সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

দুর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়েই নিয়োগের দিকে ইবি উপাচার্য

প্রকাশনার সময়: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:০২ | আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:২১

দুর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়েই প্রশাসনিক বিভিন্ন পদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যাচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব নিয়োগ বোর্ডের মধ্য দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। এছাড়াও নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিও এই মাসে প্রকাশ হতে পারে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি চাকরী প্রত্যাশী শাখা ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন। এসময় তারা নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ দ্রুত ঘোষণা করার দাবি জানালে অতি শিগগিরই তারিখ দেয়া হবে বলে উপাচার্য তাদের আশ্বস্ত করেন।

জানা যায়, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে উপাচার্যের নিয়োগ বানিজ্যসহ নানাবিধ দুর্নীতির অন্তত ১৪টি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়া সেসব অডিওর বিষয়ে উপাচার্যের বক্তব্য পরিষ্কার করে ব্যাখ্যা করার আহ্বান জানিয়ে চিঠি দেন প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরাম।

এই চিঠির কোন জবাব উপাচার্য দেয়নি বলে জানান ফোরামের সাবেক নেতারা। পরে তারা প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকল দফতের এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে চিঠি পাঠান। এদিকে, গত বছরের পহেলা নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে উপাচার্যের নিয়োগ বানিজ্যসহ নানাবিধ দুর্নীতি তদন্তে ইউজিসি'র সদস্য অধ্যাপক ড. আবু তাহেরকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে ইউজিসি।

এরই প্রেক্ষিতে গত ২২ জানুয়ারি সরেজমিন পরিদর্শন করে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের নেতা ও দফতর প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করেন তারা। এছাড়াও তারা বিভিন্ন নথি যাচাই বাছাই করেন। এ তদন্ত চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে ঘুষ গ্রহণ, দুর্নীতি ও অবৈধ লেনদেনের অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এরই প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারসহ সাক্ষীদের দুদকের কুষ্টিয়া কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে বলে জানা গেছে। এই কমিটির তদন্ত প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে। তদন্ত চলাকালীন উপাচার্যের আবারো নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর প্রস্তুতি নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। একইসঙ্গে তদন্ত চলাকালে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার দাবিও উঠেছে।

শাপলা ফোরামের এক সদস্য বলেন, যেহেতু তার বিষয়ে এরকম অভিযোগ এসেছে এটার সমাধান না হয়েই আবার নিয়োগের দিকে যাওয়া কোন ভাবেই কাম্য নয়। এছাড়াও, অডিও ভাইরালের পর উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন চাকরী প্রত্যাশী ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মীরা। উপচার্যের কার্যালয়ে তালা, ভাইরালকৃত অডিও মাইক দিয়ে বাজানোসহ বিভিন্ন ধরণের কর্মসূচী পালন তারা।

শাপলা ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন বলেন, ভিসি মহোদয় নির্দোষ প্রমানিত না হওয়া পর্যন্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে বিরত থাকায় ভালো। আমরা শাপলা ফোরামের সাধারণ সভায় এর আগে যে সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছিলাম সেগুলোর অগ্রগতি জানানোর জন্য আমাকে ও সাধারণ সম্পাদককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

আমরা আবারো সাধারণ সভা করে খুব শীঘ্রই পদক্ষেপ নিব। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান বলেন, এটা দুঃখজনক। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক বিভিন্ন কাজ রয়েছে সেগুলো বাদ দিয়ে বারবার করে নিয়োগের দিকেই কেন যাচ্ছে তা আমাদের বোধগম্য না।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, আমি এ বিষয় নিয়ে কোন কথা বলতে চাই না। এগুলো ভিত্তিহীন। এসব বিষয় ইউজিসি ও দুদক দেখছে তাদেরকে খুঁজে বের করতে দেন।

নয়া শতাব্দী/আরজে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ