ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

আল্লাহর জন্য ভালোবাসার মাহাত্ম্য

প্রকাশনার সময়: ০৭ মার্চ ২০২৪, ০৭:২৮

মুমিনগণ পরস্পর ভাই ভাই। (সুরা হুজুরাত: ৪৯/১০)। তারা একে অপরকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসবে এটা ঈমানের অন্যতম দাবি। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য মুসলমানদের পারস্পরিক ভালোবাসার অনেক ফজিলত রয়েছে। এসবের কয়েকটি নিম্নরূপ—

(১) ঈমানের স্বাদ পাওয়া যায়: আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যার মধ্যে তিনটি গুণ বিদ্যমান, সে ঈমানের স্বাদ পাবে— (ক) যে আল্লাহ ও তার রাসূলকে সর্বাধিক ভালোবাসে, (খ) যে একমাত্র আল্লাহরই জন্য কাউকে ভালোবাসে এবং (গ) আল্লাহ যাকে কুফরি থেকে মুক্তি দিয়েছেন, সে কুফরিতে ফিরে যাওয়াকে ঐরূপ অপছন্দ করে, যেরূপ অপছন্দ করে আগুনের মধ্যে নিক্ষেপ হওয়াকে’। (বুখারি: ৫৮২৭; মুসলিম: ৯৪)।

(২) শিরক থেকে রক্ষা : মুশরিকরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যকে আল্লাহর মতো ভালোবাসে। ফলে তারা আল্লাহর জন্য ভালোবাসার নেয়ামত থেকে দূরে থাকে। অপরদিকে মুমিনগণ আল্লাহর জন্য একে অপরকে বেশি ভালোবাসে। আল্লাহ বলেন, ‘আর মানুষের মধ্যে কিছু লোক এমন রয়েছে, যারা অন্যকে আল্লাহর সমকক্ষ সাব্যস্ত করে। তারা তাদের ভালোবাসে আল্লাহকে ভালোবাসার মতো। কিন্তু যারা ঈমানদার তারা আল্লাহর জন্য সর্বাধিক ভালোবাসা পোষণ করে থাকে। আর জালিমরা (মুশরিকরা) যদি জানত যখন তারা আজাবকে প্রত্যক্ষ করবে যেসব ক্ষমতা আল্লাহর জন্য এবং আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা (তাহলে তারা শিরকের অনিষ্টকারিতা ব্যাখ্যা করে দিত)’ (সুরা বাকারা: ২/১৬৫)।

(৩) আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ : কোনো মুসলমানকে ভালোবাসার কারণে তার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের ফলে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘এক ব্যক্তি তার কোনো (মুসলমান) ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য অন্য গ্রামে রওয়ানা হয়, পথে আল্লাহ তার জন্য একজন ফেরেশতা বসিয়ে দেন। অতঃপর তিনি এ কথা পর্যন্ত হাদিস বর্ণনা করেন যে, (ফেরেশতা তাকে বলেন) নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাকে এরূপ ভালোবাসেন, যেরূপ তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাস’। (মুসলিম: ২৫৬৭)।

(৪) আল্লাহর সাহায্য লাভ: আল্লাহর জন্য কোনো মুমিনকে ভালোবেসে তার কোনো সাহায্যে এগিয়ে এলে আল্লাহ তার জন্য অনুরূপ সাহায্য নিয়ে হাজির হন। রাসূল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের দুনিয়াবি বিপদগুলোর কোনো বিপদ দূর করে দেবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার (কঠিন) বিপদগুলোর কোনো একটি বিপদ দূর করে দেবেন। যে ব্যক্তি কোনো অভাবগ্রস্ত লোকের অভাব সহজ করে দেবে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখেরাতে তার অভাব সহজ করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ-ত্রুটি গোপন করে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখেরাতে তার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবেন। আল্লাহ তার বান্দাদের ততক্ষণ পর্যন্ত সহযোগিতা করেন যতক্ষণ সে তার অপর ভাইয়ের সাহায্যে রত থাকে’। (মুসলিম: ২৬৯৯)।

(৫) আল্লাহর ভালোবাসা লাভ: কোন মুমিনকে ঈমানের কারণে ভালোবাসলে আল্লাহ তাকে ভালোবাসবেন। বারা বিন আযিব (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) আনসারদের সম্পর্কে বলেছেন, ‘তাদেরকে কেবল মুমিনই ভালোবাসে এবং তাদের প্রতি কেবল মুনাফিকরাই বিদ্বেষ রাখে। যে ব্যক্তি তাদের ভালোবাসে, আল্লাহ তাকে ভালোবাসেন। আর যে ব্যক্তি তাদের প্রতি বিদ্বেষ রাখবে, আল্লাহ তার প্রতি বিদ্বেষ রাখবেন’। (মিশকাত: ৬২০৭)।

আবু ইদ্রীস খাওলানি (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য যারা পরস্পরের মধ্যে মহব্বত রাখে, একে অপরের সঙ্গে বসে, একে অপরের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং একে অপরের জন্য খরচ করে, তাদের জন্য আমার মহব্বত ও ভালোবাসা ওয়াজিব হয়ে যায়’। (তিরমিযি: ৫০১১)।

(৬) একে অপরের ভালোবাসা আল্লাহর বড় নেয়ামত: এ ভালোবাসা আল্লাহর পক্ষ থেকে বড় নেয়ামত। আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা তোমাদের ওপর আল্লাহর সেই নেয়ামতের কথা স্মরণ কর, যখন তোমরা পরস্পরে শত্রু ছিলে। অতঃপর আল্লাহ তোমাদের অন্তরগুলোয় মহব্বত পয়দা করে দিলেন। অতঃপর তোমরা তার অনুগ্রহে পরস্পরে ভাই ভাই হয়ে গেলে।’ (সুরা আলে ইমরান: ৩/১০৩)।

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সমস্ত রুহ সেনাবাহিনীর মতো একত্রিত ছিল। সেখানে তাদের যেসব রুহের পরস্পর পরিচয় ছিল, এখানেও তাদের মধ্যে পরস্পর মতভেদ ও বিরোধ থাকবে’। (বুখারি: ৩৩৩৬; মুসলিম: ২৬৩৮)।

(৭) ঈমানের পূর্ণতা লাভ: আবু ইমামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবাসে, আর আল্লাহর জন্য কারও সঙ্গে বিদ্বেষ পোষণ করে এবং আল্লাহর জন্যই দান-খয়রাত করে আবার আল্লাহর জন্যই দান-খয়রাত থেকে বিরত থাকে সে যেন ঈমান পূর্ণ করল’। (আবুদাউদ, মিশকাত: ৩০)।

(৮) আল্লাহর জন্য একে অপরকে ভালোবাসা সাহাবিদের বৈশিষ্ট্য: সাহাবিদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন, ‘মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল এবং যরা তার সাথি তারা কাফেরদের ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর। কিন্তু নিজেদের মধ্যে পরস্পরে রহমদিল।’ (সুরা ফাতাহ: ৪৮/২৯)।

(৯) আল্লাহর পক্ষ থেকে সম্মান লাভ: আল্লাহর জন্য অন্য ভাইকে ভালোবাসলে আল্লাহ তাকে সম্মানিত করেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘কোন বান্দা অন্যকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে ভালোবাসলে, তার রব তাকে সম্মানিত করেন’। (আহমাদ: ২২২৮৩)।

(১০) কিয়ামতের দিন আরশের নিচে স্থান লাভ: যেদিন মানুষ নগ্ন দেহে দাঁড়াবে এবং নিজের ঘামের মধ্যে হাবুডুবু খাবে। সেদিন যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একে অপরকে ভালোবেসেছিল তারা আল্লাহর আরশের ছায়ার নিচে থাকবে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা কিয়ামতের দিন বলবেন, আমার মহিমা ও শ্রেষ্ঠত্বের জন্য পরস্পরকে যারা ভালোবেসেছিল তারা কোথায়? আজ আমি তাদের ছায়া দিব আমার ছায়াতলে, যেদিন কোনো ছায়া নেই আমার ছায়া ব্যতীত’। (মুসলিম: ২৫৬৬)।

আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত অন্য হাদিসে আছে, আল্লাহ সাত শ্রেণির লোককে তাঁর সুশীতল ছায়াতলে স্থান দেবেন, যেদিন তাঁর ছায়া ব্যতীত আর কোনো ছায়া থাকবে না। তাদের একশ্রেণি হলো ওই দুই লোক যারা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই একে অপরকে ভালোবাসে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়’। (বুখারি: ১৪২৩)।

(১১) আখিরাতে উচ্চ মর্যাদা লাভ: রাসুল (সা.) বলেন, মহাসম্মানিত পরাক্রমশালী আল্লাহ বলেন, ‘আমার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে যারা পরস্পরকে ভালোবাসে, তাদের জন্য (পরকালে) থাকবে নুরের মিম্বর, যা দেখে নবী ও শহিদরা তাদের ঈর্ষা করবেন’। (তিরমিযি: ২৩৯০)।

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর বান্দাদের মাঝে এমন কিছু লোক আছে যারা নবী নন এবং শহিদও নন। কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহর দরবারে তাদের মর্যাদার কারণে নবীগণ ও শহিদরা তাদের প্রতি ঈর্ষান্বিত হবেন। ছাহাবিরা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আমাদের অবহিত করুন, তারা কারা? তিনি বললেন, তারা ওইসব লোক যারা আল্লাহর মহানুভবতায় পরস্পরকে ভালোবাসে, অথচ তারা পরস্পর আত্মীয়ও নয় এবং পরস্পরকে সম্পদও দেয়নি। আল্লাহর শপথ! তাদের মুখমন্ডল যেন নুর এবং তারা নুরের আসনে উপবেশন করবে। তারা ভীত হবে না, যখন মানুষ ভীত থাকবে। তারা দুশ্চিন্তায় পড়বে না, যখন মানুষ দুশ্চিন্তায় থাকবে। তখন তিনি এ আয়াত তেলাওয়াত করলেন, ‘জেনে রাখ! আল্লাহর বন্ধুদের কোনো ভয় নেই এবং তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্তও হবে না’ (ইউনুস ১০/৬২)। (আবূদাঊদ: ৩৫২৭)।

(১২) কিয়ামতের দিন ব্যক্তি ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে থাকবে: কিয়ামতের কঠিন দিন আল্লাহর জন্য যারা একে অপরকে ভালোবেসেছে তারা পরস্পর একসঙ্গে শান্তিতে অবস্থান করবে। আল্লাহ বলেন, ‘বস্তুত যে কেউ আল্লাহ ও রাসুলের আনুগত্য করে, তারা নবী, সিদ্দীক, শহিদ ও সৎকর্মশীল ব্যক্তিদের সাথি হবে, যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন। আর এরাই হলেন সর্বোত্তম সাথি।’ (সুরা নিসা: ৪/৬৯)। (আবুদাউদ: ৩৫২৭)।

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী করিম (সা.)-কে জিজ্ঞেস করল, কিয়ামত কখন হবে? তিনি বললেন, তুমি কিয়ামতের জন্য কি জোগাড় করেছ? সে বলল, কোনো কিছু জোগাড় করতে পারিনি, তবে আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালোবাসি। তখন তিনি বললেন, ‘তুমি তাদের সঙ্গেই থাকবে যাদেরকে তুমি ভালোবাস। আনাস (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.)-এর কথার দ্বারা আমরা এত আনন্দিত হয়েছি যে অন্য কোনো কথায় এত আনন্দিত হইনি। আনাস (রা.) বলেন, আমি নবী করিম (সা.)-কে ভালোবাসি এবং আবু বকর, ওমর (রা.)-কেও। আশা করি তাদেরকে আমার ভালোবাসার কারণে তাদের সঙ্গে জান্নাতে বসবাস করতে পারব, যদিও তাদের আমলের মতো আমল আমি করতে পরিনি’। (বুখারি: ৩৬৮৮; মুসলিম: ২৬৩৯)।

আনাস ইবনু মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করিম (সা.)-এর সাহাবিদের একটি ব্যাপারে এতটা আনন্দিত দেখতে পেলাম যে, অন্য কোনো ব্যাপারেই এরূপ আনন্দিত হতে দেখিনি। তা হলো এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে তার সৎকাজের জন্য ভালোবাসে, কিন্তু সে তার মতো সৎকাজ করতে পারে না। রাসুল (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক ব্যক্তিই যাকে ভালোবাসে সে তার সাথি হবে’। (বুখারি: ৬১৬৯; মুসলিম: ২৬৪০)।

(১৩) একে অপরের সঙ্গে ভালোবাসা স্থাপনকারী ব্যক্তিদের চেহারা নুরানি হবে: কিয়ামতের দিন আল্লাহর জন্য পরস্পর ভালোবাসা স্থাপনকারী ব্যক্তিদেরকে মর্যাদা স্বরূপ নুরানি চেহারা দান করা হবে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ কিয়ামতের দিন এমন একদল লোকদের পুনরুত্থান করাবেন যাদের চেহারা হবে মণি-মুক্তার ওপর নুরানি, যাদের দেখে লোকেরা ঈর্ষা করবে অথচ তারা নবীও নন শহিদও নন। ... অতঃপর সে (সাহাবি) বলল, হে আল্লাহর রাসুল! তাদের বৈশিষ্ট্য বলুন, যাতে আমরা তাদের চিনতে পারি। রাসুল (সা.) বললেন, তারা বিভিন্ন গোত্রের যারা আল্লাহর জন্য পরস্পরকে ভালোবাসতেন এবং তারা বিভিন্ন দেশের যারা আল্লাহকে স্মরণ করার জন্য একত্রিত হতেন’। (আত-তারগীব: ১৫০৯)।

(১৪) জান্নাত লাভের মাধ্যম: আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবাসা, তাঁর সন্তুষ্টির জন্য কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ করা জান্নাত লাভের অন্যতম মাধ্যম। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমি কি তোমাদেরকে জান্নাতবাসীদের সম্পর্কে খবর দিব না? নবী জান্নাতি, শহিদ জান্নাতি, ছিদ্দীক জান্নাতি, নবজাতক জান্নাতি, আর ওই ব্যক্তিও জান্নাতি যে তার ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে’। (সহিহুল জামে: ২৬০৪)।

সুতরাং এক মুসলমান অপর মুসলমানকে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ও কিয়ামতের দিন শান্তি পাওয়ার জন্য সর্বোপরি জান্নাত লাভের আশায় ভালোবাসবে। এ ভালোবাসা যেন দুনিয়াবি স্বার্থে ব্যাহত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মুমিনের ভুল-ত্রুটির প্রতি লক্ষ না করে তার ভালো কাজগুলোর প্রতি খেয়াল করতে হবে, আর ভুলগুলো সংশোধনের জন্য সাধ্যানুযায়ী, মার্জিত ভাষায় শরিয়তের নির্দিষ্ট পন্থা অনুযায়ী চেষ্টা করতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর কাছে তার হেদায়াতের জন্য দোয়া করতে হবে।

নয়া শতাব্দী/আরজে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ