ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

রাবির ছাত্রী হল যেন কারাগার

প্রকাশনার সময়: ২০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫:০০ | আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২১, ২০:৩৯

‘সকাল দশটায় ফাইনাল পরীক্ষা শুরু। তাই ঐদিন ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠে যাই। কিন্তু কয়েকদিন থেকে জ্বর ও পরীক্ষার টেনশনে আমার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। আমার রুমমেট ও হলের কয়েকজন আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়। চিকিৎসা নিয়ে সকাল ৭টা নাগাদ হলে ফিরি। ২ ঘণ্টা পর পরীক্ষা শুরু তাই পাশের হল থেকে আমার বান্ধবীকে ফোন দেই আমাকে পরীক্ষার হলে নিয়ে যাওয়ার জন্য। ঐ বান্ধবী হলের গেটে এসে খালাকে সবকিছু বলেন। কিন্তু এক হলের ছাত্রী অন্য হলে প্রবেশ নিষেধ বলে খালা তাকে হলে প্রবেশ করতে দেয়নি।’

কথাগুলো বলছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মন্নুজান হলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আবাসিক ছাত্রী। শুধু একটি সমস্যা নয় এরকম একাধিক সমস্যা রয়েছে ছাত্রী হলে। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলগুলো পরিণত হয়েছে ‘কারাগারে’।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের আরেক আবাসিক শিক্ষার্থী নাজমুন নাহার জেমি বলেন, ‘এই হলের এক তলা থেকে তিন তলা পর্যন্ত ইন্টারনেট সংযোগ আছে কিন্তু চার তলা থেকে ছয় তলা অবধি ইন্টারনেট সংযোগ নেই। অথচ নিয়মিত ইন্টারনেট ফি দিয়েও আমরা ইন্টারনেট সুবিধা থেকে বঞ্চিত। প্রশাসন ১৫ দিন সময় নিয়েও দেড় মাস হয়ে যাচ্ছে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।’

এর আগে ছাত্রী হলের সমস্য নিয়ে একাধিকবার আন্দোলন হলেও সমাধান হয়নি কোন সমস্যার। সর্বশেষ ২০ নভেম্বর দশ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আবাসিক হলের ছাত্রীরা। তাদের দাবিগুলো হলো- সান্ধ্য আইন পরিবর্তন, ইন্টারনেটের ফ্রিকোয়েন্সি বাড়িয়ে ওয়াইফাইয়ের সমস্যা দূর করা, ডাইনিংয়ে খাবারের মান বৃদ্ধি, অতিথিদের হলে প্রবেশে অনুমতি, অন্য হলের ছাত্রী ও প্রাক্তন ছাত্রীদের হলে প্রবেশের অনুমতি, হলের খালা ও স্টাফদের অসদাচরণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, পরীক্ষা শেষে অন্তত দুই মাস হলে অবস্থানের অনুমতি, পর্যাপ্ত রিডিং রুমের ব্যবস্থা করা, হলের চারপাশ ও ওয়াশরুম পরিষ্কার করা এবং হলের মশা-মাছি নিধনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

সমস্যাগুলোর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ও সহযোগী অধ্যাপক তারেক নূর বলেন, ‘ছাত্রীদের দাবিগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। এরই মধ্যে ইন্টারনেট সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইন্টারনেট আপগ্রেডেশনের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। এটি শেষ হতে ৬ মাস থেকে এক বছর সময় লাগবে।’

তিনি আরো বলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের ইন্টারনেট সংযোগের জন্য ১৯ লাখ টাকার একটা বাজেট প্রস্তাবনা করা হয়েছে। ফাইনান্স কমিটি (এফসি), সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পাশ হলেই এই হলে কাজ শুরু হবে। আর অন্যান্য সমস্যাগুলোও খুব দ্রুতই সমাধান করা হবে।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সংশ্লিষ্ট প্রশাসকদের এই সমস্যাগুলো সামাধানের বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা সে অনুযায়ী কাজ করছে। ইন্টারনেট সমস্যা নিরসনের জন্য আইসিটি সেন্টারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্য সমস্যগুলোও খুব দ্রুত সমাধান হবে।’

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ