ঢাকা, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ৯ জিলকদ ১৪৪৫
কর্মকর্তার তোপে অতিষ্ঠ রুয়েট

প্রভাব খাটিয়ে চাকরি, জালিয়াতি করে পদোন্নতি 

প্রকাশনার সময়: ০৪ মে ২০২৪, ১৯:৪১

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) পরিষদ শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার শাহ মো. আল বেরুনী ফারুক। সম্প্রতি এক রাজাকারের শ্যালক ও বিএনপি নেতার ভাইয়ের পক্ষ নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে।

অভিযুক্ত শাহ মো. আলবেরুনী ফারুক মোহনপুর উপজেলার সইপাড়া গ্রামের মো. আব্দুস ছামাদ শাহর ছেলে। তিনি এর আগেও নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে খবরের শিরোনাম হয়েছেন। তার মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েও প্রভাব খাটিয়ে রুয়েটে চাকরি বাগিয়ে নেয়া, অধিপত্য বিস্তারে ক্যাম্পাসে বিভক্তি সৃষ্টি, নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে অশালীন আচরণসহ জালিয়াতির মাধ্যমে চাকরিতে পদোন্নতি অন্যতম। তার এসব কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে রুয়েট। এবার, রুয়েটে ভুয়া তথ্য দিয়ে ও জালিয়াতির মাধ্যমে নিজের পদোন্নতি বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে শাহ মো. আলবেরুনী ওরফে ফারুকের বিরুদ্ধে। যার তথ্য ও প্রমাণ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

প্রভাব খাটিয়ে নিয়োগ- রুয়েটে ২০১২ সালের সার্কুলারে পিএস টু ভিসি পদে একজনকে নিয়োগের কথা বলা হয়। সে অনুসারে ৩৩ জন প্রার্থীর লিখিত পরীক্ষায় নেন। এই পরীক্ষায় কৃতকার্যদের নিয়ে মৌখিক পরীক্ষার জন্য তালিকা প্রকাশ করা হলে সেখানে আলবেরুনী ফারুকের নাম ছিল না। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই লিখিত পরীক্ষার ফলাফল বাতিল করে শুধুমাত্র মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে তাকে নিয়োগ দিতে ছাত্রলীগের ক্যাডারদের নিয়ে তৎকালীন উপাচার্যের দপ্তর ঘেরাও করে রাখেন তিনি। এছাড়া নানাভাবে হুমকি ও চাপ দিলে আলবেরুনী ফারুককে চাকরি দিতে বাধ্য হন তৎকালীন উপাচার্য ড. সিরাজুল করিম চৌধুরী।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ‍তৎকালীন ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী বলেন, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা হওয়ায় আবেগের বশবর্তী হয়ে ন্যায়-অন্যায় বিবেচনা না করেই ওই সময় তাকে চাকরি পেতে সহযোগিতা করেছিলাম। কিন্তু অযোগ্য লোককে চাকরিতে সহযোগিতা করায় বর্তমানে আমরা অনুতপ্ত।

বাণিজ্য ও ঠিকাদারিতে আধিপত্ত্ব বিস্তার : পিএস টু ভিসি পদে চাকরি নিয়েই নিয়োগ বাণিজ্য ও ঠিকাদারিতে আধিপত্য বিস্তারে মরিয়া হয়ে উঠেন আলবেরুনী ফারুক। কিন্তু এক্ষেত্রে তৎকালীন উপাচার্য ড. সিরাজুল করিম চৌধুরীর সহযোগিতা না পেয়ে ও নিয়োগ দিতে শুরুতে অস্বীকৃতি জানানোর জেরে তার বিরুদ্ধে আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন তিনি। আন্দোলনের মুখে ড. সিরাজুল ইসলামকে অব্যাহতি দিয়ে ড. মর্তুজাকে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর উপাচার্য ড. মর্তুজার নাম ভাঙ্গিয়ে ও প্রভাব খাটিয়ে নিয়োগ বাণিজ্য, ঠিকাদারিসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন তিনি।

অভিযোগ রয়েছে, রুয়েটের প্রকৌশল দপ্তরে সহকারী প্রকৌশলী পদে যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও আলবেরুনী ফারুকের যোগসাজশে সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মোতাহার হোসেনকে বাদ দেয়া হয়। পরে সেই পদে অনৈতিকভাবে রুয়েট ছাত্রশিবিরে প্রধান পৃষ্টপোষক ও শিবির নেতা মো. আহসান হাবীবকে নিয়োগ দেয়া হয়। একইসঙ্গে রাজাকারের ছেলেকে চাকরি দেয়ার অভিযোগেও ওই নিয়োগ ব্যাপক সমালোচিত হয়। এছাড়া বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বলকে ঠিকাদারী কাজ পেতে সহযোগিতা করেন আলবেরুনী ফারুক। এসব অপকর্মের জন্য ইতোপূর্বে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হাতে লাঞ্ছিতও হয়েছিলেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আলবেরুনী ফারুকের এসব অপকর্মের দায় তৎকালীন উপাচার্য ড. মর্তুজার কাঁধেও পড়ে। ফলে এসব অভিযোগে ইউজিসি গঠিত তদন্ত কমিটিতে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. মর্তুজাও অভিযুক্ত হলে তাকে অব্যাহতি দিয়ে রফিকুল ইসলাম বেগকে উপাচার্য করা হয়।

অনিয়ম ও জালিয়াতির মাধ্যমে পদোন্নতি: রফিকুল ইসলাম বেগ উপাচার্য হলে কৌশলে তারও ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেন আলবেরুনী ফারুক। ঘনিষ্ঠতার সুযোগে মাত্র দেড় বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা নিয়ে সহকারী রেজিস্ট্রার পদ বাগিয়ে নেন তিনি। অথচ এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে কমপক্ষে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা বাধ্যতামূলক বলে জানানো হয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, একটি সহকারী রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগের জন্য ২০১৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। এতে ২০১৪ সালের ২০ জানুয়ারি আবেদনের শেষ সময় বেধে দিয়ে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে প্রশাসনিক/একাডেমিক/পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজে কর্মকর্তা হিসেবে কমপক্ষে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়। কিন্তু মাত্র ১ বছর ১০ মাসের চাকরির অভিজ্ঞতা নিয়েই ওই পদে আবেদন করেন আলবেরুনী ফারুক। এছাড়া পিএস টু ভিসি পদে চাকরিতে প্রবেশের আবেদনে তার কোনো অভিজ্ঞতা দেখানো ছিল না। ফলে আবেদনে অভিজ্ঞতার ছকটি আড়াআড়িভাবে কাটা ছিল। এমনকি চাকরিতে যোগদানের আগে পুলিশ প্রত্যায়ন ফরমেও অভিজ্ঞতার কোনো অস্তিত্ব ছিল না। পরবর্তীতে অসৎ সুযোগ লাভের লক্ষ্যে ওই আবেদনপত্রটি ঘষামাজা করে কাটা ওই ছকের মধ্যেই একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরির অভিজ্ঞতার কথা লিখা হয়, যা স্পষ্টত জালিয়াতি।

আরও জানা যায়, শাহ মো. আলবেরুনী ফারুক সহকারী রেজিস্ট্রার পদে পদন্নতি পেতে আবেদনের সঙ্গে ১ জুন ২০০৫ থেকে ৩১ জুলাই ২০১১ পর্যন্ত একটি প্রতিষ্ঠানে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে চাকরির অভিজ্ঞতা সনদ যুক্ত করেন। অথচ এই সময়ে তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্বে থাকায় ঢাকায় অবস্থান করতেন। এছাড়া ২০০৮ সাল থেকে প্রায় দুই বছর তিনি রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলমের পিএ হিসেবে ছিলেন এবং তার মাধ্যমে এসময় নিজের স্ত্রীকে চাকরিতে ঢুকান বলেও জানা গেছে। ফলে প্রায় ৬ বছর ২ মাস চাকরি করার এই অভিজ্ঞতা সনদ নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু তার বিতর্কিত এই সনদের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়াটিও প্রভাব খাটিয়ে বন্ধ রাখা হয়। শুধু তাই নয়, ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে আপগ্রেডেশন বা পদোন্নয়ন পেতে সদ্য বিদায়ী উপাচার্য রফিকুল ইসলাম সেখের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন আলবেরুনী ফারুক। পরে বাধ্য হয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে তাকে পদোন্নতি দেন তিনি। অথচ রুয়েট চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে আপগ্রেডেশনের জন্য সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্বাশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরির ন্যূনতম অভিজ্ঞতা ১১ বছর প্রয়োজন হলেও ২০২১ সালে মাত্র ৯ বছর ৯ মাসের অভিজ্ঞতা নিয়েই পদটি বাগিয়ে নেন আলবেরুনী ফারুক। এমনকি উপাচার্যকে চাপে রেখে ওই সময় তার শ্যালককে চাকরি দিতেও বাধ্য করেন তিনি।

'আকস্মিক পরিদর্শন কমিটি'র সাথেও অশালীন আচরণ : নানা অপকর্মে জড়িয়েও শাস্তির আওতায় না আসায় আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন আলবেরুনী ফারুক। এতে বিভিন্ন সময় রুয়েটের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে তার অশালীন আচরণ তার নিত্য নৈমিত্যিক ঘটনায় পরিণত হয়। এরই অংশ হিসেবে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে রুয়েটের শুদ্ধাচার কৌশল পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত 'আকস্মিক পরিদর্শন কমিটির সাথেও অশালীন আচরণ করেন তিনি। এ বিষয়ে রেজুলেশনে উল্লেখ করা হলে তাতে স্বাক্ষর করেন তৎকালীন অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য ও পরিদর্শন কমিটির সভাপতি ড. সাজ্জাদ। কিন্তু অভিযুক্ত ফারুকের বিষয়ে অদৃশ্য কারণে কোনোরুপ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এতে ওই পরিদর্শন কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দসহ শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা সমিতি চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

এছাড়াও, চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার নামে গত বছর ১৮ এপ্রিল থেকে ১৭ মে পর্যন্ত ছুটি নেন আলবেরুনী ওরফে ফারুক। কিন্তু ছুটিতে থাকা অবস্থায় ১২ মে সকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে না জানিয়েই রুয়েটে অনুষ্ঠিত রাজশাহী ওয়াসার নিয়োগ পরীক্ষার ডিউটিতে অংশ নেন তিনি। ছুটিতে থাকাকালীন অসৎ উদ্দেশ্যেই কাউকে না জানিয়ে হঠাৎ নিয়োগের মত গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষার ডিউটিতে অংশ নেন ।

এ বিষয়ে তৎকালীন উপাচার্য ড. সিরাজুল করিম চৌধুরীর সাথে যোগযোগ করেও তাকে পাওয়া যায় নি। তিনি অসুস্থ থাকায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও সহকারী রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে রুয়েটের সাবেক ভিসি রফিকুল ইসলাম বেগ বলেন, এতো আগের খবর আমি বলতে পারব না। এটা একটি কমিটি করে দেওয়া হয় তারা যাচাই বাছাই করে সেটির জন্য রেজিস্ট্রার দপ্তরে সুপারিশ করে। আমি এগুলো দেখি না। আর এই বিষয়ে বলতেও পারব না। আমার আমলের রেজিস্ট্রারের সাথেই যোগাযোগ করেন তিনিই ভালো বলতে পারবেন।

রুয়েটের সাবেক রেজিস্ট্রার মোশারফ হোসেনের সাথে মুঠোফনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও নিয়ম না মেনে ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে আপগ্রেডেশনের বিষয়ে জানতে সাবেক ভিসি রফিকুল ইসলাম শেখকে একাধিক বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে ওই সময়ের রেজিস্ট্রার ড. সেলিম হোসেন বলেন, এটি কীভাবে হয়েছে এখন বলা সম্ভবন নয়। তবে আপনারা যেহেতু বলছেন আমি এটি বর্তমান রেজিস্ট্রারের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে আপনাদের জানাতে পারবো। আমি খোঁজ নিয়ে জানাবো।

এ বিষয়ে বর্তমান রেজিস্ট্রার আরিফ আহম্মেদ চৌধুরী বলেন, যদি কোনো তথ্য গোপন করে বা পরে কাঁটাছেড়া করে তবে সেটি ফৌজদারী অপরাধ। এছাড়াও তার সহকারী রেজিস্ট্রার পদের অভিজ্ঞতা রুয়েটের নিয়োগ সংক্রান্ত নীতিমালা অনুযায়ী হয়েছে। তবে সেই নীতিমালা রুয়েট পরিচালনা অধ্যাদেশে নেই। আমরা বিষয়গুলো তার কাছে জানতে চাইবো। তখন এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে। তবে তার ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে আপগ্রেডেশনের ক্ষেত্রে শিথিলতা করা হয়েছে। প্রতিটি পদেই তার জন্য শিথিলতা কেন জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে রুয়েটের উপাচার্য জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহ মো. আলবেরুনী ওরফে ফারুক বলেন, 'আমি প্রথম শ্রেণির চাকরি করছি ২০১২ সাল থেকে। আর ২০২২ সালে যদি আমার প্রমোশন হয় তাহলে গ্যাপ থাকলো কোথায়?' একজন উপাচার্য নিয়োগ দিয়েছেন। সহকারী রেজিস্ট্রার আর ডেপুটি রেজিস্ট্রার হয়েছি পৃথক দুই উপাচার্যের সময়। তাই এসব বিষয়ে তাদের প্রশ্ন করেন। আমি কিছু বলতে পারব না।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যারা এখানে কাজ করেন (অভ্যান্তরীন প্রার্থী) তাদের অভিজ্ঞতা শিথিল করার নিয়ম আছে। তাই, তারও অভিজ্ঞতা শিথিল করা হয়েছে।’ তবে শিথিলের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি এবং ডকুমেন্টস দিতে পারেননি।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ