পথরোধ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের এক শিক্ষককে মারধর ও হুমকির অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার এবং প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন বিশবিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এরআগে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এতে দুইজনের বিরুদ্ধে নগরীর মতিহার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক।
ভুক্তভোগী শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মুহাম্মদ আলী রেজা।
অপরদিকে, অভিযুক্তরা হলেন- মো. মিনহাজ আবেদীন (৩৯) এবং মোসাদ্দেক হোসেন রাতুল (২৭)। তারা নগরীর তালাইমারী এলাকার বাসিন্দা।
‘শিক্ষকের গায়ে হাত কেন প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আমার শিক্ষক লাঞ্ছিত কেন প্রশাসন জবাব চাই’, ‘ছাত্র সমাজ জেগে উঠো শিক্ষক কেন নির্যাতিত’, ‘শিক্ষক তোমার ভয় নেই, ছাত্রসমাজ ঘুমায় নাই’ ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড মানববন্ধনে প্রদর্শন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
মানবন্ধনে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. সোলায়মান চৌধুরী বলেন, এই ঘটনা খুবই নিন্দাজনক, শুধু শিক্ষক না, সাধারণ মানুষও হামলার শিকার হোক আমরা চাই না। শিক্ষককে হামলার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।
বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সুরুজ সরদার বলেন, আমাদের শিক্ষকের ওপর সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা করা হয়েছে, এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। এই মেরুদণ্ড ভাঙার লড়াইয়ে নেমেছে কিছু কুরুচিপূর্ণ মানুষ। শিক্ষকের ওপর অতর্কিত হামলার সাথে যারা জড়িতদের বিচার চাই।
সার্বিক বিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মো. মোবারক পারভেজ বলেন, আমরা এরমধ্যে মামলার প্রধান অভিযুক্ত মিনহাজ আবেদীনকে গ্রেফতার করেছি। অপর অভিযুক্তকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মামলার এজাহারের সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ব্যক্তিগত গাড়ি চালিয়ে বিশ্ববিদ্যলয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যলয় মেইন গেটের বিপরীতে রাজশাহী মিষ্টিবাড়ীর সামনে একটি মোটরসাইকেলে মো. মিনহাজ আবেদীন ও মোসাদ্দেক হোসেন রাতুল ভুক্তভোগী শিক্ষকের পথরোধ করে। তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। একপর্যায়ে তারা গাড়ির দরজা খুলতে বাধ্য করে। এরপর দুজন একসঙ্গে ভুক্তভোগীকে এলোপাতাড়িভাবে মুখে এবং বুকে কিল-ঘুষি মেরে আহত করে।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মারধরের পর তারা মোটরসাইকেল নিয়ে তালাইমারী রাস্তার দিকে যেতে থাকলে তাদের পিছনে গাড়ি নিয়ে যান ভুক্তভোগী। এসময় তালাইমারী মোড়ে পৌঁছালে তারা আবার পথরোধ করে। একপর্যায়ে মোটরসাইকেল থেকে নেমে গালিগালাজ করে জানতে চায় কেন তাদের পিছনে পিছনে এসেছে? তাদের পরিচয় জানতে চাইলে এবং মোটরসাইকেলের নম্বর দেখতে গেলে মোসাদ্দেক মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যান। মিনহাজ গালিগালাজ করে হুমকি দিতে থাকে। পরে স্থানীয়দের সহায়তা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য পাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে মারধর এবং গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে ভুক্তভোগী শিক্ষককে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যান।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ