ঢাকা, রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

বিশেষজ্ঞ সদস্যের অনুপস্থিতে নিয়োগ বোর্ড বসালেন চবি উপাচার্য

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নাট্যকলা বিভাগ
প্রকাশনার সময়: ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ২২:৩৪

চার সদস্যের মধ্যে সিন্ডিকেট মনোনীত বিশেষজ্ঞ দুই সদস্যের অনুপস্থিতিতেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড বসালেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার।

রোববার (২১ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় উপাচার্যের কার্যালয়ে নাটক্যলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডের নির্বাচনি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। পদাধিকারবলে আরেকজন সদস্য হলেন বিভাগের সভাপতি শাকিলা তাসনিম।

সিন্ডিকেট মনোনীত বিশেষজ্ঞ দুই সদস্য হলেন- নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. কুন্তল বড়ুয়া ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার সাঈদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিশেষজ্ঞ সদস্য রাখা আবশ্যক।

অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে রোববার সকালে উপাচার্য বরাবর চিঠি দিয়েছেন অধ্যাপক ড. কুন্তল বড়ুয়া। তিনি চিঠিতে লেখেন, নাট্যকলা বিভাগের তিনটি প্রভাষক (অস্থায়ী) পদের জন্য নির্বাচনি বোর্ডে নাট্যকলা বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির সুপারিশ বা সিদ্ধান্তকে রেজিস্ট্রার অফিস কর্তৃক অগ্রাহ্য করার কারণে নাট্যকলা বিভাগের সিনিয়র মোস্ট শিক্ষক হিসেবে আমি সংক্ষুব্ধ। তাছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে আমি শঙ্কা অনুভব করছি। ফলে উক্ত দিনে নাট্যকলা বিভাগের নির্বাচনি বোর্ডের বিশেষজ্ঞ সদস্য হিসেবে সভায় উপস্থিত থাকতে অপারগতা প্রকাশ করছি।

এ বিষয়ে ড. কুন্তল বড়ুয়া বলেন, দুইটি কারণে বোর্ডে অংশ নেয়া থেকে বিরত থেকেছি। প্রথমত, বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির সুপারিশ করা সব আবেদন পত্র নানা অযুহাতে বাতিল করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়োগ নিয়ে আমার শঙ্কা আছে। সাম্প্রতিক সময়ে আমরা দেখেছি প্রশাসনের বেশিরভাগ নিয়োগই বিতর্ক ছিল। আইন বিভাগ ও বাংলা বিভাগের বোর্ড নিয়ে ইউজিসি প্রশ্ন তুলেছে। প্রশাসন আগে থেকে সিলেকশন করে রেখেছেন বলে আমার ধারণা। তাই অযাচিত এমন বোর্ডে থাকার কোনো প্রশ্নই আসে না।

তিনি আরও বলেন, নাট্যকলা একটি প্রায়োগিক বিষয়। সেখানে বিশেষজ্ঞ শিক্ষক ছাড়া কীভাবে নিয়োগ হবে সেটা নিয়ে আমার প্রশ্ন হয়। আমরা চারজন বোর্ডের মেম্বার। সেখানে দুজনই বোর্ডের সভায় উপস্থিত ছিলাম না। পদাধিকার বলে শাকিলা তাসনিম উপস্থিত ছিলেন বিভাগের সভাপতি হিসেবে। তিনি কিন্তু অধ্যাপকও না বিশেষজ্ঞ সদস্যও না।

অপর সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার সাঈদ বলেন, আমি অসুস্থ। ছুটিতে ছিলাম। তাই বোর্ডে ছিলাম না। বিশেষজ্ঞ ছাড়া নিয়োগ বোর্ড সম্পন্ন করা যায় কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমদ বলেন, নিয়োগ বোর্ডে বিশেষজ্ঞ সদস্য থাকতে হবে- এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে কোরামের কথা আছে। সেটা হতে হবে ৫০ শতাংশ। বোর্ডে দুইজন অনুপস্থিত থাকলে বাকি দুইজনে কোরাম হয়েছে। তাই বোর্ড হয়েছে। এখানে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।

এ বিষয়ে জানতে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। নাট্যকলা বিভাগের সভাপতি শাকিলা তাসনিমও ফোন ধরেননি।

চবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল হক বলেন, ভিসি ও বিভাগের সভাপতি পদাধিকারবলে বোর্ডের মেম্বার। পদাধিকারবলে এক্সপার্টের কাজ করা কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। এখানে বিশেষজ্ঞ সদস্য ও নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. কুন্তল বড়ুয়া যাননি। আরেকজন সদস্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার সাইদও যাননি।

তিনি আরও বলেন, অনেকগুলো বেআইনি ও প্রশ্নবিদ্ধ নিয়োগ তিনি (উপাচার্য) দিয়ে আসছিলেন। এটি তার ব্যতিক্রম কিছু না। তারা এ ধরনের কার্যক্রম গণহারে চালিয়ে আসছিলেন বলেই আমরা ভিসি-প্রোভিসির পদত্যাগ চাচ্ছি।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ