ঢাকা, রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নয়, মা গলাটিপে হত্যা করেছে শিশুকে 

প্রকাশনার সময়: ০৬ মে ২০২৪, ১৮:৪৩

চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার ভোগাইলবগাদি গ্রামের শিশু মাইশা খাতুন (৭ বছর) বিদ্যুৎ স্পর্শে মারা যায়নি। তাকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ। ময়নাতদন্তের মাধ্যমে এ রহস্য উন্মোচন হয়েছে। মাইশাকে অন্য কেউ নয়, তার নিজের মা গলা টিপে হত্যা করে শিশু মাইশাকে।

এ ঘটনায় মা পপি খাতুনকে (২৫) পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। পপি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।

সোমবার (৬ মে) সকালে চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার (এসপি ) আর এম ফয়জুর রহমান এ সব তথ্য সাংবাদিকদের জানান।

তিনি জানান, শিশু মাইশা তার মায়ের সাথে আলমডাঙ্গার ভোগাইলবগাদী গ্রামে বসবাস করতো। ২৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯ টার দিকে মাইশার মা পপি খাতুনের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে। সে সময় মাইশার গলায় মোবাইলফোনের চার্জারের তার জড়ানো ছিল। পপি প্রতিবেশীদের জানায়, তার মেয়ে মাইশা বিদ্যুত স্পর্শে মারা গেছে। প্রতিবেশীরাই মাইশাকে দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মাইশা মারা গেছে বলে জানান। পাশাপাশি চিকিৎসকরা নিহত মাইশার গলায় দাগ থাকার কথাও পুলিশকে জানান। পুলিশ মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, নিহত মাইশা খাতুন বিদ্যুৎস্পর্শে মারা যায়নি। তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।

বিষয়টি পুলিশ নিহতের পরিবারকে জানালে মাইশার নানা ভোগাইলবগাদী গ্রামের মৃত নূর হোসেনের ছেলে শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে গত ৩ মে আলমডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়।

পুলিশ সুপার জানান, মাইশাকে তার মা পপি খাতুন গলা টিপে হত্যা করেছে। গত ৫ মে পপি খাতুনকে আলমডাঙ্গার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জহুরা বেগমের আদালতে হাজির হয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। পুলিশ পপি খাতুনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।

পুলিশ সুপার আরও জানান, পপি খাতুনের বিয়ে হয়েছিল কুষ্টিয়া জেলার মীরপুর থানার ঝুটিয়াডাঙ্গা গ্রামের সাইফুল ইসলামের সাথে। স্বামীর সাথে দাম্পত্য কলহের কারণে আগেই তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছিল এবং পপি খাতুন তার মেয়ে মাইশাকে নিয়ে নিজের বাবার বাড়ি আলমডাঙ্গার ভোগাইলবগাদী গ্রামে বসবাস করছিল।

পপি খাতুন পুলিশের কাছে মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করে বলে, মেয়ে মাইশা নাবালিকা। তার বাবা হয়তো আরেকটি বিয়ে করবে। পপিরও অন্য জায়গায় বিয়ে হতে পারে। তখন মাইশাকে দেখার কেউ থাকবে না। মাইশার জীবন কাটবে কষ্টে। প্রতিবেশীদের একটি মেয়েকে এভাবে বড় হতে দেখেছে পপি। এসব চিন্তাভাবনা করে মা পপি খাতুন মেয়ে মাইশাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বলে পুলিশকে জানিয়েছে পপি।

নয়াশতাব্দী/এনএইচ/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ