ঢাকা, রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

রাত পোহালেই ভোট, নতুন-পুরাতনের লড়াই

প্রকাশনার সময়: ০৭ মে ২০২৪, ২০:০৫

রাত পোহালেই ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলায় ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে প্রতিটি কেন্দ্রে দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসারদের কাছে ব্যালট বাক্স, সিল, অমোচনীয় কালি ও প্যাডসহ বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ মে) দুপুরে দুটি উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে এগুলো সরবরাহ করা হয়।

এদিকে, জেলার দুই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। এখন ভোট গ্রহনের অপেক্ষায়। সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহন শুরু হয়ে চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।

এর আগে প্রার্থীরা টানা ১৩ দিন ধরে আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণায় ছিলেন। কেউ করেছে গণসংযোগ, কেউ পথসভা, কেউবা আবার উঠান বৈঠকের মাধ্যমে ভোটারের কাছে ছুটে গিয়েছেন। করেছেন ভোট প্রার্থনা।

এ দুটি উপজেলাতে আবারও প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান দুই চেয়ারম্যানই। সেসঙ্গে যোগ হয়েছে আরও কিছু নতুন মুখ। নতুন-পুরাতন প্রার্থীদের মধ্যেই চলবে লড়াই। তাদের ভোটযুদ্ধে লড়াইয়ের ফল ঘোষনা হবে ভোট গ্রহন শেষে।

দুটি উপজেলাতেই ভাইস চেয়ারম্যান পদে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় দুইজনই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন। আর সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান পদে অনুষ্ঠিত হবে ভোট গ্রহন। তবে সবার আগ্রহ চেয়ারম্যান পদ নিয়েই।

দামুড়হুদা উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আলী আজগার টগরের সহোদর আলী মুনছুর বাবু এবারও ভোটযুদ্ধে লড়ছেন। তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে এ উপজেলায় আরও আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনিয়নের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান এসএএম জাকারিয়া আলম। তিনি মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। পাশাপাশি উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক অ্যাড. আবু তালেব ঘোড়া প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। এই তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীরাই জোর প্রচারণায় ছিলেন। তিনজনের মধ্যে আলী মুনছুর বাবু বর্তমান চেয়ারম্যান হয়ে পুরাতন হিসেবে প্রার্থী হলেও তার প্রতিদ্বন্দ্বী নতুন দুই মুখ।

ভোটের জয়ের ব্যাপারে এবারও আশাবাদী আলী মুনছুর বাবু। তিনি বলেছেন, আমি গত ৫ বছর উপজেলাবাসীর সুখে-দুঃথে সাথে ছিলাম। এ সময়ে উপজেলায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ আমি করেছি। আমার প্রতি ভোটারদের আস্থা আছে। আমারও বিশ্বাস আমি নির্বাচনে জয়ী হবো।

মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী এসএএম জাকারিয়া আলম বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় সরকারের সাথে জনপ্রতিনিধি হয়ে কাজ করে আসছি। আমি জানি কিভাবে জনগণকে সেবা দিতে হয়। নির্বাচিত হলে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা আমি উপজেলাবাসীর কল্যানে কাজে লাগাবো। এবার মানুষ নতুন নেতৃত্ব চায়। তাই আমি আশাবাদী, নির্বাচন সুষ্ঠু হলে বিপুল ভোটে জয়লাভ করবো।

ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী অ্যাড. আবু তালেব বলেন, ভোটররা ভোট দিতে মুখিয়ে আছেন। বিভিন্নভাবে সাধারণ মানুষের পাশে থাকি। তাই ভোটাররা আমাকেই ভোট দিবে।

এছাড়া এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন শফিউল কবির ইউসুফ। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তানিয়া খাতুন ফুটবল প্রতীক নিয়ে ও সাহিদা খাতুন কলস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।

এ উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ৪৭ হাজার ৮২২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ২৪ হাজার ৮৭৯ জন, নারী ১ লাখ ২২ হাজার ৯৪১ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন ২ জন।

জীবননগর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন দুই জন। যাদের মধ্যে একজন নতুন ও অপরজন পুরাতন। পুরাতন হিসেবে জীবননগর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান এবার কাপ-পিরিচ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে নতুন মুখ হিসেবে সাংবাদিক ও ব্যবসায়ী এসকে লিটন লড়ছেন আনারস প্রতীক নিয়ে। দুজনই তাদের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

বর্তমান চেয়ারম্যান কাপ-পিরিচ প্রতীকের হাফিজুর রহমান বলেন, আমি জনপ্রতিনিধি থাকাকালে এলাকার স্কুল কলেজ মসজিদ মাদরাসা রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন করেছি। প্রতিটি সেক্টরে আমি উন্নয়নের ছোঁয়া দিয়েছি। এছাড়া জনগণের যে প্রত্যাশা তা পূরন করার চেষ্টা করেছি। এর পরিপ্রেক্ষিতে আবারও আমি জয়ী হবো।

আনারস প্রতীকের প্রার্থী এসকে লিটন বলেন, মানুষ নতুন কাউকে চাই। গত ৫ বছরে নিশ্চয় মানুষ তা দেখেছে। এজন্য এবার যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নিতে চায়। ভোটাররা ভোট দিতে বেশ আগ্রহী। পরিবেশ ঠিক থাকলে আনারস প্রতীকেই তারা ভোট দিবেন।

এছাড়া এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম ঈসা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আয়েশা সুলতানা লাকী কলস প্রতীক ও রেনুকা আক্তার রিতা হাঁস প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।

এ উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৭৮ হাজার ১৬৭ জন ও নারী ৭৭ হাজার ২২৯ জন।

এদিকে, নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আর নির্বাচন উপলক্ষে দুটি গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা।

একটি গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার (৮ মে) প্রথম ধাপের দামুড়হুদা ও জীবননগর এবং ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে চুয়াডাঙ্গা সদর ও আলমডাঙ্গা উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে অস্ত্র আইন ১৮৭৮-এর ধারা ১৭ (ক) (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে নির্বাচনী এলাকায় ভোটগ্রহণ পূর্ববর্তী ৭ দিন এবং ভোটগ্রহণের পরবর্তী ৭ দিন লাইসেন্সধারী অস্ত্রসহ চলাচল, অস্ত্র বহন ও প্রদর্শন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। এ আদেশ না মানলে তাদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নয়াশতাব্দী/টিএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ