ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

হোসেনপুর পৌর এলাকায় যত্রতত্র ময়লার ভাগাড়, অতিষ্ঠ পৌরবাসী

প্রকাশনার সময়: ০৯ মার্চ ২০২৪, ১৯:০০

হোসেনপুর পৌর এলাকায় যত্রতত্র ময়লার ভাগাড়। পরিচ্ছন্নতা কর্মী খাতা কলমে ২৪ জন থাকলেও কাজ করেন ৫ জন। ২০০৬ সালে ৫.৪৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত পৌরসভাটি ২০১৬ সালে ’বি’ গ্রেডে উন্নীত হয়। কিন্ত দীর্ঘ ১৮ বছরেও সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবে পৌরবাসী পরিচ্ছন্নতার সুফল পায়নি। দুই মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়া বর্তমান মেয়র আব্দুল কাইয়ুম খোকন। দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার আগে যদিও তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিলেন ফের মেয়র পদে নির্বাচিত হলে ডামিং স্টেশন স্থাপনসহ আধুনিক বর্জ্যব্যস্থাপনার ব্যবস্থা করবেন। দ্বিতীয় মেয়াদের ২ বছর অতিবাহিত হলেও কাজের কাজ কোনো কিছুই হয়নি বরং নিত্য দিনের ময়লা ফেলা হচ্ছে উন্মুক্ত স্থানে।

ময়লা ফেলার জন্য দুটি ভার্গার ট্রাক থাকলেও একটি ব্যবহার করা হয়; আরেকটি খোলা জায়গায় দীর্ঘদিন যাবৎ ফেলে রাখায় সেটিও নষ্ট হয়ে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে রয়েছে। পৌর এলাকাটি ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত হলেও অধিকাংশ এলাকাই এখনো গ্রামই রয়ে গেছে। কিন্তু পৌর এলাকার মধ্যে বাজারের অবস্থান ৮,৭, ১, ২, ৩ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বেশির ভাগ অংশই বাজার সংশ্লিষ্ট ও আবাসিক এলাকা হওয়ায় সেখানকার ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গায় কোনো ডাস্টবিনই নেই। যে জন্য বাসাবাড়ি ও দোকান-পাটের ময়লাগুলো প্রতিদিন উন্মুক্ত স্থানে ফেলে রাখা হয়; যা পরদিন সকাল ৮টার পর একটি পিকআপ গাড়িতে ৪-৫ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী উন্মুক্ত স্থানে ফেলে রাখা ময়লাগুলো নিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে ফেলে নদ ভরাট করছে। অন্য দিকে নদের পানি নষ্ট করে পরিবেশ বিনষ্ট করা হচ্ছে।

পৌর এলাকায় বসবাস করা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ মূল সড়কের শুধুমাত্র হাসপাতাল চৌরাস্তা থেকে মিষ্টিপট্রি পর্যন্ত ৫০০-৬০০ ফুট রাস্তা একজন ঝাড়ুদার রাতে ঝাড়ু দিয়ে থাকেন। এছাড়া বাকি রাস্তায় ঝাড়ু না দেওয়ার কারণে ধুলাবালু রাস্তায় জমে হাঁটু পর্যন্ত থাকলেও সেগুলো পরিষ্কার করা হয় না। যে জন্য রাস্তার ধুলোবালু অনেক সময় ব্যবসায়ীগণ তাদের দোকানের সামনের অংশ নিজ উদ্যোগে পরিষ্কার করে থাকেন। রাস্তায় ধুলোবালু অল্প বৃষ্টিতে কাঁদার সৃষ্টি হয়ে পানি প্রবাহের পথ বন্ধ করে দুর্বাঘাস গজিয়ে রয়েছে। যে জন্য শহর প্রকল্পের আওতায় রাস্তাগুলো ড্রেনের পানি জমে রাস্তাগুলো ড্যামেজ হয়ে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে যাচ্ছে।

সরেজমিনে কথা হয় কুড়িঘাট বধ্যভূমি এলাকার ব্যবসায়ী মা কসমেটিকস এর মালিক মো. রুহুল আমিন, আশরাফ পেপারের মালিক অবসর প্রাপ্ত সৈনিক আশরাফ আহমেদ, নতুন বাজার ফল ব্যবসায়ী মো. লাল মিয়া, কেন্দ্রীয় ঈদগা সংলগ্ন হোটেল ব্যবসায়ী মো. মানিক মিয়াসহ অন্তত ২০ জন ব্যবসায়ীর সাথে। তাদের অভিযোগ, হোসেনপুর নতুন বাজার থেকে হাসপাতাল চৌরাস্তা পর্যন্ত এ রাস্তাটি পৌর এলাকার মূল সড়ক হলেও এখান দিয়ে কোনো দিন ঝাড়ু দিতে দেখেননি তারা। এ রাস্তা দিয়ে বালুবাহী লরি ট্রাক, বাসসহ ছোট বড় অসংখ্য গাড়ি চলাচল করায় শুকনো মৌসুমে ধুলোবালির কারণে শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ সমস্যা হচ্ছে।

২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শাহজাহান আলম কাজলের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ক্ষেপে গিয়ে বলেন, মেয়র কোনো ঝাড়ুদার নিয়োগ না দিলে আমাদের কী করার আছে?

৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. লুৎফুর রহমান রাসেলের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে মেয়রের সাথে কথা বলতে হবে।

প্যানেল মেয়র নাজমুল হক লিমন বলেন, বৃষ্টির আগেই ড্রেনগুলো পরিষ্কার করা জরুরি। প্রতিদিনের পৌর এলাকার ময়লা ব্রহ্মপুত্র নদে ফেলে নদের পানি নষ্ট করে পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার বিষয়ে হোসেনপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিন্দ্য মন্ডল জানান, মেয়রকে প্রতিমাসেই মাসিক সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হলেও তিনি সেখানে উপস্থিত হন না। তিনি যদি আমাদের কাছে ডাম্পিং এর বিষয়ে সহায়তা নিতে চান তা হলে আমরা এ বিষয়ে চিঠি লিখে সরকারিভাবে সহায়তা করতে পারি।

পৌর মেয়র আব্দুল কাইয়ুম খোকন বলেন, ঝুাড়দার পাওয়া যায় না। এছাড়াও এটি একটি ছোট পৌরসভা। এখানে তেমন কোনো আয় না থাকায় এতকিছু করা সম্ভব নয়। এছাড়াও ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় ময়লা কোথায় ফেলবো?

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ