ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

বাংলাদেশের হারে সিরিজ সমতায় লঙ্কানরা

প্রকাশনার সময়: ১৫ মার্চ ২০২৪, ২২:২০ | আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৪, ১৪:৩৫

চট্টগ্রামে ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে তিন উইকেটে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। এই জয়ে সিরিজে ১-১ ব্যবধানে সমতা ফেরাল লঙ্কানরা।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে লঙ্কানদের ২৮৭ রানে লক্ষ্য দেয় টাইগাররা।

ওই রান তাড়া করতে নেমে ৪৭.১ ওভারে জয় তুলে নেয় সফরকারীরা। প্রথম ম্যাচে হারার পর দ্বিতীয়টিতে জিতে সিরিজে ১-১ সমতা ফিরিয়েছে লঙ্কানরা।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা একদমই ভালো হয়নি বাংলাদেশের। আগের ম্যাচে ডাক মেরে ফেরা লিটন দাস এদিনও ফেরেন খালি হাতেই। স্কয়ার লেগে দুনিথ ওয়েল্লালাগের হাতে ক্যাচ দেন মাদুশঙ্কার বলে। সবমিলিয়ে শ্রীলঙ্কার এবারের সফরে তিনবার মাদুশাঙ্কার বলে আউট হন লিটন।

এরপর সৌম্য সরকারের সঙ্গে নাজমুল হোসাইন শান্তর জুটিতে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। ৭২ বলে তাদের ৭৫ রানের জুটি ভাঙে শান্ত ফিরলে। আগে দু-দফা বাঁচলেও এবার আর রক্ষা হয়নি। সেই মাদুশঙ্কার বল ছাড়বেন কি না নিশ্চিত ছিলেন না শান্ত, এর মধ্যেই বল ব্যাট ছুয়ে চলে যায় উইকেটরক্ষক কুশল মেন্ডিসের গ্লাভসে। ৬ চারে ৩৯ বলে ৪০ রান করেন শান্ত।

এদিকে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন সৌম্য সরকার। তিনি খেলছিলেন বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই। তবে হাসারাঙ্গাকে রিভার্স সুইপ খেলে আউট হন সৌম্য। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দুর্দান্তভাবে ঝাঁপিয়ে তার ক্যাচটি ধরেন মাদুশঙ্কা। ১১ চার ও এক ছক্কায় ৬৬ বলে ৬৮ রান করে ফেরেন সৌম্য। হাসারাঙ্গার ওই ওভারেই স্টাম্পিং হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, ফেরেন শূন্য রানে।

দ্রুত এই দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া বাংলাদেশকে টেনে তোলার লড়াই শুরু করেন মুশফিকুর রহিম, তার সঙ্গী ছিলেন তাওহীদ হৃদয়। কিন্তু ২৮ বলে ২৫ রান করে এলবিডব্লিউ হয়ে যান মুশফিক। ১৮ বলে ১২ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজও ফিরলে চাপ কিছুটা বাড়ে।

পরে তানজিম হাসান সাকিব সঙ্গ দেন তাওহীদ হৃদয়কে। ৬২ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়েন তাওহীদ হৃদয়। হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করে হৃদয় পরে হাত খুলতে শুরু করেন। শেষ দুই বলে ছক্কা হাঁকানো হৃদয় ১০২ বলে ৯৬ রানে অপরাজিত থাকেন। তার সঙ্গে ইনিংস শেষ করে আসা তাসকিন আহমেদ ১০ বলে ১৮ রান করেন।

রান তাড়ায় নামা শ্রীলঙ্কাও শুরুতে উইকেট হারিয়ে ফেলে। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই শরিফুল ইসলামের বলে প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দেন আভিস্কা ফার্নান্দো। পরে আরও দুটি উইকেট তারা হারায় ৪৩ রানের মধ্যে। ষষ্ঠ ওভারে বোলিংয়ে এসেই কুশল মেন্ডিসকে আউট করেন তাসকিন আহমেদ। ১৩ বলে ১৬ রান করা মেন্ডিস ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে।

পরের ওভার করতে এসে ৪ বলে ১ রান করা সাদিরা সামারাবিক্রমাকে আউট করেন শরিফুল। কিন্তু এরপরই শক্ত জুটি গড়েন পাথুম নিশাঙ্কা ও চারিথ আসালাঙ্কা। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে নিজের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি তুলে নেন ওপেনার নিশাঙ্কা। তাকে ফিরিয়ে ১৮৩ বলে ১৮৫ রানের জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বাংলাদেশের হাত থেকে প্রায় ছুটে যাওয়া ম্যাচে যোগান আশার সঞ্চার।

মিরাজকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দেন নিশাঙ্কা। ১৩ চার ও ৩ ছক্কায় ১১৩ বলে ১১৪ রান করেন তিনি। পরের ওভারে এসেই তাসকিন আহমেদ ফিরিয়ে দেন আসালাঙ্কাকে। সেঞ্চুরি ছুঁতে না পারলেও ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৯৩ বলে ৯১ রান করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন লঙ্কান বাঁহাতি। শুরুতে আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিয়ে সফল হয় বাংলাদেশ।

হুট করে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা। সেটি আরও বাড়িয়ে দেন তানজিম হাসান সাকিব। ১৬ বলে ৯ রান করা জানিথ লিয়াংগেকে ফেরান তিনি। যদিও এরপরও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি বাংলাদেশ। শুরুতে কিছুটা ধরে খেললেও ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।

নিজের প্রথম ১১ বলে ৯ রান করা এই ব্যাটার পরে তানজিম সাকিবের করা ৪৬তম ওভারের শেষ বলে ছক্কা হাঁকান। পেসারদের ওভার প্রায় শেষদিকে থাকায় ৪৭তম ওভারে তাইজুলকে নিয়ে আসেন শান্ত। তার প্রথম চার বলে একটি চার ও ছক্কা হাঁকান হাসারাঙ্গা।

ওই ওভারেই তিনি আউট হলেও, শ্রীলঙ্কার দরকার পড়ে মাত্র ২ রান। উইকেট না নিতে পারায় চাপে রাখতে পারেনি বাংলাদেশও। রানের গতির সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার চাপ কখনোই সেভাবে ছিল না লঙ্কানদের। ২৬ বলে ১৫ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন দুনিথ ওয়েল্লালগে। ম্যাচ সেরা হন নিশাঙ্কাই।

নয়াশতাব্দী/ডিএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ