ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

শীতে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার সহজ উপায়

প্রকাশনার সময়: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:২২ | আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮:৫৪

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ডায়েট কিরছি অথবা টাইপ-২ ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন। শীতকাল আসলেই অনেকটাই দুশ্চিন্তায় পড়েন তারা। শীতে এমনিতেই শারীরিক কাজ কমে যায়। শীতে নানান ধরনের সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানও বেড়ে যায়। বাঙালির দাওয়াত মানেই পেট পুরে খাওয়া। এ ছাড়া শীত মানেই পিঠাপুলি সময়। তাই শীতকালে ওজন বেড়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক।

এতে অনেকে ভয়ে থাকেন শীতকাল আসলেই বুঝি আমার ওজন বেড়ে গেল কিংবা ডায়েট করছি এই সময় আমি কিভাবে শীতের পিঠা খাব? কিংবা এত দাওয়াত খেয়ে কিভাবে এত তাড়াতাড়ি ওজন মেইনটেইন করব অর্থাৎ শীতকালে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা নিয়ে অনেকেই খুব বেশি টেনশনে পড়ে যান। তবে কিছু বিষয় মেনে চললে বা খেয়াল রাখলে শীতকালেও ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

জেনে নিন শীতকালে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন যেভাবে-

১/ শীতকালে আরামের ঘুম থেকে উঠতে ইচ্ছে করে না অনেকেরই তাই শীতকালে সকালে হাঁটার পরিবর্তে বিকেলে কিংবা সন্ধ্যায় হাঁটতে পারেন। সকালের নাস্তার পরে সকাল ১০টা কিংবা ১১টার দিকে যদি ২০ থেকে ৩০ মিনিট হাঁটতে পারেন তাদের শারীরিক পরিশ্রমের পাশাপাশি ভিটামিন ডি ও পর্যাপ্ত পরিমাণে পেতে পারেন। শীতকালে অনেকে আবার ব্যাডমিন্টন খেলতে পারেন, বিকেলে কিংবা সন্ধ্যায় ৩০ থেকে ৪০ মিনিট যদি ব্যাডমিন্টন অথবা লন টেনিস জাতীয় খেলাধুলা করতে পারেন তাহলেও কিন্তু শারীরিক পরিশ্রম হবে। এতে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

শীতকাল মানেই পিঠা পুলির সময়। শীতকালে পিঠা-পায়েস খেতে কার না ভালো লাগে। তবে অনেকেই ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়ে পিঠা-পায়েস খাওয়া থেকে পুরোপুরিভাবে বিরত থাকেন। তাদের উদ্দেশ্যে বলছি ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়ে নিজেকে বঞ্চিত না করে পরিমিত পরিমাণে সকালের নাস্তার পরিবর্তনে খেলে খুব একটা সমস্যা হবে না কিংবা রাতের খাবারের পরিবর্তনে মুররির মাংস দিয়ে চিতই পিঠা, খোলাজা পিঠা কিংবা চালের রুটি পরিমাণ মতো খাওয়া যেতে পারে।

৩/ শীতকালীন সবজির বিকল্প নাই। শীতকালের সবজিগুলো দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও তেমন সুস্বাদু। তাই এই সুস্বাদু ও পুষ্টি কর মজাদার সবজিগুলো দিয়ে পরিমিত পরিমাণে সবজি খিচুড়ি, সবজি ওটস খিচুড়ি, সবজি স্যুপ, সালাদ খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। এতে ভাজা পোড়া জাতীয় খাবার খেয়ে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।

৩/ শীতকাল আসলেই দাওয়াতের ধুম পড়ে যায়। বাঙালিদের আচার-অনুষ্ঠান বা দাওয়াত মানে খাওয়া-দাওয়ার বিশাল আয়োজন থাকবেই। তাই যারা বাড়তি ওজন নিয়ে টেনশনে আছেন তারা খাবারের মান ও পরিমাণ দিকে খেয়াল রাখবেন। যতই দাওয়াত থাকুক আপনি পরিমিত পরিমাণে খাবার গ্রহণ করবেন, এক্ষেত্রে একটি ছোট্ট টিপস হলো যেদিন আপনার ডিনারের দাওয়াত থাকবে, সেদিন আপনার ডিনার হাফ ডান করে যেতে পারেন। এতে করে আপনি চাইলেও বেশি পরিমাণে খেতে পারবেন না।

রাতে দাওয়াত থাকলে সেদিন আপনি দুপুর বেলা সালাত অথবা শুধুমাত্র স্যুপ কিংবা সালাদ খেতে পারেন এতে করে সারা দিনের ক্যালরির পরিমাপ ঠিক থাকবে। কিংবা দুপুরে দাওয়াত থাকলে দুপুরে ভারী খাবার হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে রাতে এক গ্লাস লো ফ্যাট মিল্ক কিংবা এককাপ টকদই অথবা শুধুমাত্র এক কাপ ভেজিটেবল স্যুপ খেতে পারেন। এতে করে আপনি দাওয়াতও উপভোগ করলেন এবং বাড়তি ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়ও থাকলো না।

৪/ শীতকাল আসলে আমাদের সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় তা হলো পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা হয় না। এতে করে শারীরিক নানান ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। শরীরে হাইড্রেট হয়ে যায় এবং নানান ধরনের ইউরিন ইনফেকশনসহ ইউরিনারি ট্র্যাকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। এ ছাড়া গরম গরম দুধ কিংবা টক দইয়ের শরবত খেলে পানির চাহিদাটা অনেকাংশে পূরণ হয়। শীতকালে ভুনা তরকারির পরিবর্তনে একটু ঝোল জাতীয় তরকারি যদি খাওয়া হয়, এতে শরীরে পানির চাহিদা পূরণ হয় খুব সহজে।

ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়ে শীতকালটা উপভোগ করা থেকে নিজেকে বঞ্চিত করবেন না। তাই শীতে নিয়ম মেনে চলে এবং সুষম খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে এবং পরিমিতভাবে পিঠা পুলি খেলেও ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে ইনশাল্লাহ।

লেখক- ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিষ্ট অ্যান্ড ডায়েটিশিয়ান, উত্তরা ক্রিসেন্ট হসপিটাল, ঢাকা

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ