বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাবাকে দেখতে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নুসরাত জাহান (২৫) নিহত হন।

বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) মাদারীপুরের শিবচর এলাকায় এ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নিহতের প্রকৌশলী স্বামী ও তিন বছরের ছেলে।

নিহত নুসরাতের বাবার বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফলের কাছিপাড়া ইউনিয়নের পাতিলাপাড়া গ্রামে। স্বামীর বাড়ি একই জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার উত্তর ঝাটিবুনিয়া গ্রামে।

জানা গেছে, নুসরাতের বাবা স্ট্রোক (মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ) করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাই অসুস্থ বাবাকে দেখতে একমাত্র মেয়ে নুসরাত তার প্রকৌশলী স্বামী আমিনুল ইসলাম ও তিন বছরের ছেলে মুনতাসিরকে নিয়ে ঢাকা থেকে বাসে করে বরিশালে যাচ্ছিলেন।

শিবচরের সূর্যনগর এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কে (ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে) ট্রাক ও বাসের সংঘর্ষে মারা যান নুসরাত জাহানসহ চারজন। আহত হন নুসরাতের স্বামী আমিনুল ইসলাম, ছেলে মুনতাসীরসহ ২০ জন। আমিনুল ইসলাম ও তার ছেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

নিহত অপর তিনজন হলেন- ঝালকাঠির নলছিটির জুরকাঠী এলাকার আবদুস সালাম মিয়ার ছেলে মো. রিয়াজুল ইসলাম (৩৮), বরিশালের উজিরপুরের নারিকেলী এলাকার নিরঞ্জন বাড়ৈর ছেলে স্বপন বাড়ৈ (৪৪) ও সিরাজগঞ্জ সদরের আতাউর রহমানের ছেলে মাহাবুবুর রহমান (২৮)।

নিহত নুসরাতের চাচাতো ভাসুর আবদুল বারেক জানান, নুসরাত তার একমাত্র ছেলে মুনতাসীর ও প্রকৌশলী স্বামী মো. আমিনুল ইসলামকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করেন। মঙ্গলবার (২১ ফেব্রয়ারি) নুসরাতের বাবা মো. জাকির হোসেন তালুকদার স্ট্রোক করলে তাকে বাউফল থেকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে স্বামী-সন্তানকে নিয়ে বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে বরিশালের পথে রওনা হন নুসরাত। হানিফ পরিবহনের বাসটি শিবচরের সূর্যনগর এলাকায় পৌঁছালে একটি ট্রাকের সঙ্গে বাসটির সংঘর্ষে দুর্ঘটনায় নুসরাতসহ চারজন নিহত হন। আহত হন নুসরাতের স্বামী ও সন্তান। তারা বর্তমানে তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

তিনি আরও জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নুসরাতের বাবা এখনো জানেন না তার একমাত্র মেয়ে আর বেঁচে নেই। এ ছাড়া তার স্বামীকেও জানানো হয়নি স্ত্রীর মৃত্যুর সংবাদ।

এ ঘটনায় নিহত নুসরাতের বাবা বাড়ি বাউফলের পাতিলাপাড়ায় স্বজনদের মাঝে শোকের মাতম চলছে।

নয়া শতাব্দী/এসআর