ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

প্রেমের বিয়েতে ডিভোর্স, পেট্রোলে অগ্নিদগ্ধ স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু

প্রকাশনার সময়: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:৫৪ | আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:১২

নরসিংদীর রায়পুরায় তালাক দেওয়ার কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রাক্তন চিকিৎসক স্ত্রীর গ্রামের বসতবাড়িতে ঘরে ঢুকে নিজের ও স্ত্রীর গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে প্রাক্তন স্বামী-স্ত্রী গুরুতর দগ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

অগ্নিদগ্ধ স্বামীর মৃত্যুর পর বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) স্ত্রী চিকিৎসক লতা আক্তার (৩২) শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন মৃত্যু হয়।

এর আগে স্বামী খলিলুর রহমান গত সোমবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুবরণ করেন।

লতা আক্তারের নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করেন লতার চাচা ফারুক। তিনি মোবাইলে বলেন, নিহতের মরদেহ হাসপাতালের প্রক্রিয়া শেষ করে বাড়ি নিয়ে আসা হবে।

উল্লেখ্য, গত রোববার (২৫ জানুয়ারি) দুপুর একটার দিকে উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের ব্রাহ্মণেরটেক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে অগ্নিদগ্ধ ওই নারী চিকিৎসা নেন।

জানা যায়, চিকিৎসক লতা আক্তার ও খলিল উভয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক থেকে একপর্যায়ে উভয়েই গোপনে বিয়ে করে সংসার পাতেন। গত দুই মাস আগে ওই নারী উকিলের মাধ্যমে তার স্বামীকে তালাকনামা পাঠান। কিন্তু খলিল তাকে নিয়ে ঘর-সংসার করতে চান। এ নিয়ে উভয়ের মতামতের ভিত্তিতে গত মাসে গ্রাম্য সালিশ হয়। রোববার দুপুরে ওই নারীর বাবার বাড়ি মরজাল এসে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে স্ত্রী ও তার নিজের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। এ সময় স্থানীয়রা হঠাৎ চিৎকার শুনে এগিয়ে এসে দরজা ভেঙে ঘর থেকে উভয়কেই দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে। ওই নারীকে স্বজনরা উদ্ধার করে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠান। অপর দিকে আহত ওই যুবককে উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠান।

ভুক্তভোগী ওই নারীর খালু ফরহাদ হোসেন জানান, 'লতা আক্তার ঢাকায় শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। লতা ২ বছর আগে নিজের পছন্দে খলিলুর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেন। বিয়ের বেশ কিছুদিন পর লতা জানতে পারেন খলিলুর রহমান পেশায় একজন ড্রাইভার। বিষয়টি লতা স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেনি। তাই মিথ্যে পরিচয়ে প্রতারণা করে বিয়ে করার অভিযোগে তার স্বামীকে ডিভোর্স দেন। এ ঘটনায় স্বামী খলিলুর ক্ষিপ্ত হয়ে হঠাৎ দুপুরের দিকে লতার বাড়িতে এসে পেট্রোল ঢেলে গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে নিজেও দগ্ধ হন। পরে এলাকাবাসী লতাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রোববার সন্ধ্যার দিকে লতাকে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।'

মরজাল ইউপি সদস্য তুহিন ভূইয়া বলেন, 'লতার পরিবার সূত্রে জানতে পারি বৃহস্পতিবার দুপুরে চিকিৎসাধীন মৃত্যু হয়।

রায়পুরা থানার উপ-পরিদর্শক আলমগীর হোসেন মোবাইলে বলেন, খবর পেলাম লতার ঢাকায় চিকিৎসাীন মৃত্যু হয়েছে। লতার পরিবারের পক্ষ থেকে প্রাক্তন স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হয়েছিল।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ