ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

বাকৃবি ক্যাম্পাসে উচ্চ শব্দে নির্বাচনি প্রচারণা, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

প্রকাশনার সময়: ০২ মার্চ ২০২৪, ১৯:৫২

ময়মনসিংহ বিভাগে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন-২০২৪ উপলক্ষ্যে চলছে নির্বাচনি প্রচারণা। প্রচারণার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) চত্বরের আনাচে-কানাচ ভরে গেছে পোস্টার ও ব্যানারে। শোডাউনে অনবরত ট্রাক বোঝাই করে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করছেন। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতে উচ্চশব্দে মাইক বাজিয়ে এসব প্রচারণা করা হচ্ছে দিনরাত। এতে পড়াশোনার স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হওয়াসহ দৈনন্দিন চলাফেরায় ব্যাঘাত ঘটছে শিক্ষার্থীদের।

এদিকে চলছে বিভিন্ন অনুষদের ফাইনাল পরীক্ষা। তাই প্রতিদিন এমন উচ্চশব্দে মাইক দিয়ে প্যারডি গান বাজিয়ে এবং মাইকিং করে প্রচারণায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি এখন চরম পর্যায়ে। অনেকেই মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, দিন-রাত নির্বাচনি প্রচারণার মাইকিং ও উচ্চশব্দের গানে পড়াশোনায় মনোযোগ দেওয়া অসম্ভব হয়ে উঠেছে। চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। অনেক বর্ষেই চলছে ক্লাস টেস্ট পরীক্ষা। আবার অনেকের সামনে চাকরির পরীক্ষাও রয়েছে। এমতাবস্থায় এই উচ্চশব্দ পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশের অন্তরায়। অনবরত নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা অটোরিকশা, মোটরসাইকেল এমনকি ট্রাক ভর্তি করে প্রবেশ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে।

তারা আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল, ক্লাসরুম এমনকি মসজিদের সামনের সড়কগুলো দিয়ে তারা শোডাউন ও মিছিলের মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের কার্যক্রমে সড়কগুলোতে চলাচল করাও কষ্টকর হয়ে উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সিটি করপোরেশনের ভোটার সংখ্যা হাতেগোনা কয়েকজন। তার জন্য তো হলের সামনে দিয়ে এতো প্রচারণার কোনো দরকার আছে বলে মনে হয় না। এটি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেটি মনে রেখে প্রচারণা করা উচিত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, নির্বাচানি প্রচারণার ক্ষেত্রে একজন অটোরিকশা চালককে মূলত ভাড়া করে মাইক বাজানোর কাজটি দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ সড়কে যতগুলো এরকম অটোরিকশা এসেছে, সেগুলোর চালকদেরকে আবাসিক হল সংলগ্ন সড়কে মাইক না বাজানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রচারণার ক্ষেত্রে শো-ডাউন বা মিছিল করা বন্ধ করা সম্ভব নয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঈশা খাঁ হল থেকে রোজী জামাল হল পর্যন্ত বিকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত কোনোপ্রকার উচ্চ শব্দ ব্যবহার না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে বলা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশীদ বলেন, উচ্চশব্দে মাইক বাজানোর বিষয়টি শধু শিক্ষার্থীদের নয় শিক্ষকদেরও অসুবিধার কারণ। একাধিক প্রার্থী ও তাদের সমর্থক মিলিয়ে অনেক মানুষ জড়িত থাকায় বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা একটু কঠিন। তবে আমরা বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য একাধিকবার নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের প্রচার ও প্রচারণা তাদের সাংবিধানিক অধিকার। ক্যাম্পাসের মধ্যেও তাদের ভোটার আছেন তাই তারা প্রচারণা করবেন। তবে আমরা তাদেরকে অনুরোধ করেছি দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বাদ্যযন্ত্রগুলো কম বাজাতে। আমরা চাইলেই তো বন্ধ করতে পারি না। দেশের আইন বিধি মোতাবেক নিজেদের নির্বাচনি এলাকায় প্রচারণা করার সম্পূর্ণ অধিকার তাদের রয়েছে।

এ বিষয়ে জানার জন্যে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীকে ফোন দিলে তিনি ব্যস্ত থাকায় তার পরিবর্তে ফোন ধরেন ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আলমগীর কবীর। তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। জেলা প্রশাসকের কাছে সমস্যাটির কথা তুলে ধরা হবে। বিষয়টি সমাধানের ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ