ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

জাবি ধর্ষণকাণ্ড: ৫ দফা দাবিতে আল্টিমেটাম

প্রকাশনার সময়: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯:৪৪ | আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২১:০৯

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বহিরাগত এক দম্পতিকে ডেকে এনে স্বামীকে আবাসিক হলে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় দীর্ঘদিন ৫ দফা দাবি জানিয়ে আসছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ’। এবার দাবি না মানলে আসন্ন ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় বাঁধা দেওয়ার হুমকি দিয়েছে আন্দোলনকারীরা।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুনকলা ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুমকি দেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির সদস্য সচিব মাহফুজ ইসলাম মেঘ বলেন, গত ৩ ফেব্রুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে। এ প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা ধর্ষক মোস্তাফিজকে মীর মোশাররফ হোসেন হলে ঘেরাও করে ধর্ষন ও নিপীড়নবিরোধী আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটায়। তারপর শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে নিয়ে ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ’ গঠন করে এবং পাঁচ দফা দাবি জানায়।

দাবিগুলো হলো- অছাত্রদের বের করে গণরুম বিলুপ্ত করা, নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করা, শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির বিচার নিষ্পত্তিসহ ক্যাম্পাসে নানাবিধ অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনা, ধর্ষণের ঘটনায় প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষের অপরাধ তদন্ত করা, সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্ত চলাকালে তাদের প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া এবং মাদকের সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

দাবি না মানলে আগামী ২২ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য স্নাতক ভর্তি পরীক্ষা কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত হলে দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিতে হবে বলে লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সিন্ডিকেট সভা আয়োজন ও চলমান আন্দোলনের দাবিসমূহ বাস্তবায়নে প্রশাসন যদি গ্রহণযোগ্য পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়। তবে নিপীড়নবিরোধী মঞ্চ আরও ব্যাপক ও কঠোরতর আন্দোলন গড়ে তুলবে। এই উদ্দেশ্যে আমরা সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করছি।

এদিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির বিচার ও ধর্ষণকান্ডে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর এবং মীর মোশাররফ হোসেন হলের প্রোভোস্টের সম্পৃক্ততার তদন্তে প্রশাসনের গাফিলতি আছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে মাদক সরবরাহকারী কিছু ব্যাক্তিকে আটক করা হলেও মাদক বিপণন ও ব্যবসার সাথে যুক্ত ক্যাম্পাস অভ্যন্তরে থাকা কোন ব্যাক্তিবর্গকে চিহ্নিত করা ও তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে দেখা যায়নি। যৌন নিপীড়ক মাহমুদুর রহমান জনির বিচার ও ধর্ষণকান্ডে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর এবং মীর মোশাররফ হোসেন হলের প্রোভোস্টের সম্পৃক্ততা তদন্তের দাবিতেও প্রশাসনের আশ্বাসকে সন্দেহের মুখে ফেলে দেয়। এছাড়াও দেশের বিশেষ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী র‌্যাপিড একশন ব্যাটালিয়নের বার্তায় উঠে আসা ক্যাম্পাসে বিদ্যমান মাদক ও অপরাধ চক্রের ভয়াবহ বিস্তারের বর্ণনাও প্রশাসনকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করতে পারেনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিব জামানের সঞ্চালণায় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, ফার্মেসী বিভাগের অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার এবং পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু।

নয়াশতাব্দী/টিএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ