনুকূল আবহাওয়া থাকলে ভুট্টার ব্যাপক ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ