ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২০ মহররম ১৪৪৬

মৃত্যুর আগেই নিজ হাতে বানানো কবরস্থানে বসবাস!

প্রকাশনার সময়: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯:৪৮

মানুষ সাধারণত জীবন-সংসারের মায়ায় স্বপ্ন দেখে, আর বেঁচে থাকতে চায়। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পৃথিবীর মায়ায় সবাই আশা রাখে হাজার বছর বেঁচে থাকার। সেই একই পৃথিবীর বুকে বাস করেও পরকালে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন দয়াল মোহাম্মদ আলী।

মৃত্যুর পূর্বেই এই জগৎ-সংসারের মায়া ত্যাগ করে নিজের হাতে বানানো সমাধীস্থলেই বসবাস করছেন কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের দয়াল মোহাম্মদ আলী। মূলত আধ্যাত্মিক সুফিবাদের অনুসারী এই দয়াল মোহাম্মদ আলীর দীর্ঘদিন ধরেই বিচরণ পীরালী জগতে।

মৃত্যুর পর ধর্ম ভেদে মানুষের শেষ বিদায়টা হয় বিভিন্ন নিয়মে। মুসলিম ধর্ম অনুযায়ী একজন মানুষ মারা গেলে নির্দিষ্ট নিয়মে তাকে মাটির নিচে দাফন করা হয়। মাটির নিচে দাফনের এই প্রথাটি মুসলিম সমাজে যেমন সর্বজন স্বীকৃত, তেমনি ধর্মগ্রন্থেও এর প্রমাণ পাওয়া যায়।

সেই অনুযায়ী, দয়াল মোহাম্মদ আলীর ইচ্ছেও মৃত্যুর পর যেন তাকে এখানেই দাফন করা হয়।

শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তার বাড়ির সামনে, রাস্তা এবং খালের পাশে সুন্দর ও মনোরম পরিবেশেই জীবদ্দশায় নির্মাণ করেছেন নিজের কবরস্থান। যেখানে ছাদ দিয়ে মাজারের মতো তৈরি করেছেন। মৃত্যু পরবর্তী সময়ে যেন তাকে বসবাসরত এই ঘরেই দাফন করা হয়, সেই অসিয়তও করে রেখেছেন।

সংসারত্যাগী হয়ে গত তিন দিন ধরে বসবাস শুরু করেছেন নিজের হাতে বানানো সমাধীস্থলেই। মোহাম্মদ আলী দয়াল ফকিরের এমন কাণ্ডে এরইমধ্যে এলাকাজুড়ে বইছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।

দয়াল মোহাম্মদ আলীর উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের চরকাটিহারী গ্রামে বসবাস করেন। তার পিতার নাম আসমাইল শেখ। তিনি ৭০ বছর আগে গাজীপুরের চানপুরের আব্দুস সামাদ চানপুরির কাছে বাইয়্যাত গ্রহণ করেন।

ওই পীরের আদেশেই নিজের মৃত্যুর আগে এই কবরস্থান নির্মাণ করেছেন বলে জানান দয়াল মোহাম্মদ আলী। কথা বলার সময় একদিন এ দুনিয়া ছাড়তে হবে মনে করেই অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন এই শতবর্ষী।

জানা যায়, শত বছরের কাছাকাছি বয়সের এই দয়াল ফকির এক ডজন ছেলেমেয়ের পিতা। বেশ সহজ-সরল স্বভাবের মোহাম্মদ আলী দয়াল বলেন, ‘মৃত্যুর পর আমাকে এই ঘরেই যেন দাফন করা হয়। জীবিত থাকা অবস্থায় তাই নিজেই নিজের কবরস্থান নির্মাণ করে জায়গা নির্ধারণ করে রাখছি।’

অমোঘ বিধান মৃত্যুর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মরার আগে মরতে শিখতে হয়। সংসারের মোহে পড়ে পরজগৎকে ভুলে গেছি আমরা। তাই আমি আমার জীবদ্দশায় নিজের কবর খুঁড়ে পরকালের ধ্যানে মগ্নে আছি। এখানে আমার সমাধি হবে, আশেকানরা আমাকে এখানেই খুঁজে পাবে।’

নয়া শতাব্দী/এনএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ