ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

বালু উত্তোলনের আড়ালে চলছে মাদক কারবারি!

প্রকাশনার সময়: ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ২১:৪১

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ইছামতি নদী থেকে বালু উত্তোলনের আড়ালে চলছে রমরমা মাদক কারবারি। বালু উত্তেলনের ফলে নদীতে বিলীন হচ্ছে দেশের ভূখণ্ড। স্থানীয় শেখ সাব্বির আহমেদ ও কুদ্দুস গাজী গং বালু উত্তোলনের পাশাপাশি এই মাদকের রমরমা কারবারি চালাচ্ছেন।

সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানান, কালিগঞ্জ উপজেলার বিজিবি ক্যাম্প শোলপুর বিওপি হতে তিন কিলোমিটার দক্ষিণে ও শূন্য লাইন হতে দেড়শ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ইছামতি নদীর চকগোবিন্দপুর দমদমিয়া নামক স্থানে ও খানজিয়া ক্যাম্প থেকে ২শ গজ উত্তরে সীমান্ত শূন্য লাইন থেকে একশ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ইছামতি নদীর খানজিয়া নামক স্থানে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে শেখ সাব্বির আহমেদ ও কুদ্দুস গাজী ও তাদের সহযোগীরা বালু উত্তোলনের পাশাপাশি মাদকের রমরমা কারাবারি চালিয়ে যাচ্ছেন। এর ফলে স্থানীয় পরিবেশ-প্রতিবেশ হুমকির মুখে পড়ছে।

অন্যদিকে বালু উত্তোলনের আড়ালে মাদক কারবারিদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে এলাকার সাধারণ মানুষ। বিলীন হতে চলেছে বাংলাদেশের ভূখণ্ড, দেশ হারাচ্ছে সীমানা।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এই রুট নিরাপদে ব্যবহার করছে মাদক কারবারিরা। বালু ভর্তি কার্গো ও ট্রলার এবং বাল্ক হেডে করে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে নিয়ে আসছে কোটি কোটি টাকার ভারতীয় নিষিদ্ধ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য।

একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, ওই এলাকার দুটি বালুমহল বাতিলসহ তাদের অনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন ১৭ বিজিবি ও জেলা প্রশাসন।

এদিকে, ওই বালুমহলের স্বত্বাধিকারী শেখ সাব্বির আহমেদ ও কুদ্দুস গাজীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জমা পড়েছে। লাইসেন্সের স্বত্বাধিকারী শেখ সাব্বির আহমেদ তার বাবা ইয়াসিন আলির নামে নাজিমগঞ্জ বাজারের বিপরীতপাশে কালিগঞ্জ পুরাতন বাজার নদী সংলগ্ন একটি (আফগারি) মদের লাইসেন্সের দোকান আছে। সাব্বির আহমেদের নামে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক কাযার্লয় থেকে তার নামে বালুমহলের লাইসেন্স রয়েছে। বালুমহল ডাকার জন্য সাব্বির আহমেদের নামে ডাক থাকলেও ব্যবসা চালায় কুদ্দুস গাজী ও হাতকাটা রনি।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত চুক্তি ১৯৭৫ অনুযায়ী সীমান্তে শূন্য রেখা হতে ১৫০গজের মধ্যে এ ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ডেজার মেশিনের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলনের কারণে ইছামতি নদীর আশেপাশের এলাকায় এবং বেড়িবাধের ক্ষয়ক্ষতি ও হুমকির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

এদিকে, বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে নদী হতে বালু উত্তোলনের ফলে বেড়িবাধ ভাঙছে। চলাচল করতে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছে এবং সীমান্ত এলাকায় বিজিবি অপারেশনাল কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনা ব্যাহত হচ্ছে। অন্যদিকে নদীর গভীরতা বৃদ্ধি পেয়ে নদীর স্রোতের দিকে পরিবর্তন হওয়ায় বেড়িবাধ ভেঙে যাচ্ছে। নদীর পাড় ভাঙ্গনের ফলে ভারতের পার্শ্ব চর সৃষ্টি হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক সীমারেখা হারিয়ে যাচ্ছে।

ইছামতি নদীর পাড় ভেঙে বাংলাদেশের জমি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার ফলে সীমান্ত শূন্য রেখা বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে এবং বাংলাদেশের ভূখণ্ড হ্রাস পাচ্ছে। জনসাধারণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।

স্থানীয় বিজিবি টহল দল কর্তৃক প্রতিপক্ষের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ ও অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনায় অসুবিধা সৃষ্টি হচ্ছে। যে কারণে বিজিবিসহ স্থানীয় জনসাধারণের দুর্ভোগ এবং আশেপাশে এলাকার ও স্থাপনা সমুহের সম্ভাব্য সকল হুমকি ও ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার জন্য বিষয়টি বিবেচনা করে জরুরি ভিত্তিতে বালু উত্তোলন বন্ধ ও বাতিলের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বিভিন্ন দপ্তরে বর্ডার গার্ড বিজিবির পক্ষ থেকে ও স্থানীয়ভাবে এবং প্রশাসনিকভাবে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ